Advertisement
Advertisement
হংকং

চিনপন্থী প্রশাসক ক্যারি লামের পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল হংকং

জেল থেকে বেরিয়ে আন্দোলনে যোগ দিলেন জোসুয়া ওং।

Massive protest tearing Hong Kong apart, city crippled
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:June 18, 2019 11:06 am
  • Updated:June 18, 2019 11:06 am

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চাপে পড়ে প্রত্যর্পণ বিল স্থগিত রাখার কথা ঘোষণা করেছিলেন হংকং-এর প্রশাসনিক প্রধান ক্যারি লাম। কিন্তু তাতেও শান্তি ফিরল না। এবার তাঁর পদত্যাগের দাবিতে ফের পথে নামলেন হংকংয়ের সাধারণ মানুষ। তীব্র গরম উপেক্ষা করে লক্ষ লক্ষ প্রতিবাদী পার্লামেন্ট অভিযানে নামেন।

[আরও পড়ুন: প্রতিশ্রুতিই সার, নোতর দামকে এক পয়সাও দিলেন না ধনকুবেররা]

Advertisement

এর মধ্যেই সোমবার জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন শহরের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক জোসুয়া ওং। জেল থেকে বেরিয়েই এই ঐতিহাসিক আন্দোলনে যোগ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। এদিকে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা শহরের রাজপথ অবরুদ্ধ রাখার পর আন্দোলনকারীরা পার্কে সরে গিয়েছেন। যাতে পুলিশের সঙ্গে সম্মুখ সমর আপাতত এড়ানো যায়।

Advertisement

এক সপ্তাহেরও বেশি সময় থেকে স্তব্ধ হংকং-এর জনজীবন। যার সূত্রপাত একটি বিতর্কিত প্রত্যর্পণ বিল। যাতে বলা হয়েছিল, অপরাধীদের বিচারে প্রয়োজনে দেশের বাইরে এমনকী, চিনের মূল ভূখণ্ডেও পাঠানো হতে পারে। এই বিলের মাধ্যমে চিনের একান্ত অনুগত ক্যারি বেজিংয়ের হাতে আরও কর্তৃত্ব তুলে দেওয়ার বন্দোবস্ত করছেন বলে অভিযোগ ওঠে। বিল প্রত্যাহারের দাবিতে গত কয়েক দিনে লক্ষ লক্ষ মানুষ বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন। বিক্ষোভকারীদের হটাতে লাঠি, কাঁদানে গ্যাস, জল কামান এমনকী, রবার বুলেটও ব্যবহার করেছে হংকং পুলিশ। দফায় দফায় সংঘর্ষে আহত হয়েছেন ৮০ জনেরও বেশি। প্রবল জনরোষে শেষমেশ কাল বিলটি স্থগিত রাখার কথা ঘোষণা করেন ক্যারি। কিন্তু হংকংবাসীর দাবি, স্থগিত নয়, পুরোপুরি প্রত্যাহার করতে হবে এই বিল। সেই সঙ্গে ইস্তফা দিতে হবে প্রশাসনিক নেত্রীকে।

বিক্ষোভকারীদের নেতৃত্ব জানিয়েছে, রবিবার তীব্র গরম উপেক্ষা করে প্রতিবাদে শামিল হয়েছিল প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ। শহরের প্রশাসকদের বিরুদ্ধে এমন ক্ষোভ নজিরবিহীন। এবার তাতে যোগ দেবেন জোসুয়া। যিনি ২০১৪-র গণতন্ত্রকামী ‘আমব্রেলা মুভমেন্ট’-এর মুখ বলে পরিচিত। ওই আন্দোলনের জেরে এতদিন তিনি জেলে ছিলেন। সোমবার মুক্তি পেয়েই ক্যারির ইস্তফার দাবিতে সরব হয়েছেন তিনি। জোসুয়ার দাবি, “উনি এই পদের যোগ্য নন। নৈতিক দায়িত্ব স্বীকার করে ইস্তফা দিন। এই দানবীয় প্রত্যর্পণ আইনের বিরুদ্ধে আমিও লড়ব।” এই প্রতিবাদে প্রভাবশালী শিল্প সংগঠন থেকে শুরু করে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান একজোট হয়েছে। যা হংকং-এর ক্ষেত্রে অভাবনীয়। কারণ, এই শহরের স্বাধীনতা এবং সংস্কৃতি চিন পরোক্ষে খর্ব করতে চাইছে বলে আশঙ্কা দানা বেঁধেছে। ‘আমব্রেলা মুভমেন্ট’ দমন, বিরোধী নেতাদের কারাদণ্ড, বহু সাংসদের সদস্যপদ খারিজ এবং বেজিং-বিরোধী পুস্তকব্যবসায়ীদের সাম্প্রতিক অন্তর্ধান নিয়ে অনেকেই শঙ্কিত। তাই কালো পোশাকে সজ্জিত হয়ে রাস্তায় নেমেছেন তাঁরা। পার্লামেন্ট অভিযানের সময় আজও বেশির ভাগ বিক্ষোভকারী ফুল নিয়ে হাজির হয়েছিলেন। গরমে বেশ কয়েক জন অসুস্থ হয়ে পড়েন। কিন্তু সকলেরই দাবি, ক্যারি সরে না-যাওয়া পর্যন্ত প্রতিবাদের রাস্তা থেকে তাঁরা সরবেন না। সোমবার সকাল থেকে অবশ্য প্রতিবাদীদের সংখ্যা অনেকটা কমেছে। প্রথমে পার্লামেন্টের কাছে রাস্তা অবরোধ করলেও পরে তাঁরা শহরের বিভিন্ন পার্কে সরে যান। বিক্ষোভের উদ্যোক্তা সিভিল হিউম্যান রাইট ফ্রন্ট ক্যারির ইস্তফা, বিলটি পুরোপুরি বাতিল করার পাশাপাশি পুলিশকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি তুলেছে। বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সমস্ত মামলা প্রত্যাহারের কথাও বলেছে তারা। মানুষের ক্ষোভ দেখে ক্যারির পাশ থেকে সরে গিয়েছেন জোটসঙ্গীরা। দূরত্ব তৈরি করেছে চিনের কমিউনিস্ট পার্টিও।

১৯৯৭ সালে ব্রিটেন যখন চিনের হাতে হংকং হস্তান্তর করে, তখন শহরের নিজস্ব চরিত্র, স্বাধীনতা, সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য রক্ষায় রাজি হয়েছিল বেজিং। কিন্তু শর্ত ভেঙে তারা যে দখলদারি কায়েম করতে চাইছে, তা নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরেই তোলপাড় চলছে। প্রাক্তন সাংসদ তথা সমাজকর্মী চিউক ইয়ান বলেছেন, “মানুষের দাবিকে পাত্তা দেননি ক্যারি লাম। আমরা ক্রুদ্ধ, ক্ষুব্ধ। এখন সময় হয়েছে আন্দোলনকে দীর্ঘমেয়াদি করার। একদিনে এই প্রতিবাদ থেমে যাবে না। আমাদের পাঁচটি দাবি সম্পর্কে ওঁর মত না জানালে মানুষ ফের পথে নামবে, আন্দোলন চলবে।”

[আরও পড়ুন; মার্কিন মুলুকে নিহত ৪ ভারতীয়, মৃত্যুর কারণ ঘিরে ধোঁয়াশা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ