সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মারণ জীবাণুর সংক্রমণের সঙ্গে মোকাবিলা প্রায় যুদ্ধের পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে চিনে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করা সত্বেও হার মানানো যাচ্ছে না নোভেল করোনা ভাইরাসকে। এসবের জন্য আন্তর্জাতিক মহলে চিন খুব একটা কম সমালোচনার মুখে পড়ছে না। এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি একটি ছবি ছড়িয়ে পড়ায় বিতর্ক আরও বাড়ল। ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক নার্স নিজের বিপদ তুচ্ছ করে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা করে চলেছেন অক্লেশে। এই পরিস্থিতিতে কেন তাঁকে দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে, এই প্রশ্নের সরগরম নেটদুনিয়া।
চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যমে অন্তঃসত্ত্বা ঝাও ইউকে ‘হিরো’ প্রতিপন্ন করে প্রচার করা হয়েছে। দেখানোর চেষ্টা হয়েছে যে এমন শারীরিক পরিস্থিতি নিয়েও কীভাবে তিনি করোনা মোকাবিলায় কাজ করে চলেছেন। কিন্তু জিনপিং প্রশাসনের এই প্রয়াস পুরোপুরি বুমেরাং হয়ে ফিরছে। ভিডিও দেখা পর সকলেই চমকে উঠছেন। প্রশ্ন তুলছেন, কেন ৯ মাসের গর্ভবতীকে দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে? প্রথমত, এত অ্যাডভান্স স্টেজে বিশ্রামের বদলে কাজ করার ফলে তাঁর নিজের বিপদ বাড়ছে। দ্বিতীয়ত, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ক্ষমতা এত বেশি যে ওই পরিবেশে কাজ করলে তাঁর তো বটেই, গর্ভস্থ সন্তানের শরীরেও তার প্রভাব পড়ার আশঙ্কা প্রবল। এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে চিন প্রশাসনের কোনও হেলদোল কেন নেই, তা নিয়েও সরব অনেকে।
ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের মতে, ঝাও ইউকে আসলে ব্যবহার করছে প্রশাসন। ওই ৯ মাসের গর্ভাবস্থায় তাঁকে সারা শরীর ঢাকা মোটা হ্যাজমাট সুট, মুখে ত্রিস্তরীয় মাস্ক পরে কাজ করতে হচ্ছে। এমনকী রোগীরাও তাঁকে দেখে অবাক হচ্ছেন। অনেকে তাঁকে পরামর্শ দিচ্ছেন যে এই অবস্থায় কাজ না করার। কিন্তু কথা শোনার যে উপায় নেই। ঝাও নিজেও জানিয়েছেন যে এভাবে তাঁর কাজ করা মোটেই সমর্থন করছে না পরিবার। বিশেষত আগত সন্তানের কথা ভেবে। ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পর পরিবারের তরফে সেই চাপ আরও বেড়েছে তাঁর উপর। তবে করোনা মোকাবিলায় চিন প্রশাসনের এই কাজ অত্যন্ত নিন্দনীয় বলে একবাক্যে মানছেন নেটিজেনদের একাংশ বড় অংশ। যেখানে চিন দেশের প্রতি দেশবাসী নিবেদিতপ্রাণ, তা বোঝানোর চেষ্টা করছে। এটি আদৌ বাস্তবোচিত নয় বলেই মনে করেন তাঁরা। ফলে ঝাওকে ‘হিরো’ হিসেবে দেখাতে নিজেদেরই মুখ পোড়াল জিনপিং প্রশাসন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.