প্রতীকী ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিদেশে গেলে মোটা টাকার হাতছানি। ভালোভাবে চলবে সংসার। তাই ভাগ্য ফেরাতে বিদেশে পাড়ি দিয়েছিলেন তাঁরা। সঙ্গে ছিল শিশুরাও। কিন্তু মাঝপথেই ঘটে বিপত্তি। ভূমধ্যসাগর সংলগ্ন ইটালির উপকূলে জোড়া নৌকাডুবিতে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১১ জনের। এখনও নিখোঁজ ৬৪। মঙ্গলবার এমনটাই জানানো হয়েছে রাষ্ট্রসংঘের তরফে। জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন তাঁরা প্রত্যেকেই অভিবাসী।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার তথ্য অনুসারে, অভিবাসীদের নিয়ে নৌকাগুলো লিবিয়ার উপকূল থেকে যাত্রা শুরু করেছিল। পাকিস্তান, সিরিয়া, মিশর ও বাংলাদেশের নাগরিকেরা ছিলেন সেখানে। সোমবার ইটালির লামপেদুসা দ্বীপের কাছে ডুবতে থাকা একটি নৌকা থেকে ১০ জনের দেহ উদ্ধার করে উদ্ধারকারী দল। ওই নৌকা থেকেই ৫১ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে ইটালির কোস্টগার্ডের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পরে তাঁদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয় হাসপাতালে। অন্যদিকে, দক্ষিণ ইটালির ক্যালাব্রিয়া উপকূলে থেকে প্রায় ১২৫ মাইল দূরে আরেকটি নৌকা ডুবে যায়। সেখানে শিশু-সহ এখনও নিখোঁজ ৬৪ জন। ফলে এই ঘটনায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বলে রাখা ভালো, অভিবাসীদের নিয়ে যে সব স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কাজ করে, তাদের মতে, এশিয়া ও আফ্রিকা থেকে ইউরোপে আশ্রয় খুঁজতে যাওয়া মানুষজনদের প্রলোভন দেখিয়ে তাঁদের পাচারের ষড়যন্ত্র করে বিভিন্ন অসাধু চক্র। দ্রুত নতুন দেশে পৌঁছে দেওয়া আশা দেখিয়ে তাঁদের রাবারের ডিঙা, কাঠের নৌকা ও জেলে নৌকায় তুলে দেওয়া হয়। ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি মানুষ বহন করতে গিয়ে এসব নৌকা ভূমধ্যসাগরের উত্তাল ঢেউয়ের সঙ্গে যুঝতে পারে না। ফলে দুর্ঘটনা ঘটে। কিন্তু প্রাণের ঝুঁকি নিয়েও প্রত্যেক বছর হাজার হাজার মানুষ বেশি উপার্জনের আশায় ইউরোপের দেশগুলোতে পাড়ি দেন। আর প্রায়শই ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির ঘটনায় সলিলসমাধি হয় তাঁদের।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে ইয়েমেন উপকূলেও নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। মৃত্যু হয় অন্তত ৪৯ জনের। যার মধ্যে ছিল ৩১ জন মহিলা ও ৬ শিশু। নিখোঁজের সংখ্যা ১৪০ কাছাকাছি। হর্ন অফ আফ্রিকা থেকে নৌকাটি ইয়েমেনের দিকে যাচ্ছিল। দুর্ঘটনার সময় নৌকাটিতে ২৬০ জন ছিল। যাঁদের মধ্যে অধিকাংশই ইথিওপিয়া ও সোমালিয়ার নাগরিক। পূর্ব ও হর্ন অফ আফ্রিকা থেকে উপসাগরীয় দেশে কাজ করতে যাওয়ার জন্য ইয়েমেনের ওই পথটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অভিবাসীদের কাছে। কিন্তু কাজের সন্ধানে যাওয়ার পথে প্রায়শই তাঁরা বড়সড় বিপদের সম্মুখীন হন। এমনকী পাচারকারিদের খপ্পরেও পড়েন অভিবাসীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.