Advertisement
Advertisement

Breaking News

কিডনির অপেক্ষা শেষ সুতপার, দান করলেন দুই চোখ

মৃত্যুর পরও নিজের চোখজোড়া দিয়ে দু'জন মানুষকে নতুন জীবন দিয়ে গেলেন সুতপা৷

She died waiting for a kidney, but gifts eyes
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:July 13, 2016 4:09 pm
  • Updated:July 13, 2016 4:09 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রেনাল ফেলিওর-এ আক্রান্ত ৩৬ বছরের সুতপা বসু গত দেড় বছর ধরে অসুস্থতায় ভুগছিলেন৷ নিয়মিত ডায়ালিসিস চললেও ডাক্তার সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, কেউ কিডনি দান করলে তবেই এই রোগের হাত থেকে দীর্ঘস্থায়ী আরোগ্যলাভ সম্ভব৷ শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার সকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সুতপার জীবনযুদ্ধের লড়াই থেমে গেল৷ মৃত্যুর পর তাঁর দুটি কর্নিয়া তিনি কারও দৃষ্টি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য দান করে গিয়েছেন৷

স্বামী অমিতাভ ছাড়াও সুতপার একটি পাঁচ বছরের মেয়ে রয়েছে, নাম শ্রেষ্ঠা৷ অমিতাভবাবু ডাক্তারকে ফোন করে জানান, জীবন-মরণের লড়াইয়ে সুতপা যুঝতে পারেনি, কিন্তু তাঁর চোখ দুটি দান করে গিয়েছে যাতে আরও দুজন মানুষ এই পৃথিবীর আলো দেখতে পান৷ গত মঙ্গলবার বিরাটিতে বাপের বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হন সুতপা৷ দমদমের এক বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়৷ সেই কঠিন পরিস্থিতিতেও সুতপার বাবা, স্বামী, ভাই ও দেওর যতগুলি সম্ভব অঙ্গ দানের সিদ্ধান্ত নেন৷ পরিবারের এই বিচক্ষণতা দেখে অবাক নেফ্রলোজিস্ট প্রতিম সেনগুপ্তও৷ তিনিই সুতপার চিকিৎসা করছিলেন৷ তাঁর বক্তব্য, “শোকের পরিবেশেও যেভাবে সুতপার পরিবার তাঁর অঙ্গ দানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দেখে আমি হতবাক৷”

Advertisement

সুতপার বাবা অজিত পাল বলেছেন, “মেয়ের কিডনি খারাপ হওয়ার পর তাঁর ক্রিয়েটিনিন লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত তাঁর ডায়ালিসিস চলত৷ ডাক্তারি পরামর্শ মেনে তাঁর কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করার তোড়জোর চলছিল৷ কিন্তু প্রথমে ডোনার খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না৷ বেশ কয়েকদিন পর ডোনার পাওয়া গেলেও নিয়মকানুন মেটাতে বেশ কিছু সময় চলে যায়৷ অবশেষে চলতি মাসের শেষের দিকে ওর অপারেশন হওয়ার কথা৷ কিন্তু তার আগেই…” বলতে বলতে অজিতবাবুর গলা ধরে আসে৷

Advertisement

সুতপাকে মৃত বলে ঘোষণা করার পর ব্যারাকপুরের দিশা আই হসপিটালের সঙ্গে যোগাযোগ করে যত দ্রুত সম্ভব মৃতদেহ থেকে দুটি কর্নিয়া সংগ্রহ করা হয়৷ আই ব্যাঙ্ক সূত্রে জানানো হয়েছে, সুতপার কর্নিয়া দুটি বুধবার সকালে দুজন দৃষ্টিহীনের অপারেশনে ব্যবহৃত হবে৷ বসু পরিবারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর৷ দফতরের মত, মানুষের মৃত্যুর পর তাঁদের পুড়িয়ে বা দাহ করে তাঁদের অঙ্গগুলি নষ্ট করে ফেলা হয়৷ কিন্তু একটু সচেতন হলেই মৃতদেহ থেকে বেশ কিছু অঙ্গ অন্যদের দেহে প্রতিস্থাপন করা যায়৷ তা হলে বহু মানুষ নতুন জীবন পান৷ সেইভাবেই মৃত্যুর পরও নিজের চোখজোড়া দিয়ে দু’জন মানুষকে নতুন জীবন দিয়ে গেলেন সুতপা৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ