সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জল, স্থল, অন্তরীক্ষে – ত্রিভুবনচারী নারী, আমাদের এই প্রতিবেদনের নায়িকা। স্থলে তো বটেই, জলে এবং অন্তরীক্ষেও সবচেয়ে বেশি সময় কাটানোর রেকর্ড গড়েছেন মার্কিন বিজ্ঞানী ক্যাথি সুলিভান। গত সপ্তাহেই সমুদ্রের তলদেশে গভীরতম বিন্দুটি ছুঁয়ে ফের ইতিহাসে নাম তুললেন মার্কিন বিজ্ঞানী।
কে বলবে দেখে বয়স ৬৮ বছর? শারীরিক সক্ষমতা এবং কর্মোদ্যমে এখনও পাল্লা দিতে পারেন যে কোনও তরুণ, তরুণীকে। এই তো গত সপ্তাহে প্রশান্ত মহাসাগরের তলদেশে পাড়ি দিয়ে প্রায় ১১ কিলোমিটার গভীরে পৌঁছে গিয়েছেন। এই প্রথম এই বয়সের কোনও মহিলা জলের এতটা গভীরে গেলেন। আর আবারও খবরের শিরোনামে উঠে এলেন ক্যাথি সুলেভান। আর এমন একটা কীর্তি ঘটিয়ে তিনি ভাগ করে নিলেন নিজের অভিজ্ঞতার কথা। বললেন, ”আর পাঁচটা বাচ্চার মতো আমার শৈশব কাটেনি। বরাবর অ্যাডভেঞ্চার টানত আমায়। অভিভাবকরা মুক্ত চিন্তাধারাকে সমর্থন করতেন। কখনও মেয়ে বলে কোনও বিরূপ আচরণ পেতে হয়নি। তাই হয়ত আজও এত ভালভাবে কাজ করতে পারি। গোটা পৃথিবীকে চেনার যে স্বপ্ন দেখেছি বরাবর, সেই স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা করব শেষদিন পর্যন্ত।”
[আরও পড়ুন: গত দু’মাসে শনিবার করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সর্বোচ্চ, সিঁদুরে মেঘ দেখছে চিন]
সালটা ১৯৫১। নিউ জার্সিতে ইঞ্জিনিয়ার বাবার ঘর আলো করে এসেছিলেন ক্যাথি। বাবাকে দেখে বিজ্ঞান সম্পর্কে আগ্রহ। মেয়ে বলে বাড়ির কেউ কোনও কাজে বাধা দেননি। তাই প্রাণভরে ক্যাথি মিটিয়ে নিয়েছেন সমস্ত আগ্রহ। পরে ক্যাথি বলেছেন, ”ওঁরাই আমার মধ্যে কৌতূহল ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন।” ১৯৮৪ সাল। তখনও মহাকাশে মহিলাদের পাড়ি অনেক দূরের ব্যাপার ছিল। কিন্তু ক্যাথি সুলিভানের রাস্তা বরাবরই প্রশস্ত। সেবছরই তিনি প্রথম মার্কিন মহাকাশচারী হিসেবে নিজের নাম তুলেছিলেন ইতিহাসে।

প্রতিনিয়ত ক্যাথিকে টানত পৃথিবীর মানচিত্র, পৃথিবীর বাইরের মহাশূন্যও। তখনই ভেবে নিয়েছিলেন, সর্বত্রগামী হবেন। সেই উৎসাহ থেকে মহাকাশ বিজ্ঞানী হওয়া। শুধু মহাশূন্যে পাড়ি দিয়ে অনেকটা সময়ে কাটিয়েছেন ক্যাথি, এমনটা নয়। যেখানেই কাজ করেছেন, দক্ষতার সঙ্গেই সব সামলেছেন। তাঁর কথায়, ”আসলে আমরা স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে এগিয়েছি, তাই সাফল্য এসেছে।” বছর আটষট্টির ক্যাথি আজও তাই নিজে বারবার খবর হয়ে ওঠেন, হয়ে ওঠেন শিরোনাম।