সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কাশ্মীর ইস্যুতে কার্যত একঘরে পাকিস্তান৷ পাশে দাঁড়ায়নি ‘বন্ধু’ চিন থেকে শুরু করে আমেরিকা৷ এমনকি মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছে ইসলামিক দেশগুলিও৷ সব মিলিয়ে কোথায়ও হালে পানি পাচ্ছেন না ইমরান খান৷ তাই ফের যুদ্ধের জিগির তুলে বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করলেন পাক প্রধানমন্ত্রী৷ মুজফ্ফরাবাদে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের আইনসভায় দাঁড়িয়ে ফের ভারতকে যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি৷ ইমরানের অভিযোগ, পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারতীয়৷
[আরও পড়ুন: কাশ্মীর ইস্যুতে মার্কিন সমর্থন আদায়ে নয়া ষড়যন্ত্র ইমরান প্রশাসনের]
বুধবার পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মুজফ্ফরাবাদে কাশ্মীরিদের উদ্দেশে ইমরান বলেন, ‘ভারতীয় সেনা আমাদের কাশ্মীরে হামলার পরিকল্পনা করছে৷ আমদের সেনাবাহিনীর কাছে এর জোরাল প্রমাণও রয়েছে৷ ওরা কিছু একটা করবেই৷ তবে আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই৷ আমাদের সেনা সমস্ত আগ্রাসনের জবাব দিতে তৈরি৷’ উল্লেখ্য, কাশ্মীর ইস্যুতে পূর্ববর্তী অবস্থান থেকে সরে গিয়ে এবার সেনা অভিযানের ইঙ্গিতও দিয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী৷ নিজের দোষে বিপর্যয়ের দায় অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে ইমরান আরও বলেন, ‘যুদ্ধ হলে তার দায় বর্তাবে আন্তর্জাতিক মঞ্চের উপর৷ এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করুক রাষ্ট্রসংঘ৷ বিশ্বে শান্তি বজায় রাখাই তাদের কাজ৷ কাশ্মীর ইস্যুতে মুসলিম দেশগুলির নেতৃত্ব আমাদের পাশে নেই৷ কিন্তু এবার আমরা কী করব তা দেখতে মুখিয়ে রয়েছে দুনিয়ার ১.৫ বিলিয়ন মুসলমান৷’
এদিকে, পাকিস্তানের রণংদেহী মনোভাবকে মোটেও পাত্তা দিচ্ছে না ভারত৷ সেনাপ্রধান বিপিন রওয়াত সাফ জানিয়েছেন, ভারতীয় সেনা তৈরি৷ পাকিস্তান কোনও ধরনের হামলার চেষ্টা করলে তার যোগ্য জবাব দেওয়া হবে৷ তবে নিয়ন্তরণরেখা বরাবর নিরাপত্তায় কোনও ফাঁকফোকর রাখতে চাইছে না ভারত৷ তাই স্বাধীনতা দিবসের দু’দিন আগে থেকেই সীমান্ত এলাকায় যুদ্ধবিমান বাড়াতে শুরু করে দেয় নয়াদিল্লি। পাশাপাশি সীমান্তে নজরদারির ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে সেনাবাহিনী ও বিএসএফকে।
বায়ুসেনা সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাতেই লাদাখ এবং জম্মু-কাশ্মীর সীমান্তের উদ্দেশে রওনা দেয় ৫টি সুখোই-৩০এমকেআই ও ৪টি মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান। শ্রীনগর এয়ারবেসে আরও একস্কোয়াড্রন যুদ্ধবিমান তৈরি রাখা হয়েছে। বুধবার আকাশে চক্কর কেটেছে ভারতীয় বায়ুসেনার জে-৩০ সুপার হারকিউলিস বিমান। তৈরি রাখা হচ্ছে দেশের অন্যান্য বায়ুসেনা ঘাঁটিকেও। মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রে অবস্থিত বায়ুসেনার ঘাঁটিতে মিরাজ-২০০০ যুদ্ধবিমানের স্কোয়াড্রনকে যে কোনও পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকতে বলা হয়েছে। নর্দার্ন কমান্ডের অন্তর্গত বায়ুসেনার সব ঘাঁটিকে ভূমি থেকে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। এজন্য নির্দেশ জারি হয়েছে দিল্লিতে বায়ুসেনার সদর দপ্তর থেকে। আজ দেশজুড়ে পালিত হওয়া স্বাধীনতা দিবসে সীমান্তে মাছি গলারও রাস্তা কার্যত বন্ধ করে দিয়েছে ভারত৷
[আরও পড়ুন: ‘কাশ্মীর আমাদের ছিল না, হবেও না’, সাফ কথা পাকিস্তানি ইমামের]