সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একাকিত্ব কখনই ভাল নয়। আপনি একা হতেই পারেন, কিন্তু একলা হওয়াটা কাজের কথা নয়।
মনস্তত্ত্ব এবং চিকিৎসাবিজ্ঞানও বলছে কিন্তু সেই কথাই! একটা সময়ের পরে সঙ্গে কারও থাকা দরকার। শরীরে কারও হাতের ছোঁয়া দরকার। সামান্য একটা আলিঙ্গনেই যে ধুয়ে-মুছে যায় দীর্ঘকালের অবসাদ!
এই ব্যাপারটাই বোধহয় নতুন এই ব্যবসার চাবিকাঠি। যেটাকে পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে ‘কাডলিং’। মানে জড়িয়ে ধরা এবং স্রেফ জড়িয়ে ধরাই! তার বেশি আর কিছুই নয়।
পয়সা ফেলে এই জড়িয়ে ধরার সঙ্গী/সঙ্গিনী নিয়েই এখন মাতছে নিউ ইয়র্ক শহর। যাঁরা জড়িয়ে ধরছেন, তাঁদের বলা হচ্ছে ‘কাডলার’।
কাডলিং-এর জনপ্রিয়তা যে বাড়ছে, তা পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে। কাডলিস্ট.কম-এর বক্তব্য, তাঁদের কাছে সপ্তাহে ২০০-রও বেশি অ্যাপয়েন্টমেন্টের আর্জি আসছে।
সব মিলিয়ে খদ্দেররা যেমন খুশি, তেমনই কাডলাররাও!
সেই কথাই শোনা গেল বছর একচল্লিশের সাসকিয়া ফ্রেডারিখের মুখে। তাঁর স্বামী অফিসের কাজে বছরের বেশির ভাগ সময়টাই কাটান বাইরে বাইরে। তাই নিঃসঙ্গতা দূর করতে সাসকিয়ার ভরসা এখন এই পেশাদার কাডলাররা!
সাসকিয়া জানিয়েছেন, তিনি মাসে অন্তত বারদুয়েক কাডলার ভাড়া করে থাকেন। ”দেখুন, ব্যাপারটা স্রেফ জড়িয়ে ধরে ঘুমোনো ছাড়া তো আর কিছুই নয়! কাজেই এখানে আমার স্বামীর খারাপ লাগা বা নিজেকে প্রতারিত মনে করার কোনও কারণই নেই। এমনকী, কাডলার যখন বাড়িতে আসেন, আমি স্বামীকে জানিয়েও দিই”, খোলাখুলি স্বীকার করলেন তিনি!
সাসকিয়া একা নন। তাঁর মতো অনেকেই চাইছেন এই পেশাদারি সান্নিধ্য! কাজেই নিউ ইয়র্কেও বাড়ছে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে কাডলারের সংখ্যা। রীতিমতো রেজিস্ট্রেশন করিয়ে, কোনও সংস্থার অধীনে কাজ করছেন তাঁরা।
কিন্তু, প্রশ্ন হল, কোনও সময়েই কি এই জড়িয়ে ধরায় যৌনতা এসে বিব্রত করে তোলে না?
”একজন মানুষ আরেকজনকে নিবিড় করে জড়িয়ে ধরলে সেটা হতেই পারে! হয় যে না, তাও নয়। কিন্তু, এ সব ক্ষেত্রে আমরা যত দূর সম্ভব সংবেদনশীল হয়ে ব্যাপারটা মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করি”, জবানবন্দী পেশাদার কাডলার ইয়ানের!
আর খরচ? সেটাও খুব বেশি নয়। শুরু হয় ঘণ্টা পিছু ৫০ ইউরো থেকে। সংস্থা এবং ব্যক্তি অনুযায়ী খরচ বাড়ে।
নিউ ইয়র্ক কিন্তু বলছে, খরচ যা-ই হোক, একাকিত্ব কাটানোর জন্য সেটা বহন করা যেতেই পারে!