সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অর্থনীতিতে কোপ পড়ল করোনার আঁতুড়ঘরে। গত ২৮ বছরে যা হয়নি, করোনার কারণে তা-ও দেখতে হল বেজিংকে। বাকি বিশ্বের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চিনা অর্থনীতিও এবার মুখ থুবড়ে পড়ল। সংকুচিত হল চিনের জিডিপির হার।
করোনার উৎপত্তি চিনের ল্যাবরেটরিতে কি না, তার উত্তর এখনও মেলেনি। তবে গত নভেম্বরে মাথাচাড়া দেওয়া ইস্তক চিন থেকেই যে সারা বিশ্বে এই মারণ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে তাতে কোনও সন্দেহ নেই। তবে ১৯৯২ সালের পর এই প্রথম, বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে মুখ থুবড়ে পড়ল চিনের বাজার। চিনের অর্থবর্ষ জানুয়ারির প্রথম দিন থেকে শুরু হয়। সেই হিসাবে মার্চে শেষ হয়েছে তাদের প্রথম ত্রৈমাসিক। গত তিন মাসে করোনার কারণে চিনের একটা বড় অংশ ছিল সম্পূর্ণ গৃহবন্দি। ফলে বছরের প্রথম তিন মাসে চিনে একই সঙ্গে যেমন স্তব্ধ হয়েছে উন্নয়ন, তেমনই ক্রমেই মাথাচাড়া দিয়েছে কর্মহীন হওয়ার আশঙ্কা। প্রথম তিনমাসে কার্যত কিছুই উৎপাদন হয়নি। কেনাবেচা থমকে যাওয়ায় থেমেছে অর্থনীতির চাকাও। যার প্রভাব পড়েছে অর্থনীতিতে। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি ১৯৯২ সালের পর এই প্রথম সংকোচনের মুখে।
তবে বিশেষজ্ঞরা এটাও বলেছেন যে, চিনের অর্থনীতির ক্ষেত্রে যে তথ্য প্রকাশ্যে আসে তার সবটাই বিশ্বাসযোগ্য না-ও হতে পারে। কারণ বহু সময়েই তাদের সামগ্রিক নীতির কারণে চিন অনেক তথ্যই কমিয়ে বলে থাকে। তবে বিশ্বব্যাংকের তরফে জানানো হয়েছে, চলতি বছরে চিনের বৃদ্ধির হার দুই শতাংশে নেমে আসতে পারে। গত বছর যা ছয় শতাংশ ছিল। এমনকী, তা নেমে ০.১ শতাংশেও চলে আসতে পারে বলেই জানিয়েছে বিশ্বব্যাঙ্ক। তবে প্রথম ত্রৈমাসিকের দৈন্য কাটিয়ে সামান্য হলেও মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে চিনের নানা উৎপাদন ক্ষেত্র। চিনের ‘দ্য আমেরিকান চেম্বার অফ কমার্স’ জানিয়েছে, এপ্রিলের শেষ থেকে তাদের অধীনস্থ সংস্থাগুলি প্রায় পুরোদমে কাজ শুরু করবে বলেই মনে করছে তারা।
এদিকে অন্য একটি রিপোর্ট জানাচ্ছে, শিল্পোৎপাদন ক্ষেত্রে চিনের বৃদ্ধির হার গত
বছরের মার্চের তুলনায় পড়েছে ১.১ শতাংশ, যা মোটেই আশা করা যায়নি। খুচরো পণ্য বিক্রয়ের ক্ষেত্রে এই পতন ১৫.৮ শতাংশ। ব্যাংকে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে পতন হয়েছে ১৬.১ শতাংশ। সব মিলিয়ে চাপের মুখে শি জিনপিংয়ের দেশ। আবার আমেরিকার সঙ্গে তাদের নিত্য ঝামেলা লেগেই রয়েছে। গত এক বছর ধরেই রফতানি নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে দ্বন্দ্ব চলছে চিনের। মাঝে করোনা ভাইরাস নিয়ে সংকট। চলতি বছরে চিনে অন্তত তিন কোটি মানুষের কর্মহীন হওয়ার আশঙ্কা। ২০০৮-’০৯-এর আর্থিক মন্দার সময়েও তা ছিল দু’কোটির কাছাকাছি। করোনা সংকটে তা ছাপিয়ে যাবে বলে অনুমান। সাংবাদ সংস্থা রয়টার্সের রিপোর্ট অবশ্য আরও খারাপ তথ্য শোনাচ্ছে। করোনার কারণে চিনের আর্থিক বৃদ্ধির হার অর্ধশতাব্দীর মধ্যে তলানিতে এসে ঠেকবে বলে মনে করছে তারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.