Advertisement
Advertisement

হিংসা, বিভেদে পা না দেওয়ার সতর্কবার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

রাজ্যের মানুষকে ধর্মনিরপেক্ষতা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা দিলেন তিনি৷

Mamata Banerjee gives her view on communal harmony
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:August 1, 2016 4:58 pm
  • Updated:August 1, 2016 4:58 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতবর্ষ একটা পরিবার৷ যেখানে হিন্দু, মুসলিম, খ্রিষ্টান-সহ অন্য সম্প্রদায়ের মানুষরা একসঙ্গে বসবাস করেন৷ সেখানে একজন ব্যথা পেলে অন্যজনও ব্যথা পাবেন৷ বক্তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ আরও একবার রাজ্যের মানুষকে ধর্মনিরপেক্ষতা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা দিলেন তিনি৷

কুর্সি না চাইলেও, দিল্লি পৌঁছনোকেই যে তিনি পাখির চোখ করেছেন তা স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন আগেই৷ দেশ জুড়ে মেরুকরণের রাজনীতির বিরুদ্ধে জাতীয় স্তরে ধর্মনিরপেক্ষ তৃতীয় ফ্রণ্ট গড়ে তোলার পক্ষে তাঁর ভূমিকা ক্রমশই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে৷ ক’দিন আগেই দিল্লি গিয়ে নীতিশ কুমারের সঙ্গে একপ্রস্থ আলোচনাও সেরে রেখেছেন৷ এই পরিস্থিতিতেই ধর্মনিরপেক্ষতার এ বার্তা রাজনৈতিকভাবেও বিশেষ তাপৎর্যপূর্ণ হয়ে উঠছে৷ উল্লেখযোগ্যভাবে রাজ্যে যখন এ বার্তা দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী, তখন সংসদে তাঁর দলের সদস্যরা একযোগে সরব হয়েছেন ধর্মীয় মৌলবাদ ও আগ্রাসনের বিরোধিতায়৷

Advertisement

এদিন প্রগতির পথে নামে এক অনুষ্ঠানে দাঁড়িয়ে ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে একাধিক বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী৷ স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তিনি সর্বধর্মসমণ্বয়ে বিশ্বাসী৷ সকল ধর্মগ্রন্থই তাঁর কাছে পবিত্র৷ রবীন্দ্র-নজরুলের এ বাংলাকে একতার ভূমি হিসেবেই তুলে ধরেন তিনি৷ সেই সঙ্গে তাঁর সতর্কবার্তা, দেশে কেউ কেউ হিংসা ছড়াতে চাইছে, বিভেদ সৃষ্টি করতে চাইছে, কিন্তু রাজ্যের মানুষ যেন সে ফাঁদে পা না দেন৷ তিনি যে ঐক্যবদ্ধ ভারত গড়ার পক্ষে তা এদিন দ্ব্যর্থহীনা জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী৷

Advertisement

Cow7HMeUMAAjMKXকেন্দ্রের শাসকদলের ধর্মীয় মেরুকরণ প্রতিহত করতে ধর্মনিরপেক্ষ জোট গড়ার প্রয়াস শুরু হয়েছে৷ বিশেষত, কংগ্রেস বিরোধিতার ক্ষেত্রে দাঁতনখহীন হয়ে পড়ার পর থেকেই, আঞ্চলিক শক্তিগুলির জোট রাজনৈতিক মানচিত্রে বড় জায়গা করে নিতে চলেছে৷ আর সেখানেই প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে এই ধর্মনিরপেক্ষতার বার্তা৷ এর আগে মুখ্যমন্ত্রী একাধিকবার যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো রক্ষার পক্ষে সওয়াল করেছেন৷ আঞ্চলিক দলগুলি শক্তিশালী হয়ে এগিয়ে চলুক এমন ইচ্ছেও প্রকাশ করেছেন তিনি৷ সম্প্রতি গুজরাটের উনার ঘটনায় বিজেপির প্রত্যক্ষ্য সংযোগ না থাকলেও, দলিতদের বিদ্রোহে যথেষ্ট অস্বস্তিতে কেন্দ্রের শাসকদল৷ কংগ্রেস, আপের পাশাপাশি তৃণমূলও তাদের প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছিল উনায়৷ দেশের এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গকে ধর্মনিরপেক্ষ রাজ্য হিসেবেই তুলে ধরতে মরিয়া মুখ্যমন্ত্রী৷ আর তাই এদিন যেমন উল্লেখ করলেন সংখ্যালঘু ছাত্রদের বৃত্তি প্রদানে বাংলার এক নম্বর হওয়ার কথা, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমৃদ্ধি যেমন কামনা করলেন, তেমনই সমাজগঠনে খ্রিষ্টান স্কুলগুলির অবদানের কথা উল্লেখ করতেও ভুললেন না৷ ছাত্রদের ধর্মনিরপেক্ষতার শিক্ষা দেওযার কথা উল্লেখ করে তিনি বাংলাতে সাম্প্র্দায়িক সম্প্রীতি জোরদার করার পক্ষেই সওয়াল করলেন৷ বাংলার এই ভাবমূর্তিই জাতীয় স্তরে ধর্মনিরপেক্ষ জোট গড়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা৷ ধর্মীয় মৌলবাদ, মেরুকরণের রাজনীতি যখন কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে ক্রমশ অস্বস্তির হয়ে উঠছে, তখন ধর্মনিরপেক্ষতার সোপান বেয়ে দ্রুত উঠে আসছে তৃতীয় ফ্রণ্ট৷ রাজনৈতিক মহলের বিশ্বাস, ধর্মনিরপেক্ষ বাংলার প্রতিনিধি হিসেবে মমতাই সে ফ্রণ্টের মুখ হয়ে উঠতে পারেন৷ আর তাই রাজ্যের মানুষকে সবরকম বিভেদ থেকে মুক্ত হওয়ার বার্তা আজ আরও একবার দিয়ে রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ