Advertisement
Advertisement

Breaking News

মাসুদ

শেষ হয়ে আসছে জঙ্গি মাসুদের সময়, মার্কিন চাপে বেকায়দায় আইএসআই

কখনও ‘আল মুরাবিতুন’, কখনও ‘তেহরিক-অল-ফুরকান’ ছদ্মনামে কাজ করে মাসুদের দলবল।

Act against global terrorist Masood Azhar, US tells Pakistan
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:May 3, 2019 9:56 am
  • Updated:May 3, 2019 9:56 am

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাষ্ট্রসংঘের নিয়ম মেনে ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী’ মাসুদ আজহার এবং জইশ-ই-মহম্মদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বলে কথা দিয়েছে পাকিস্তান। আমেরিকা চায়, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এবং পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই এই ‘কথা রাখতে’ ইমরান খানের সরকারকে সাহায্য করুক। কারণ পাক সেনা ও আইএসআইয়ের ছত্রচ্ছায়ায় বেড়ে ওঠা, তাদের সমর্থনপুষ্ট মাসুদের বিরুদ্ধে ইমরান খানের সরকার তখনই ব্যবস্থা নিতে পারবে যদি পাক সেনা ও আইএসআই মাসুদকে রক্ষাকবচ না দেয় এবং মাসুদের সঙ্গে সবরকম সংস্রব ত্যাগ করে।

[আমেরিকায় বানচাল গণহত্যার ছক, গ্রেপ্তার প্রাক্তন সেনাকর্মী]

Advertisement

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং বিদেশসচিব পম্পেও-র ঘনিষ্ঠ এক মার্কিন আধিকারিক সংবাদসংস্থা পিটিআইকে স্পষ্ট জানিয়েছেন, সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলির সঙ্গে সবরকমের সংস্রব ত্যাগ করার জন্য ইমরান খান সরকারের সবরকমের চেষ্টা ও পদক্ষেপ আমরা সমর্থন করছি। তিনি সন্ত্রাসবাদহীন নয়া পাকিস্তান তৈরির যে গল্প শোনাচ্ছেন তাও আমরা বিশ্বাস করছি। একমাত্র সময়ই বলবে তিনি তাঁর কাজে সফল হলেন কি না। কিন্তু আমেরিকা চায়, পাক সেনা, আইএসআই কোনওরকম কূটকৌশল ছাড়া খোলা মনে ইমরানের পদক্ষেপগুলিকে সমর্থন করুক। পাকিস্তানের সেনা, সরকার, আইএসআইয়ের সঙ্গে জঙ্গিদের ওতপ্রোত যোগাযোগ আমেরিকা মেনে নেবে না। আমেরিকা পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করতে চায় না ঠিকই কিন্তু আমরা দেখতে চাই, মাসুদ আজহার সহ যাবতীয় সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে সংস্রব ত্যাগ করেছে পাক সেনা, আইএসআই। কারণ পাক সেনার সন্ত্রাসযোগের জন্যই আফগানিস্তান, ভারত-সহ গোটা দক্ষিণ এশিয়ায় রক্ত ঝরছে।

Advertisement

তিনি বলেন, আমেরিকা চায়, মাসুদ আজহারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রসংঘের ঘোষণা কার্যকর করা হবে বলে পাকিস্তান যে পাকা কথা দিয়েছে তা কাজে পরিণত করতে পাক সরকারকে সাহায্য করুক পাক সেনা। অন্যদিকে, রাষ্ট্রসংঘে ভারতের স্থায়ী রাষ্ট্রদূত সৈয়দ আকবরউদ্দিনকে উদ্ধৃত করে পিটিআই জানিয়েছে, ১২৬৭ নম্বর কমিটির প্রস্তাবে বুধবারই ছিল মাসুদের উপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে শুনানি ও প্রস্তাব গ্রহণের চূড়ান্ত দিন। সেখানে কিছুক্ষণ আলোচনার পরই চিন তাদের বাধা এবং আপত্তি তুলে নেয়। উপায় না দেখে তাতে সায় দেয় পাকিস্তানও। এরপর রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি ইন্দোনেশিয়ার দিয়ান ত্রিয়ানশা দানি আকবরউদ্দিনকে ফোন করে জানান, ‘ভীষণ সুখবর। আপনাদের উদ্দেশ্য সফল হয়েছে। চিন-সহ নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য মুসলিম দেশগুলি মাসুদের বিরুদ্ধে আনা প্রস্তাবকে সমর্থন করেছে। অর্থাৎ আজ থেকে সর্বসম্মতিক্রমে মাসুদ আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী ঘোষিত হল।’ উল্লেখ্য, দিয়ান দানি মে মাসের জন্য নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন।

দানি জানান, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হল, বিতর্কের উর্ধ্বে উঠে নিরাপত্তা পরিষদের ১২৬৭ নম্বর কমিটি নিরপেক্ষভাবে সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে কমিটির বিশ্বাসযোগ্যতা এবং গ্রহণযোগ্যতা দুনিয়ার কাছে অটুট থাকল। অন্যদিকে, ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, পুলওয়ামা কাণ্ড এবং সেখান থেকে উদ্ভূত পরিস্থিতিই মাসুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রাষ্ট্রসংঘকে বাধ্য করেছে। পুলওয়ামায় ভারতীয় বাহিনীর উপর জইশ জঙ্গিদের হামলা এবং গত দুই দশকে জইশ জঙ্গিরা যেভাবে ভারতের মাটিতে একের পর এক আঘাত হেনেছে তার যাবতীয় প্রমাণ, নথি চিনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। চিনও সেগুলিকে মেনেছে। তার ফল হাতেনাতে। চিন এবার প্রস্তাবে ভেটো না দিয়ে সম্মতি দিয়েছে।

উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক চাপে পড়ে পাক বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মহম্মদ ফয়জলের দাবি, ‘‘আমরা অবিলম্বে মাসুদ আজহারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার কাজ শুরু করব।’’ তাঁর দাবি, ফয়জল বলেন, “মাসুদ নিয়ে এই অগ্রগতিকে ভারতের কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে দেখলে বড় ভুল হয়ে যাবে। কারণ, আন্তর্জাতিক স্তরে বিভিন্ন দেশ এক জোট হয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’’ জইশ-ই-মহম্মদ, যার অর্থ হল ‘মহম্মদের সেনা’, তার প্রাণপুরুষ এই মাসুদ আজহারই। একসময় সে ছিল ভারতের হেফাজতে। কিন্তু ১৯৯৯ সালে আফগানিস্তানে তালিবান জমানায় কান্দাহারে বিমান অপহরণের পর তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় ভারত। আফগানিস্তানে থাকার সময়ই কুখ্যাত তালিবান নেতা মোল্লা ওমর এবং আল কায়দা প্রধান ওসামা বিন লাদেনের সঙ্গেও সে দেখা করে। ২০০১ সালে ভারতের সংসদেও হামলা চালিয়েছিল তার জঙ্গিবাহিনী। সরকারি ভাবে পাকিস্তানে জইশকে নিষিদ্ধ সংগঠন ঘোষণা করা হলেও কখনও ‘আফজল গুরু স্কোয়াড’, কখনও ‘আল মুরাবিতুন’, কখনও ‘তেহরিক-অল-ফুরকান’ ছদ্মনামে কাজ করে মাসুদের দলবল।

ভারতীয় গোয়েন্দাদের মতে, নতুন পরিস্থিতিতে আইএসআই এবং পাক সেনা খুল্লমখুল্লা মাসুদকে মদত বা আশ্রয় দিতে পারবে না। বাজেয়াপ্ত হবে তার সম্পত্তি এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট। সে ক্ষেত্রে সন্ত্রাসের পরিকল্পনায় মাসুদের কর্মকাণ্ড অনেকটাই দুর্বল হয়ে যাবে।

[ইস্টার হামলার জের, শ্রীলঙ্কায় বন্ধ জেহাদি জাকিরের পিস টিভির সম্প্রচার]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ