Advertisement
Advertisement
Mamata Banerjee

বার্সেলোনায় প্রবাসী ভারতীয় সম্মেলনে দেশের নেত্রী মমতা

বিভিন্নতার মাঝে একতার বার্তা দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।

Mamata Banerjee interacts with NRIs of Barcelona । Sangbad Pratidin
Published by: Sayani Sen
  • Posted:September 18, 2023 9:00 am
  • Updated:September 18, 2023 9:20 am

কুণাল ঘোষ, মুখ্যমন্ত্রীর সফরসঙ্গী: প্রবাসী ভারতীয়দের সম্মেলনে প্রকৃত অর্থেই দেশের নেত্রীর ভূমিকায় দেখা গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শুরুতেই গানের লিড দেওয়া মহিলা মমতাকে স্বাগত জানাতে গিয়ে ‘প্রধানমন্ত্রী’ বলে সম্বোধন করেছিলেন। গোটা হল হাততালিতে ফেটে পড়েছিল। পরক্ষণেই তিনি ভুল শুধরে নেন যদিও। মমতা একদম শেষে বলতে উঠে ভারতের ঐক্য এবং বৈচিত্রের মধ্যে মিলনের পরম্পরা তুলে ধরলেন। তাঁর ভাষণে উঠে এল প্রায় প্রত্যেক রাজ্যের সংস্কৃতির ঐতিহ্য। তবে রাজনৈতিক মেরুকরণজনিত কথার ধারে কাছেও তিনি ঘেষেননি। আর এই ভূমিকাই বুঝিয়ে দিয়েছে, তিনি বাংলার শুধু প্রতিভূ নন, বরং দেশের নেত্রী। যিনি সব প্রদেশের মানুষকেই একটা সুতোয় গেঁথে দিলেন।

Mamata

Advertisement

‘ইন্ডিয়া’র প্রতিনিধি বা দূত হয়ে তুলে আনলেন ভারতীয়ত্ব। তিনি শোনালেন, আমার একটাই মতবাদ, মানবতাবাদ। আর ভিন্ন সংস্কৃতি থাকলেও সবাই একসঙ্গে কাজ করলেই দেশের উন্নতি সম্ভব। এটাই মমতার ইউএসপি। একসূত্রে বাঁধিয়াছি সহস্রটি মন। ছুঁয়ে গেল প্রবাসীদের মন। এভাবে তো কেউ বলেনি। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে অনুষ্ঠানটি আয়োজন করেন প্রবাসী ভারতীয়রা। বার্সেলোনার প্রবাসীরা এসেছিলেন। মমতা উত্তরের ভাষাও যেমন বললেন আবার তামিল, মালয়ালম ভাষাতেও সম্বোধন করলেন। এক সর্দারজিকে দেখেই যেমন তিনি ‘সৎ সিরি অকাল’ বলে সম্বোধন করেছেন, তেমনই গুজরাটিতে ‘কেমছ’ উচ্চারণ করেন। বাংলার ক্ষেত্রেও বিভিন্ন এলাকার স্থানীয় ভাষা বুঝিয়েছেন।

Advertisement

Anchor in Barcelona calls Mamata Banerjee as PM

[আরও পড়ুন: ED আধিকারিক সেজে খাস কলকাতায় লুঠপাট, পুলিশের জালে সঙ্গিনী-সহ যুবক]

বলেছেন, দার্জিলিংয়ের জন্য নেপালি ভাষাও। এভাবে উঠে এসেছে বিভিন্নতার মাঝে একতার বার্তা। যেটা মন ছুঁয়ে গেল প্রবাসীদের। পারস্পরিক আলোচনা বা ইন্টারাকশন এর সময় এক মহিলা সেই প্রসঙ্গ তুললেন। আর একটা বিষয় উল্লেখযোগ্য, স্পেনে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত দীনেশ পট্টনায়কের বক্তব্য। দীনেশ বারবার ‘দিদি’ উচ্চারণে বোঝালেন, সারা দেশের প্রেক্ষিতে এখন মমতার গুরুত্ব কতটা। ভারতীয় রাষ্ট্রদূত জানান, পাঞ্জাবি, সিন্ধ্রি, বাঙালি, তামিল সব ধরনের লোক রয়েছেন এখানে। উল্লেখ করলেন, দিদি বহুমুখী প্রতিভার, উনি শুধু রাজনীতিক নন। তিনি আসবেন শুনেই তিন দিনে একশো মানুষ রেজিস্ট্রেশন করতে চেয়েছেন।

এই সব সম্প্রদায়ের মানুষকে দেখে মমতাও বলেন, ‘‘এটাই ভারতীয় সংস্কৃতি। বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক‌্য। বাংলার কারও সঙ্গে দেখা হলে তো খুশি হই। এটা মাতৃভাষা। কিন্তু সবাইকে সম্মান দিই। ছুটি দেওয়া হয় ছট পুজোতেও। মারাঠি ভাইবোনের উদ্দেশে বলব, গণপতি বাপ্পা মোরিয়া। এবার ইউনেস্কো বাংলাকে ‘ডেস্টিনেশন ট্যুরিজম’-এর জন‌্য ঘোষণা করেছে। সাংস্কৃতিক ঐতিহ‌্য বিরাট।’’ ‘ইন্ডিয়া’ জোটের বৈঠকে মুম্বই যাওয়ার কথাও উঠে আসে তাঁর ভাষণে। সেই প্রসঙ্গ উঠলেও কিন্তু বোঝালেন, সেখানে সব প্রদেশের নেতারা আসেন। মতবিরোধ ভুলে সবাই দেশের জন্য একসুরে বাঁধা। দেশ ও দেশের সংস্কৃতি আসলে এই গেঁথে দেওয়ার কাজ করে। আসল কাজ, সবাইকে নিয়ে দেশের উন্নয়ন। এসেছে বাংলার উন্নয়ন প্রসঙ্গ।

 

বলেন, ‘‘৩৪ বছরের শাসনে যা দেখেছিলেন, তার থেকে অনেক বদলে গেছে বাংলা। দিঘার সৈকতের কাছে বিশাল জগন্নাথ মন্দির হচ্ছে। পুরীতে প্রচুর বাঙালি যান। আমাদের কৃষক, হস্তশিল্পী সেরা। আমরা শুধু উন্নতি চাই, আর কিছু না। সংহতি, প্রত্যেকের মধ্যে ভালোবাসা চাই। সবাই একত্রিত হলেই সব কিছু সম্ভব।’’ বাংলার সংস্কৃতি, নোবেলজয়ীদের কথাও বললেন। অনুষ্ঠানে ছিলেন প্রচুর মহিলাও। তাই নারী উন্নয়ন প্রশ্নে বলেন, লোকসভায় আমার দলের ৩৫ শতাংশই মহিলা। পকেট মানি হিসাবে ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ দেওয়া হয়। ‘কন্যাশ্রী’, ‘রুপশ্রী’ দেওয়া হয়। উচ্চশিক্ষার জন‌্য স্মার্ট কার্ড আছে। দুই লক্ষ হস্তশিল্পী আছে। দুই লক্ষ লোকপ্রসার শিল্পীকে কাজে লাগানো হয়। এনআরআই বন্ধুদের জন‌্য ‘আপন বাংলা’ অ‌্যাপ রয়েছে। বিনিয়োগ করতে চাইলে বা সমস‌্যায় পড়লে ক্লিক করুন। পরিযায়ী শ্রমিকদের জন‌্যও অ‌্যাপ রয়েছে। এই সব কর্মকাণ্ড ও বস্তুত ওই এনআরআই দের মন ছুঁয়ে যায়। ওরাও আপন করে নিলেন মমতাকে, যিনি দেশেরও নেত্রী।

[আরও পড়ুন: পথের কাঁটা স্বামী! প্রেমিকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে শিলিগুড়িতে যুবককে ‘খুন’ স্ত্রীর]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ