Advertisement
Advertisement
America

আমেরিকার সঙ্গে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে চিন, নিশানায় ভারতও, প্রকাশ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্য

ছ’টি যুদ্ধ লড়তে প্রস্তুত হচ্ছে চিন!

China ‘preparing for war’ with US, expert warns | Sangbad Pratidin
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:April 7, 2022 10:34 am
  • Updated:April 7, 2022 10:34 am

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মার্কিন আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ জানাতে তৈরি চিন (China)। বিশ্বে ক্ষমতার সমীকরণ বদলে দিতে এবার আমেরিকার সঙ্গে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে কমিউনিস্ট দেশটি। আর এই পরিকল্পনা সফল করতে রাশিয়াকে পাশে চাইছে বেজিং। শুধু তাই নয়, পড়শি দেশগুলির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে পারে দেশটি বলে দাবি করেছেন চিন-আমেরিকা সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ জনাথন ডি টি ওয়ার্ড।

[আরও পড়ুন: মারিওপোলে হাজার হাজার লাশ লুকোচ্ছে রাশিয়া, বিস্ফোরক জেলেনস্কি]

সম্প্রতি, ‘ফক্স বিজনেস’-কে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন জনাথন। সেখানে চিনের অভিসন্ধি নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করেন অনুষ্ঠানের সঞ্চালিকা মারিয়া বার্তিরমো। উত্তরে ‘অ্যাটলাস অর্গানাইজেশনে’র প্রধান বলেন, “যুদ্ধের আবহে ইউক্রেনের কুটনীতিবিদের সঙ্গে চিনা প্রতিনিধিদের ফোনালাপেই স্পষ্ট যে বেজিং দ্বিচারিতা করছে। তারা উভয়পক্ষকেই বোকা বানাচ্ছে। বাণিজ্যিক স্বার্থ রক্ষা করতে ইউরোপের দেশগুলির কাছে নিজের স্বচ্ছ ছবি তুলে ধরার চেষ্টা করছে তারা (চিন)। কিন্তু, আসলে তারা মস্কোকেই সমর্থন দিচ্ছে।” চিনের এই দ্বিচারিতার কারণ হিসেবে জনাথন জানান, দীর্ঘমেয়াদে চিনের কৌশল হচ্ছে রাশিয়ার সঙ্গে জোট গড়ে তোলা। আমেরিকা ও এশিয়ার অন্য দেশগুলির সঙ্গে যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসেবে মস্কোকে পাশে চাইছে বেজিং।

Advertisement

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, ইউক্রেন রুশ হামলার প্রতিবাদ করেনি চিন। রাষ্ট্রসংঘে মস্কোর বিরুদ্ধে আনা প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত থাকে বেজিং। শুধু তাই নয়, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার চাপ কিছুটা লাঘব করতে পুতিন প্রশাসনকে বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে মদত দিচ্ছে চিন বলেও খবর। মাস্টার কার্ড ও ভিসার মতো আর্থিক লেনদেন সংস্থাগুলি রাশিয়ার কাজ বন্ধ করার পর চিনা সিস্টেম ব্যবহার করছে দেশটি। অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা এড়াতে রাশিয়াকে সাহায্য করলে ফল ভুগতে হবে বলে চীনকে কয়েকদিন আগেই হুমকি দিয়েছেন আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান।

Advertisement

এদিকে, চিনের আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে ভারতের উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে বলে মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা। বহুদিন আগেই চিনা অভিসন্ধি স্পষ্ট করে ২০১৩ সালে, ‘অস্ট্রেলিয়ান স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউট’-এর ‘দ্য স্ট্র্যাটেজিস্ট’ পত্রিকায় লিখেছিলেন চিন-বিশেষজ্ঞ ইতিহাসবিদ এবং ‘অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি’-র ভিজিটিং ফেলো জিওফ ওয়েড। চিনা ভাষার সংবাদ সংস্থা ‘ঝংগুও শিনওয়েং শি’-তে প্রকাশিত সেই ছকের উল্লেখ করে জিওফ ওয়েড তাঁর নিবন্ধে (“চায়না’জ সিক্স ওয়ারর্স ইন দ্য নেক্সট ফিফটি ইয়ার্স”) লিখেছিলেন, আগামী ৫০ বছরের মধ্যে চিন ছ’টি যুদ্ধ লড়তে প্রস্তুত হচ্ছে, যা বিশ্বে তাদের কর্তৃত্ব কায়েমের পাশাপাশি ‘হাইপার ন্যাশনালিস্ট’ চরিত্রও প্রতিষ্ঠা করবে।

চিনের সেই ছয় যুদ্ধের প্রথমটি তাইওয়ান দখল। ‘ঝংগুও শিনওয়েং শি’-র ছক অনুযায়ী ২০২০ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে চিন ওই লক্ষ্যপূরণে আগ্রহী। দ্বিতীয়ত, দক্ষিণ-চিন সাগরের যে-দ্বীপগুলোয় নিজেদের কর্তৃত্ব কায়েমের জন্য চিন বদ্ধপরিকর, পরের পাঁচ বছরে, অর্থাৎ ২০৩০-এর মধ্যে তা তারা হাসিল করতে চায়। তৃতীয় যুদ্ধ, অরুণাচল প্রদেশ দখলের লক্ষ্যে। ভারতের এই অঙ্গরাজ্য তাদের চোখে ‘দক্ষিণ তিব্বত’। নিয়মিত ভারতকে তারা তা মনেও করিয়ে দেয়। এই অসমাপ্ত কাজ তারা সারতে চায় ২০৩৫ থেকে ২০৪০ সালের মধ্যে। চতুর্থ লক্ষ্য হল, ২০৪০-’৪৫-এর মধ্যে পূর্ব চিন সাগরে ডিয়াওইউডাও (Dioyudao) ও রিউকিউ (Ryukyu) অর্থাৎ, সেনকাকু দ্বীপপুঞ্জ ‘পুনরুদ্ধার’। পঞ্চম যুদ্ধের লক্ষ্য, ২০৫০-এর মধ্যে বহির্মঙ্গোলিয়া দখল। আর এই সমস্ত লড়াইয়ে রাশিয়ার সঙ্গে জোট বাঁধার পরিকল্পনা রয়েছে চিনের। তাই ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার পাশে দাঁড়িয়ে ভবিষ্যতের ফসল ঘরে তোলার কাজটি সম্পন্ন করছে বেজিং।

[আরও পড়ুন: ঋণের ফাঁদে পা দিয়ে দেউলিয়া শ্রীলঙ্কা-পাকিস্তান, এবার লাতিন আমেরিকার দিকে হাত বাড়াচ্ছে চিন]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ