সুকুমার সরকার, ঢাকা: তালিকায় নাম ছিল ৮ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী। তবে মাত্র ৩৭৪ জনকে ফেরত নিতে রাজি মায়ানমার। নাইপিদাওয়ের এই সিদ্ধান্তে ফের ধাক্কা খেল দু’দেশের সম্পর্ক।
[বারুইপুরে এনজিও-র ছায়ায় বাড়ছে রোহিঙ্গাদের আনাগোনা, নজর রাখছে প্রশাসন]
বুধবার মায়ানমারের আধিকারিকরা জানান, তালিকা থেকে মাত্র ৩৭৪ জন রোহিঙ্গার পরিচয় যাচাই করতে পেরেছেন তাঁরা। ফলে বাকিদের প্রত্যাবাসন এখনই সম্ভব নয়। তাঁদের অভিযোগ, রোহিঙ্গাদের সঠিক তথ্য সরবরাহ করছে না বাংলাদেশ। এদিন রোহিঙ্গা ইস্যুতে মায়ানমারের রাজধানী নাইপিদাওয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বসেন সে দেশের পররাষ্ট্র সচিব ইউ মিন্ট খো। তিনি জানান, বাংলাদেশের হস্তান্তর করা তালিকা অসম্পূর্ণ। সঠিক তথ্য দেয়নি ঢাকা। ফেব্রুয়ারি মাসেই তালিকাভুক্ত রোহিঙ্গাদের পরিচয় খতিয়ে দেখা হয়। তবেমাত্র ৩৭৪ জনেরই সঠিক তথ্য পাওয়া গিয়েছে। চুক্তি মাফিক প্রথম দফায় তাঁদের ফিরিয়ে নেওয়া হবে। তবে বাকিদের ক্ষেত্রে অনেকের ক্ষেত্রেই আঙুলের ছাপ ও ছবি যুক্ত করা হয়নি। ফলে তাঁদের পরিচয় নয়ে সুনিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের ফিরিয়ে নেওয়া হবে না।
তবে কবে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু হবে তা নিয়ে স্পষ্ট কিছু বলেননি মিন্ট খো। সাংবাদিকদের প্রশ্ন এড়িয়ে তিনি জানান, সঠিক সময়েই শরণার্থীদের ফেরানোর কাজ শুরু হবে। উল্লেখ্য, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য ২০১৭-র ২৩ নভেম্বর মায়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্মতিপত্র স্বাক্ষরিত হয়। ওই চুক্তির ভিত্তিতে গঠন করা হয় ‘জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ’। গত ১৬ জানুয়ারি ওই গ্রুপের প্রথম বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিভিন্ন বিষয় ঠিক করে ‘ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট’ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তারপরই এবছর ফেব্রুয়ারি মাসে মায়ানমার সফরে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। সেখানেই ৮ হাজার ৩২ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীর তালিকা মায়ানমার সরকারের হাতে তুলে দেন তিনি।
[বেআইনি পার্কিংয়ে সিভিককে ‘ঘুষ’ ১০ টাকা, হাওড়া স্টেশনে জেরবার যাত্রীরা]
এদিকে দেশে ফিরতে চাইলেও নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কায় ভুগছেন রোহিঙ্গারা। তাঁদের অভিযোগ রাখাইনে ফিরে গেলে আবার হামলা চালাবে বার্মিজ সেনা ও মগ দস্যুরা। তাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত দেশে ফিরতে চাইছেন না উদ্বাস্তুদের অনেকেই। ইরিমধ্যে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য মায়ানমারের কাছে আবেদন জানিয়েছে রাষ্ট্রসংঘ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.