Advertisement
Advertisement

স্কুলে এবার নাচে-গানে বয়ঃসন্ধির শিক্ষা

মূলত অষ্টম অথবা নবম কিংবা উভয় ক্লাসের পড়ুয়ারা এতে অংশ নিতে পারবে৷

State’s new Policy on Sex Education in Schools
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:August 11, 2016 11:40 am
  • Updated:August 11, 2016 11:40 am

শ্রীষিতা ঘোষ: আবেশের মৃত্যু হঠাৎ করেই বয়ঃসন্ধির রহস্যে মোড়া ঘেরাটোপের সন্ধান দিয়ে বিতর্ক ছড়িয়েছে৷ উসকে দিয়েছে কৈশোরের দিশা কেমন হবে সেই তর্ককেও৷ কারও মত, নিজস্ব সংস্কৃতি থেকে যোজন ক্রোশ দূরে সরে যাচ্ছে জেন-জেড প্রজন্ম৷ তারই বিষবৃক্ষের ফল এমন মর্মান্তিক ঘটনা৷ কেউ আবার সমাজের অবক্ষয়ের ফসল হিসাবেই দেখছেন এই কিশোরের মৃত্যুকে৷ নেট দুনিয়া থেকে মধ্যবিত্তের চারচৌকো ফ্ল্যাটের মধ্যে ফেনিয়ে উঠেছে বিতর্ক৷

এমন তাজা স্মৃতির মধ্যেই দুঃস্বপ্নের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে কোমর বেঁধে নেমে পড়ল রাজ্য সরকার৷ কৈশোর থেকে যৌবনে পা দেওয়ার সময় নিজেকে তৈরি করে নেওয়াই নয়, সুস্থ সমাজ ও জীবন কীভাবে গড়ে তুলবে ছাত্র-ছাত্রীরা সেই লক্ষ্যও নির্দিষ্ট করে দিতে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী অভিনব এক প্রতিযোগিতা শুরু করল রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতর৷

Advertisement

‘চার্মস অ্যান্ড চ্যালেঞ্জেস অফ অ্যাডোলেসেন্স’৷ সেখানে থাকবে বংশবৃদ্ধি ও যৌনস্বাস্থ্যের উপর বিভিন্ন বিষয়৷ বয়ঃসন্ধির বিভিন্ন সমস্যা ও তার সমাধানকে গান-নাচে বেঁধে নেবে ছাত্র-ছাত্রীরা৷ এভাবেই গড়ে উঠবে মনের গভীরে ঘুরতে থাকা চিন্তা-ভাবনার বহিঃপ্রকাশ৷ বিকাশ ভবন সূত্রে খবর, বয়ঃসন্ধিকালে শিশুদের মননজগতে কী কী পরিবর্তন আসে, কোন ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে, সমস্ত কিছুই লোকনৃত্য প্রতিযোগিতার মাধ্যমে পরিবেশন করা হবে৷

Advertisement

এই ইস্যু ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি বিষয়ের উপর লোকনৃত্য আয়োজন করা যেতে পারে৷ ছাত্র-ছাত্রীদের সমানাধিকার ও কন্যাভ্রূণ হত্যা প্রতিরোধ, গুরুজনদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন, পরিবেশের সংরক্ষণ, ড্রাগ ও মাদক দ্রব্যের কুফল-এর মতো বিষয়৷ ছাত্র-ছাত্রীরা নিজেদের অঞ্চলভিত্তিক নৃত্যের মাধ্যমে বিষয়গুলি উপস্থাপন করবে৷

কেন এমন পথে হাঁটা শুরু করল স্কুলশিক্ষা দফতর? স্কুলশিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী, বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা ও তার সমাধান প্রসঙ্গে পড়ুয়াদের সচেতন করতেই এমন সিদ্ধান্ত৷ যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে দেশের একজন সচেতন নাগরিক হয়ে উঠতে সাহায্য করবে৷ শিক্ষাবিদ তথা প্রেসিডেন্সির প্রাক্তন অধ্যক্ষ অমল মুখোপাধ্যায় এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন৷ তাঁর কথায়, এই ধরনের উদ্যোগ ছাত্র-ছাত্রীদের আরও বেশি সমাজ সচেতন ও দায়িত্বশীল করে তুলবে৷ নারকেলডাঙা হাই স্কুলের ইংরেজির শিক্ষক স্বপন মণ্ডলের কথায়, রাজ্যের পড়ুয়াদের বিষয়গুলি নিয়ে সচেতন করা বিশেষ প্রয়োজন৷ যাদবপুর বিদ্যাপীঠের সহ-প্রধানশিক্ষক রাজেন মণ্ডলও এই ধরনের উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন৷

মূলত অষ্টম অথবা নবম কিংবা উভয় ক্লাসের পড়ুয়ারা এতে অংশ নিতে পারবে৷ তারা বিভিন্ন বিষয়ে লোকনৃত্য পরিবেশন করবে৷ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে স্কুলের তরফেই৷ একেকটি লোকনৃত্যের সময়সীমা হবে ৮ থেকে ১০ মিনিটের৷ অনুষ্ঠানশেষে লোকনৃত্যের বিষয়, অংশগ্রহণকারীদের অভিনয় নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ পাবে দর্শকাসনে থাকা অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা৷

বিচারক পদে থাকবেন প্রধানশিক্ষক ও তাঁর মনোনীত দু’জন শিক্ষক৷ ইতিমধ্যেই চলতি মাস থেকে স্কুলস্তরে এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গিয়েছে৷ স্কুলগুলি থেকে নির্বাচিত দল নিয়ে দ্রুত শুরু হচ্ছে জেলাস্তরের প্রতিযোগিতা৷ এর পর সেপ্টেম্বর মাসে হবে রাজ্যস্তরে প্রতিযোগিতা৷ চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রতিযোগিতা হবে ডিসেম্বর মাসে৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ