সুকুমার সরকার, ঢাকা: দুর্নীতি মামলায় ফের উত্তপ্ত বাংলাদেশের রাজনীতি। এবার বেনজির শাস্তির মুখে পড়তে পারেন বিএনপি দলনেত্রী তথা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও আর্থিক কেলেঙ্কারির মামলা চলছে আদালতে। সেই মামলার রায় এবার আসন্ন। ফলে ক্রমশই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে পরিস্থিতি।
[প্রাণ বাঁচাতে এসে হাসপাতালেই পুড়ে মৃত্যু ৪১ রোগীর]
উল্লেখ্য, ২০০১-২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি-জামাত জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুই কোটি ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি ‘জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট’ দুর্নীতি নামের ওই মামলায় রায় ঘোষণা করবে ঢাকার একটি আদালত। ওই মামলায় মূল অভিযুক্ত বিএনপি সুপ্রিমো। ওই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে তাঁর। সেক্ষেত্রে তিনি আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। ওই রায়কে কেন্দ্র করে নাশকতার আশঙ্কা করছে আওয়ামি লিগ। পাশাপাশি ওই সাজানো মামলায় জিয়াকে ফাঁসানো হয়েছে বলে অভিযোগ জানিয়েছে বিএনপি। বিএনপি-র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, রায় লিখে রেখেছে আওয়ামি লিগ। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বক্তব্য, তাদের চেয়ারপারসনের মামলায় ‘নেতিবাচক’ কোনও রায় হলে তার পরিণতি ‘ভয়াবহ’ হবে।
অন্যদিকে শুক্রবার ঢাকেশ্বরী মন্দিরে এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের বলেন, রায় ঘিরে কোনও ধরনের বিশৃঙ্খলা করা যাবে না। আওয়ামি লিগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাসান মাহমুদ বলেছেন, ‘খালেদা জিয়ার মামলার রায় নিয়ে দেশে আবার কোনও জ্বালাও-পোড়াও হলে তাতে বিএনপিই পুড়ে ছারখার হয়ে যাবে।’ হুঁশিয়ারি এসেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের দিক থেকেও। তিনি বলেছেন, রায় ঘিরে কেউ বিশৃঙ্খলা বা ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের চেষ্টা করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
[‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের পাশেই ভারত’]
রায় ঘোষণার দিন অবাঞ্চিত ঘটনায় রুখতে ঢাকা-সহ বিভাগীয় শহর, জেলা, থানা এমনকি ওয়ার্ডেও সতর্ক দৃষ্টি রাখবেন আওয়ামি নেতারা। শুধু তাই নয়, কেউ আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য করার চেষ্টা করলে তা প্রতিহত করবেন নেতাকর্মীরা। ইতিমধ্যে ফোনে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দলীয় কর্মীদের। আওয়ামি লিগ সূত্রে খবর, রায়ের দিন সকাল থেকেই রাজধানী ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোয় অবস্থান নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে দলের নেতাকর্মীদের। এছাড়া রাজপথে থাকবে বিভিন্ন খালেদা বিরোধী সংগঠন এবং বিএনপির হিংস্র আন্দোলনে নিহতদের পরিবার। পাশাপাশি ৮ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর হাইকোর্ট এলাকা, প্রেস ক্লাব, শাহবাগসহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোয় মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করা হতে পারে।