সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক:
“এসো গো শারদ লক্ষ্মী, তোমার শুভ্র মেঘের রথে
এসো নির্মল নীল পথে
এসো ধৌত শ্যামল আলো-ঝলমল-বনগিরিপর্বতে
এসো মুকুটে পরিয়া শ্বেত শতদল শীতল-শিশির ঢালা”
শরতের সকালে শিশিরস্নাত কাশফুল বা নীল আকাশের বুকে পুঞ্জীভূত মেঘ। এ সবই যেন দেবী দুর্গার আগমনের বার্তা বহন করে আনে। হিন্দুদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবে ইতিমধ্যে মেতে উঠেছে গোটা বাঙালি। শুধু এরাজ্য কিংবা এদেশে নয়, ‘সাত সমুদ্র তেরো নদী’ পেরিয়ে সুদূর লন্ডনেও অনুষ্ঠিত হতে চলেছে দুর্গাপুজো। একা গঙ্গা নয়, টেমস নদীর ধারেও পূজিত হবেন মা। সৌজন্যে ক্যামডেন, লন্ডন। প্রত্যেক বছরের মত এবারও উৎসবের আনন্দ বার্তা বহন করবে ‘লন্ডন দুর্গাপূজা দশেরা কমিটি’। পুজো অনুষ্ঠিত হবে ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ১ অক্টোবর। ক্যামডেন সেন্টার লন্ডনে। সবাই মেতে উঠবে দেবী দুর্গার আহ্বানে।
[২০০০ গ্রামের সোনার গয়নায় সেজে উঠছেন মরিচকোটার উমা]
দুর্গাপুজোর কথা মনে পড়লেই যে ছবিটা সবার আগে মনে ভেসে ওঠে তা হল ‘ভারী আনন্দের পাঁচটা দিন’। ৫৪ বছর পুরনো এই ঐতিহ্যপূর্ণ ক্যামডেন দুর্গাপুজো ফের একবার প্রবাসীদের মনে সেই ভাবনা জাগাতে প্রস্তুত। পুজো শুরু ২৭শে সেপ্টেম্বর- মহিষাসুরমর্দিনী অনুষ্ঠান দিয়ে। অনুষ্ঠানটি হবে দেড় ঘণ্টার। থাকবে শ্রীশ্রীচণ্ডী বা দুর্গা সপ্তদশী থেকে গৃহীত দেবী চণ্ডীর স্তোত্র বা চণ্ডীপাঠ, বাংলা ভক্তিগীতি, ধ্রুপদী সংগীত এবং পৌরাণিক কাহিনির নাট্যরূপ। অনুষ্ঠানটির উপস্থাপনা করবেন লন্ডন ও কলকাতার প্রখ্যাত শিল্পীবৃন্দ। উপস্থিত থাকবেন বেশ কয়েকজন গায়ক, গায়িকা এবং নৃত্যশিল্পী। লন্ডনে এই অনুষ্ঠানটি এতটাই জনপ্রিয় যে আজও এর মহিমায় বিন্দুমাত্র ভাটা পড়েনি। এরপর থাকবে আগমনী গান। দেবী দুর্গার বন্দনা। অংশগ্রহণে দক্ষিণায়ন যুক্তরাজ্য-শিশু বিভাগ।
[আশ্বিনেই বাঙালির তেরো পার্বণের স্বাদ মালদহের মণ্ডপে]
পুজোর বাকি দিনগুলিতে আয়োজিত হবে বিভিন্ন স্বাদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এবারের প্রধান আকর্ষণ ‘দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ’ যাত্রা পালা অনুষ্ঠিত হবে ৩০শে সেপ্টেম্বর। ২৯শে ও ৩০শে সেপ্টেম্বর আয়জন করা হয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ও বিই কলেজের রি-ইউনিয়ন। এছাড়া ১লা অক্টোবর লোপামুদ্রা মিত্র এবং জয় সরকার থাকবেন অনেক মৌলিক গানের ডালি নিয়ে। তবে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বোধহয় ক্যামডেনের থিম। পশিমবঙ্গ সরকার ‘আমি প্রতিজ্ঞা – আমি কন্যাশ্রী’ এবার ক্যামডেনের দুর্গাপুজোর থিম। বিদেশের মাটিতে বাঙালি অনুষ্ঠানগুলি নিষ্ঠার সঙ্গে পালনের মধ্যে দিয়েই সেই সংস্কৃতির তাৎপর্য নতুন করে আবিষ্কৃত হয়। এর মধ্যে থাকে শিকড় আঁকড়ে ধরার পরিতৃপ্তি আর আছে নতুন প্রজন্মের মধ্যে এই ঐতিহ্য সংক্রমিত করার প্রয়াস। লন্ডন দুর্গাপূজা দশেরা কমিটি সেই জায়গাতেই একটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে।