সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জন্মের পর সবে একটা দিন পৃথিবীর জলহাওয়ায় কাটিয়েছে। তাতেই তার কচি শরীরে ঢুকে পড়েছে নোভেল করোনা ভাইরাস। তাকে হাসপাতালে ভরতি করিয়ে সমস্ত পরীক্ষা করা হয়েছে। আপাতত আইসোলেশন ওয়ার্ডে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। চিনের ইউহানে সদ্যোজাতর করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে চিকিৎসক মহলে। তাঁদের অনুমান, করোনা আক্রান্ত মায়ের গর্ভ থেকে শিশুর শরীরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। তাহলে কি করোনা ভাইরাস শুধুমাত্র স্পর্শে অথবা বায়ুবাহিত হয়েই নয়, ছড়িয়ে পড়ছে অন্য কোনওভাবেও।
করোনার আঁতুরঘর ইউহানে দিন চারেক আগে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন এক তরুণী। গর্ভাবস্থাতেই তাঁর শরীরে ধরা পড়েছিল নোভেল করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব। সন্তানের জন্মের তিরিশ ঘণ্টা পর সদ্যোজাতও আক্রান্ত হয়েছে করোনায়। এরপর চিকিৎসকরা ভাবতে বসেছেন, মাতৃজঠরেই কি তার সংক্রমণ হয়েছিল, নাকি জন্মের পর তা হয়েছে। ইউহান শিশু হাসপাতালের প্রধান চিকিৎসক জেং লিংকং জানাচ্ছেন, “এই ঘটনা আমাদের অন্যদিকে নিয়ে গেল। এখন মায়ের থেকে গর্ভস্থ সন্তানের শরীরও সংক্রমণ একটা রাস্তা বলে মনে করা হয়। তবে এমনটাও হতে পারে যে জন্মের পরই এই চত্বরে ছড়িয়ে থাকা করোনা ভাইরাস শিশুর শরীরে ঢুকে গিয়েছে।” কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জনস্বাস্থ্য বিভাগের চিকিৎসক স্টিফেন মোর্সের কথায়, “মায়ের গর্ভ থেকে বাইরে আসার পর কচি শরীরের কোনও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাই গড়ে না ওঠায় চটজলদি ভাইরাস সংক্রমিত হতে পারে।”
[আরও পড়ুন: ধর্ষকের হাত থেকে তরুণীকে বাঁচাল করোনা ভাইরাস! কীভাবে জানেন?]
চিনে এই মুহূর্তে করোনা ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ২৮হাজার ছাড়িয়েছে। তার মধ্যে অবশ্য শিশুদের সংখ্যা হাতে গোনা। তারই মধ্যে ৩০ ঘণ্টা বয়সের শিশুর করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা নতুন করে ভাবিয়ে তুলছে। এর আগে সিঙ্গাপুরে ৬ মাসের এবং অস্ট্রেলিয়ায় ৮ বছরের দুই শিশুর শরীরে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব ধরা পড়েছে। মা, বাবার শরীর থেকে শিশুদের শরীরে এই সংক্রমণ কীভাবে রোখা যাবে, তা নিয়ে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। তবে এধরনের RNA ভাইরাস শিশুদের উপর সাধারণত খুব বেশি প্রভাব ফেলে না বলেই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, এর আগে চিনে সার্স এবং মার্স ভাইরাসের হামলায় শিশুদের তেমন ক্ষতি হয়নি বলেই জানা গিয়েছে।