সুকুমার সরকার, ঢাকা: আবারও মৌলবাদীদের সামনে মাথা নোয়ালো প্রশাসন। চরমপন্থীদের দাবি মেনে গণদাবি উপেক্ষা করে বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানী ঢাকার সুপ্রিম কোর্ট চত্বর থেকে ন্যায় বিচারের প্রতীক হাতে নারী ভাস্কর্যটি সরিয়ে ফেলা হল। প্রশাসনের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে মধ্যরাত থেকে আদালতের ফটকের সামনে বিক্ষোভ করছেন বিভিন্ন প্রগতিশীল রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
[নিরীহদের হত্যাকারীদের সঙ্গে কীসের আলোচনা, আইয়ারকে কটাক্ষ অনুপমের]
জানা গিয়েছে, মৌলবাদী সংগঠন হেফাজতে ইসলাম-সহ একাধিক মৌলবাদী দলের দাবির মুখে সুপ্রিম কোর্ট চত্বর থেকে ভাস্কর্যটি সরানো হয়েছে। রাত সাড়ে ১২টার দিকে ভাস্কর্যটি সরানোর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর বিভিন্ন এলাকা থেকে সর্বোচ্চ আদালতের সামনে ছুটে আসেন বিক্ষুব্ধরা। এরপর রাত দুটোর সময় বেশ কিছু তরুণ সুপ্রিম কোর্টের মূল ফটকের বাইরে স্লোগান দিতে শুরু করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকেও বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের নেতা-কর্মী ও সাধারণ ছাত্রদের একটি প্রতিবাদ মিছিল শুরু হয়। স্লোগান ওঠে ‘ন্যায়বিচারের ভাস্কর্য অপসারণ করা যাবে না’, ‘আপস না রাজপথ?—রাজপথ, রাজপথ’, ‘হেফাজতের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘মৌলবাদের আস্তানা, ভেঙে দাও জ্বালিয়ে দাও’ ইত্যাদি।
[স্মার্টফোনে চার্জ থাকছে না? এখনই ‘আন-ইনস্টল’ করুন এই ১০ অ্যাপ]
সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে ভাস্কর মৃণাল হক জানিয়েছেন, এ ভাস্কর্য কোনও গ্রিক দেবীর নয়। বরং এটি বাঙালি মেয়ের ভাস্কর্য। যার হাতে রয়েছে ন্যায়বিচারের প্রতীক। তিনি আরও বলেন, “আমার কিছু বলার নেই। আমাকে চাপ দিয়ে ভাস্কর্যটি সরানো হচ্ছে। এখন এটি সরানো হচ্ছে, এরপর নির্দেশ আসবে অপরাজেয় বাংলা ভাঙার।” তিনি বলেন, দেশের শান্তি রক্ষার স্বার্থে যত্ন করে ভাস্কর্যটি সরাচ্ছেন। তিনি না থাকলে এটি নয় টুকরো করা হতো। কিন্তু এখন এটি অক্ষত অবস্থায় অপসারণ করা সম্ভব হয়েছে। শুক্রবার ভোর চারটের দিকে ভাস্কর্য অপসারণের কাজ শেষ হওয়ার পর আরও ঘণ্টাখানেক অবস্থান করে বিক্ষোভকারীরা সেখান থেকে চলে যান। তবে এই পদক্ষেপে তীব্র প্রতিবাদ শুরু হয়েছে দেশ জুড়ে। বিভিন্ন গণতান্ত্রিক সংগঠন সরকারের পদক্ষেপের নিন্দা করে প্রতিবাদী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
[আস্ত একটি রেল স্টেশনকে বিয়ে করেছেন এই মহিলা!]