Advertisement
Advertisement

ভারতের ‘উপহার’ ফিরিয়ে দিক মালদ্বীপ, কড়া হুঁশিয়ারি চিনের

দ্বীপরাষ্ট্রে দিল্লির সেনা পাঠানোর উদ্যোগ ঘিরে সংশয়ে বেজিং৷

 China took a dig on Maldives
Published by: Tanujit Das
  • Posted:December 4, 2018 12:40 pm
  • Updated:December 4, 2018 12:40 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মালদ্বীপ নিয়ে সুর চড়াল চিন। ভারত বিরোধিতার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্রকে দিল সরাসরি হুঁশিয়ারি। চিনা কমিউনিস্ট পার্টির মুখপাত্র গ্লোবাল টাইমসে প্রকাশিত প্রতিবেদনে হুঁশিয়ারির আড়ালে দেওয়া হয়েছে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ পরামর্শও। বলা হয়েছে, “চিন আশা করে, মালদ্বীপ নিশ্চয়ই সুবিবেচকের মতো আচরণ করবে এবং নয়াদিল্লির দেওয়া অর্থহীন ‘উপহার’ প্রত্যাখ্যান করবে। ভারতের কাছ থেকে অর্থহীন উপহার যেন না নেয় মালদ্বীপ। কারণ ভারত ছলে বলে কৌশলে মালদ্বীপে সেনা মোতায়েন করতে চাইছে।”

[উত্তাল প্যারিসে জরুরি অবস্থার ভ্রুকুটি, গণবিক্ষোভ রুখতে তুঙ্গে তৎপরতা]

Advertisement

মালদ্বীপে অতি সম্প্রতি চিনের মদতপুষ্ট পুতুল সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে। জয়ী হয়েছেন নয়া ভারতপন্থী প্রেসিডেন্ট। নতুন প্রেসিডেন্টের শপথ অনুষ্ঠানে রাজধানী মালেতে সাদর অভ্যর্থনা জানানো হয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। চিনের প্রভাব খর্ব হয়েছে মালদ্বীপে। ভারত মহাসাগরের বুকে মালদ্বীপে বিশাল নৌঘাঁটি বানানোর যে স্বপ্ন ছিল চিনের তা আপাতত ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে৷ ফলে পরিস্থিতি সামাল দিতে মরিয়া বেজিং প্রায় সরাসরি হুঁশিয়ারির রাস্তা নিল। এমনটাই মনে করছে কূটনৈতিক মহল। না হলে সরকার পরিচালিত চিনা কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান মুখপত্রে এরকম ভাষায় লেখা হত না। ফলে মালদ্বীপ নিয়ে ভারতের কাছে হেরে যাওয়ায়, চিনা হতাশা ও উদ্বেগ প্রকাশ পেয়েছে ওই প্রতিবেদনেই। মালদ্বীপে ভারত সেনা মোতায়েন করতে চাইছে বলে দাবি করে উদ্বেগও প্রকাশ করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।

Advertisement

কোনও আন্তর্জাতিক ঘটনাকে চিন কী চোখে দেখছে, তা কমিউনিস্ট পার্টি পরিচালিত এই ট্যাবলয়েডের মাধ্যমেই বিশ্বের সামনে তুলে ধরে বেজিং। সেখানেই সংবাদপত্রটি যে ভাবে মালদ্বীপের প্রতি ভারতের আনুকূল্যকে ‘অর্থহীন’ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছে এবং মালদ্বীপকে তা ‘প্রত্যাখ্যান’ করার পরামর্শ দিয়েছে, তাকে মালদ্বীপের প্রতি চিনের সতর্কবার্তা হিসেবেই দেখছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশারদরা। গত, ২৩ সেপ্টেম্বর মালদ্বীপে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়৷ ওই নির্বাচনে জয়লাভ করে মালদ্বীপ ডেমোক্র‌্যাটিক দলের (এমডিপি) প্রার্থী ৫৪ বছরের ইব্রাহিম মহম্মদ সলিহ। প্রথম থেকেই মালদ্বীপের এই রাজনৈতিক পালাবদলের প্রত্যাশায় ছিল ভারত৷ কারণ, সেদেশের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আবদুল্লা ইয়ামিন ছিলেন চিনের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। ইয়ামিনের জমানায় চিনের সঙ্গে সখ্যতা দৃঢ় হয়েছিল মালদ্বীপের। ইয়ামিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এই দ্বীপরাষ্ট্রে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করেছিল বেজিং। সম্প্রতি শ্রীলঙ্কার সঙ্গেও চিনের সম্পর্ক দৃঢ় হয়েছে। এভাবে দক্ষিণের দুই দ্বীপরাষ্ট্রের উপর নিজেদের প্রভাব বাড়িয়ে ভারতের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছিল বেজিং। সলিহর শপথে নিশ্চিতভাবেই সেই পরিস্থিতির বদল ঘটল বলে ওয়াকিবহাল মহলের অনুমান। সলিহর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানেই যার ইঙ্গিতও মিলেছে। সলিহ ঘোষণা করেছেন, তাঁর সরকার ভারতকেই অগ্রাধিকার দেবে। পাশাপাশি চিনা বিনিয়োগ নিয়ে পর্যালোচনা করা হবে বলে জানান হয়েছে।

[‘ইসলামের শত্রুরাই আমার বিরোধিতা করছে’, বিস্ফোরক জাকির নায়েক]

মালদ্বীপের সদ্য প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আবদুল্লা ইয়ামিন ছিলেন প্রবলভাবে চিন ঘনিষ্ঠ এবং কট্টর ভারতবিরোধী। ভোটে হেরে গিয়েও জোর করে প্রেসিডেন্ট পদ আঁকড়ে ধরে রাখতে চেয়েছিলেন। তিনি এতদিন ভারতকে দূরে ঠেলে দিয়েছিলেন। তাঁর আমলে চিনের কাছে থেকে বিপুল ঋণ নিয়েছিল মালদ্বীপ। ইয়ামিনের হস্তক্ষেপে চিনের সঙ্গে অবাধ বাণিজ্যের চুক্তি করেছিল, নানা প্রকল্প থেকে ভারতীয় সংস্থাগুলিকে সরিয়ে চিনা বিনিয়োগের পথ প্রশস্ত করেছিল, চিনের ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ (ওবর) পরিকল্পনাতেও সামিল হয়ে গিয়েছিল মালদ্বীপ। কিন্তু জনতার ক্ষোভ উসকে দিয়ে ইয়ামিন ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারলেন না। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের গ্রেপ্তার করে, জরুরি অবস্থা জারি করে মালদ্বীপে সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি করেছিলেন ইয়ামিন। তাতে চিনের মদত ছিল। কিন্তু আন্তর্জাতিক মহলের প্রবল চাপে ইয়ামিনকে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে যেতেই হয় এবং তাতে শোচনীয় পরাজয় হয় চিনপন্থী প্রেসিডেন্টের। ভোটে জিতেই ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছিলেন নয়া প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মহম্মদ সলিহ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ