সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: টালমাটাল অর্থনীতির উপর করোনার মার। রীতিমতো ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা উত্তর কোরিয়ার। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে দেশটিতে দেখা দিয়েছে তীব্র খাদ্য সংকট। সংকট কালে নাগরিকদের পোষা কুকুর সরকারের হতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন স্বৈরাচারী কিম জং উন। ওই সারমেয়দের মাংসেই নাকি হবে উদরপূর্তি।
[আরও পড়ুন: করোনা অতীত, মহামারীর আঁতুড়ঘর ইউহানে গা ঘেঁষাঘেঁষি করেই দেদার হুল্লোড়, পার্টি]
সম্প্রতি ‘New Zealand Herald’ নামের পত্রিকায় প্রকাশিত একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ও করোনা কালে উৎপাদন কমে যাওয়ায় খাবারের চরম অভাব দেখা দিয়েছে দেশটিতে। পরিস্থিতি যে আগে খুব ভাল ছিল তা নয়, তবে এবার সংকট আরও বেড়েছে। খাদ্যশস্যের পাশাপাশি মুরগি তথা শূকর পালন ধাক্কা খাওয়ায় দেখা দিয়েছে মাংসের অভাব। তাই দেশের রেস্তরাঁগুলিতে মাংসের জোগান দেওয়ার উদ্দেশ্যে পোষা কুকুর সরকারের হতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন কিম।
তবে বিশ্লেষকদের মতে, খাদ্য জোগান ধরা ছাড়াও কিমের নির্দেশের নেপথ্যে রয়েছে অন্য একটি কারণ। সেটি হল-দেশের গরীব মানুষের মন পাওয়া। শুনতে অবাক লাগলেও, উত্তর কোরিয়ায় প্রচলিত ধারণা হচ্ছে যে ধনী মানুষরাই কুকুর পোষেন। গরিবরা শূকর, গরু বা ছাগল পালন করেন। তাই কুকুর জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ অত্যন্ত গরীব মানুষের ক্ষোভ কিছুটা হলেও প্রশমিত করার চেষ্টা করছেন কিম। তবে তাঁর এহেন বিতর্কিত পদক্ষেপ এই প্রথম নয়। এর আগে, গত জুলাই মাসে কুকুর পোষা বুর্জোয়া মানসিকতার পরিচয় বলে মন্তব্য করেছিলেন তিনি।
সম্প্রতি রাষ্ট্রসঙ্ঘের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২ কোটি ৫৫ লক্ষ জনসংখ্যার দেশ উত্তর কোরিয়ায় ৬০ শতাংশ মানুষই পেট ভরে খেতে পান না। কিমের আণবিক হাতিয়ার নির্মাণের জেরে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হয়েছে পিয়ংইয়ংকে। ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো এবছর প্রচণ্ড বৃষ্টির জেরে বন্যা হওয়ায় নষ্ট হয়েছে গিয়েছে ফসলও। সব মিলিয়ে এই মুহূর্তে দেশটিতে চূড়ান্তভাবে খাবারের অভাব দেখা দিয়েছে।