সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সামনেই বিয়ের দিন। কিন্তু নির্দিষ্ট দিনে প্রিয়জনের হাত ধরে নতুন জীবনে প্রবেশ করতে পারবেন কি না অন্ধ্রের তরুণী, তা নিয়ে তীব্র সংশয় তৈরি হয়েছে। কারণ, তিনি আটকে পড়েছেন চিনে। ভারতীয়দের ফেরাতে যে দুটি বিশেষ বিমান পাঠানো হয়েছিল চিনে, তাতে জায়গা হয়নি আন্নেম জ্যোতি নামে ওই তরুণীর। করোনা কবলিত চিনে কার্যত আটকে গিয়েছেন তিনি। সঙ্গে আরও ন’জন এখনও ফিরতে পারেননি। দেশে ফিরতে চেয়ে কাতরস্বরে জ্যোতি ভিডিওবার্তা পাঠিয়েছেন কেন্দ্রের কাছে। আরজি একটাই, কোনওভাবে তাঁকে উদ্ধার করা হোক। সর্বস্তরের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় নিজের ১০০ শতাংশ সুস্থতা তিনি প্রমাণ করতে চান।
কথা ছিল, করোনা সংক্রমণ থেকে সুরক্ষার স্বার্থে দু’ধাপে চিনের ইউহান এবং সংলগ্ন শহরগুলিতে আটকে থাকা ভারতীয়দের উদ্ধার করা হবে। এয়ার ইন্ডিয়ার তরফে পাঠানো বিশেষ বিমানে চিকিৎসকদলও ছিল। যাঁরা চিনের থাকা ভারতীয়রা করোনা সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন কি না, প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা করে তবেই বিমানে তাঁদের তোলা হবে। তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী জ্যোতি জানিয়েছেন, এয়ার ইন্ডিয়ার প্রথম বিমানটিতেই তিনি এবং তাঁর ৫৭ জন সহকর্মীর ফেরার কথা ছিল। কিন্তু তাঁদের দু’জনের শরীরে জ্বর থাকায় বিমানে উঠতে দেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, ”আমাদের বলা হয় যে পরের বিমানটায় যেতে পারব। কিন্তু বিকেলবেলাতেই ফোন করে জানানো হয়, দ্বিতীয় বিমানটিতেও আমরা উঠতে পারব না। কারণ, আমাদের জ্বর আছে। তখনও পর্যন্ত চিনের কোনও চিকিৎসক আমাদের করোনা ভাইরাস সংক্রমণ হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত করতে পারেননি। কিন্তু আমরা স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য আগ্রহী ছিলাম। নিজেদের সুস্থতার প্রমাণ দিতে প্রস্তুত ছিলাম।”
[আরও পড়ুন: করোনা আক্রান্ত চিনের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধের দাবি, হংকংয়ে বিক্ষোভ চিকিৎসকদের]
নিজের এই অভিজ্ঞতা জানিয়ে এরপর জ্যোতি বলেন, ”এখন আমার শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক। আমি এখন পুরোপুরি সুস্থ, রোগের কোনও উপসর্গও নেই। কেন্দ্রের কাছে আমার একান্ত আবেদন, আমাদের ফিরিয়ে নিয়ে যান। আমরা প্রমাণ করে দিতে চাই যে আমাদের শরীর করোনা সংক্রমণমুক্ত।” জ্যোতি-সহ ১০ জন এখনও আটকে ইউহানে। দুটি বিমানের কোনওটিতেই তাঁদের ঠাঁই হয়নি। এই দশজনকে উদ্ধারে কী ব্যবস্থা নেবে কেন্দ্র? আদৌ কি সরকারি সাহায্যে মৃত্যুপুরী ইউহান থেকে তাঁরা বাড়ি ফিরতে পারবেন? বড়সড় প্রশ্নের মুখে তাঁদের ভবিষ্যৎ। তার উপর জ্যোতির এ মাসেই বিয়ের দিন স্থির হয়ে আছে। তাই তাঁর আকুতি অনেক বেশি। সময়মতো ফিরতে না পারলে বিয়েটাই হয়ত বাতিল হয়ে যাবে।