৮ আশ্বিন  ১৪৩০  মঙ্গলবার ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

অভাব বড় বালাই! তালিবান জমানায় সংসার বাঁচাতে ছোট্ট মেয়েদের ‘বিক্রি’ করে দিচ্ছেন আম আফগানরা

Published by: Biswadip Dey |    Posted: November 2, 2021 2:15 pm|    Updated: November 2, 2021 3:13 pm

Afghan man sells 9-year-old daughter to ‘keep family alive’। Sangbad Pratidin

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত আগস্ট থেকেই অন্ধকারে তলিয়ে গিয়েছে আফগানিস্তান (Afghanistan)। তালিবানের (Taliban) রাজত্বে দেশের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙে গিয়েছে। দু’মুঠো খাবারের জন্য সাধারণ আফগানদের নিরন্তর সংগ্রাম করতে হয়েছে। আর এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি বিপন্ন সেদেশের মেয়েরা। ইতিমধ্যেই পরিবারের বাকি সদস্যদের বাঁচাতে নাবালিকা কন্যাদের বিয়ে দিতে, বলা ভাল বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন বাবারা। খিদের হাহাকারের তলায় চাপা পড়ে রয়েছে অসহায় নারীদের কান্নার শব্দ।

তেমনই এক বিষণ্ণ বাবা আবদুল মালিক। সম্প্রতি ‘সিএনএন’-এর সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে নিজের অসহায়তার কথা জানিয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন, পরিবারের সকলের মুখে খাবার তুলে দিতে নিজের ৯ বছরের কন্যাকে ৫৫ বছরের এক প্রৌঢ়ের সঙ্গে বিয়ে দিয়েছেন তিনি। কয়েক দিন আগে ১২ বছরের মেয়েকেও বিয়ে দিয়েছেন। এবার ছোট্ট মেয়ে পরওয়ানার বিয়েও দিতে বাধ্য হলেন। ভিতরে ভিতরে লজ্জা ও সংকোচে নত হয়ে আবদুল জানাচ্ছেন, তাঁরা ভীত হয়ে রয়েছেন মেয়ের প্রতি শ্বশুরবাড়ি অত্যাচার করবে না তো, এই কথা ভেবে।

[আরও পড়ুন: রোমের G-20 সম্মেলন থেকে উধাও ব্রাজিল প্রেসিডেন্ট বলসোনারো! খোঁজ করতে গিয়ে আক্রান্ত সাংবাদিক]

আর পরওয়ানা? সে কী ভাবছে? ছোট্ট মেয়েটি চেয়েছিল পড়াশোনা করতে। বড় হয়ে শিক্ষিকা হওয়াই লক্ষ্য ছিল তার। কিন্তু অভাবের ধাক্কায় সব দরজা রাতারাতি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বয়সে সাড়ে চার দশকের বড় স্বামী তাঁর প্রতি কী কী নির্যাতন করবে সে কথা ভেবেই ভয়ে কাঁটা পরওয়ানা।

যদিও নতুন জামাই কোরবান কথা দিয়েছেন, তিনি পরওয়ানার কোনও অযত্ন হতে দেবেন না। কত টাকায় মেয়েকে ‘বিক্রি’ করেছেন আবদুল? তিনি জানাচ্ছেন, সবশুদ্ধ ২ লক্ষ আফগান টাকা দিয়েছেন তিনি। তবে পুরোটা টাকায় নয়। জমি, ভেড়া ও নগদ- এই তিনে মিলে হয়েছে লেনদেন।

তবে পরওয়ানা প্রতিরোধ গড়তে না পারলেও ১০ বছরের মাগুল কিন্তু রুখে দাঁড়িয়েছে। সেদেশের আরেক অসহায় কন্যা মাগুলের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয়েছিল ৭০ বছরের এক বৃদ্ধের। কিন্তু মাগুল জানিয়েছে সে বিয়ে করবে না। জানিয়ে দিয়েছে, তাকে জোর করা হলে আত্মহত্যার পথ বেছে নেবে সে।

[আরও পড়ুন: সমাজের ‘লক্ষ্মী’রা কি প্রকৃত সম্মান পায়? প্রশ্ন নিয়ে আসছে শ্রীলেখা, প্রিয়াঙ্কা, গৌরবের ‘নির্ভয়া’]

পরওয়ানা কিংবা মাগুল, হিমশৈলের চূড়া মাত্র। গত কয়েক মাসে দারিদ্রের ছোবলে জেরবার হয়ে যাওয়া আফগানিস্তানে এভাবেই বিয়ের নামে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে নাবালিকারা। যত সময় যাচ্ছে, ততই গাঢ় হচ্ছে অন্ধকার। অভাব আগেও ছিল। কিন্তু তালিবান জমানায় সেই অন্ধকার আরও ঘন হয়েছে। সেই অন্ধকারের ভিতরে ক্রমশ মলিন থেকে মলিনতর হয়ে যাচ্ছে পরওয়ানাদের ভবিষ্যৎ।

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে