Advertisement
Advertisement

চিন সীমান্তে ব্যাপক ফৌজি প্রস্তুতি ভারতের

১৯৬২-র ভারত-চিন যুদ্ধের পর এত বড় যুদ্ধ প্রস্তুতি ভারত আগে কখনও করেনি!

India ramps up its military presence in Eastern Ladakh

১৯৬২-র ভারত-চিন যুদ্ধের পর এত বড় যুদ্ধ প্রস্তুতি ভারত আগে কখনও করেনি!

Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:July 22, 2016 10:44 am
  • Updated:July 22, 2016 10:44 am

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লাদাখে চিন সীমান্ত বরাবর ভারত নজিরবিহীনভাবে ব্যাপক সেনা সমাবেশ ও যুদ্ধ সরঞ্জাম মোতায়েন করায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করল বেজিং৷ একইসঙ্গে বেজিংয়ের চরম হুঁশিয়ারি, এর ফলে ভারতে চিনা ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ মার খাবে৷ আখেরে ক্ষতি হবে ভারতের আর্থিক বিকাশের৷

চিনের কমিউনিস্ট সরকার পরিচালিত সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমস বৃহস্পতিবার একটি নিবন্ধে জানিয়েছে, ভারত লাদাখে লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল (এলএসি) বরাবর ১০০টিরও বেশি অত্যাধুনিক অর্জুন ট্যাঙ্ক (আসলে টি-৯০ এস ট্যাঙ্ক), রকেট উৎক্ষেপণকারী অসংখ্য সাঁজোয়া গাড়ি, রেডার, তিন ডিভিশন অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করেছে৷ তড়িঘড়ি তৈরি করা হয়েছে বেশ কিছু সামরিক পরিকাঠামো, বাঙ্কার৷ এখন আমেরিকা থেকে আমদানি করা বেশ কিছু দূরপাল্লার হাউইৎজার কামান বসানোর কাজ করছে ভারতীয় সেনা৷ চিনা সেনা শিবির ও পরিকাঠামোগুলি টার্গেট করে, রাতের বেলা যুদ্ধ করার উপযুক্ত পরিকাঠামো তৈরি করে আসলে চিনকে যুদ্ধের বার্তাই দিচ্ছে নয়াদিল্লি৷ চিনা মিডিয়ার এই দাবি নস্যাত্‍ করে লেফটান্যান্ট জেনারেল এস কে পাতিয়াল জানিয়েছেন, সীমান্ত সুরক্ষিত করে চিন সেনা সমাবেশ ও পরিকাঠামো তৈরি যা করার তিন-চার বছর আগেই করে ফেলেছে৷ এখন ভারত সেটাই করছে যেটা চিন আগে করেছিল৷ তখন আমরা তো কোনও আপত্তি জানায়নি৷ তাহলে এখন ওরা আপত্তি জানাচ্ছে কেন? চিন যাই বলুক, নিজেদের ভূমি ও আকাশসীমা সুরক্ষিত করতে ভারত যা করার তাই’ই করবে৷ এই প্রস্তুতি নতুন কিছু নয়৷ ২০১২ সাল থেকেই ভারত এই কাজ করছে৷

Advertisement

১৬ নম্বর গাড়োয়াল রাইফেলসের কর্নেল বি এস উপ্পল জানিয়েছেন, চিনা আগ্রাসন রুখতে ও পালটা আক্রমণ করতে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৬ হাজার ফুট উপরে লাদাখে ভারতের সামরিক প্রস্তুতিতে আমরা সন্তুষ্ট৷ ২২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ দারবুক-শায়ক-দৌলতাবেগ ওল্ডি হাইওয়ে তৈরির কাজ পুরোদমে চলছে৷ ফলে দৌলতাবেগ ওল্ডি বিমানঘাঁটি থেকে দ্রুত সড়কপথে রসদ পৌঁছবে সেনা ঘাঁটিগুলিতে৷ স্বাধীনতার পর এবং ১৯৬২-র ভারত-চিন যুদ্ধের পর এত বড় যুদ্ধ প্রস্তুতি ভারত আগে কখনও করেনি বলে দাবি চিনা মিডিয়ার৷ এর ফলে ভারতে চিনা শিল্পপতিদের ও চিনের রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিগুলির বিনিয়োগ মার খাবে৷ কারণ সীমান্তে ট্যাঙ্ক, ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করে ভারত চিনের ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের ভুল বার্তা দিচ্ছে৷ তাছাড়া ২০১৫ সালে ভারতে চিনা বিনিয়োগ ৬ গুণ বেড়েছে৷ সাংস্কৃতিক বিনিময় বেড়েছে৷ দু’ দেশের মধ্যে সাত হাজার কোটি ডলারের বাণিজ্য হচ্ছে৷ চিনের সঙ্গে ৪৬০০ কোটি ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি ভারত অনেকটাই কমিয়ে এনেছে৷ এই অবস্থায় ভারতকে সীমান্তে আরও সংযত হওয়া উচিত৷ বন্ধুত্বের বার্তা দিয়ে চিনা বিনিয়োগ কাছে টানা উচিত বলে পরামর্শ দিয়েছে চিনের সরকারি মিডিয়া৷ চিনের হুঁশিয়ারি, রেষারেষি ও লড়াইতে গেলে মার খাবে ভারতের নগরায়ণ ও শিল্পায়ন প্রক্রিয়া৷ চিনা বিদেশমন্ত্রক হুঁশিয়ারি দিয়েছে, সীমান্তে শান্তি ও স্থিতি বজায় রাখতে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি কঠোরভাবে মেনে চলুক ভারত৷

Advertisement

যদিও ভারত সরকারের চায়না স্টাডি গ্রুপের মতে, পরমাণু এলিট ক্লাব এনএসজিতে ভারতকে ঢুকতে বাধা দিয়েছে চিন৷ এলিট মিসাইল ক্লাব ‘এমটিসিআর’-এ চিন ঢুকতে পারেনি৷ কিন্তু ভারত সহজেই সদস্য হয়েছে৷ কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভারতকে চরম বিব্রত করছে বেজিং৷ চিন বিরোধী সামরিক জোটে ভারত চিনের শত্রু জাপান, তাইওয়ান, ভিয়েতনাম, ফিলিপিন্সের সঙ্গে হাত মিলিয়ে যৌথ নৌ-মহড়া চালাচ্ছে৷ এই প্রেক্ষিতে লাদাখেভারতের সেনা সমাবেশ ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মজবুত করারই অঙ্গ৷

অন্যদিকে, জিনজিয়াং প্রদেশের বিচ্ছিন্নতাবাদী উইঘুর মুসলিমরা যাতে ইসলামিক স্টেটে যোগ দিয়ে চিনের মধ্যে জঙ্গি হামলা চালাতে না পারে সেজন্য পাকিস্তানি সেনা ও চিনের লাল ফৌজ যৌথভাবে সীমান্তে টহল দেওয়া শুরু করল৷ পাক সেনা টহল দেবে পাক অধিকৃত আজাদ কাশ্মীরে৷ চিনা সেনা সমান্তরালভাবে টহল দেবে আজাদ কাশ্মীরের ওপারে জিনজিয়াং প্রদেশের সীমান্তে৷ এই যৌথ টহলের উপর নজর রাখছে ভারতীয় সেনাবাহিনীও৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ