ফাইল ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের চিন সফর ঘিরে জল্পনা আগেই ছিল। এবার সেই মতোই ইউক্রেন যুদ্ধ আবহে বেজিংয়ে পা রাখলেন পুতিন। চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বৈঠকে বসবেন তিনি। জানা গিয়েছে, দুই রাষ্ট্রনেতার এই আলোচনার আগে যুদ্ধ থামানো নিয়ে মস্কোকে একটি শান্তি প্রস্তাব দিয়েছিল বেজিং। সেই প্রস্তাবে সায় দিয়েছেন পুতিন। এদিকে, মস্কো-বেজিং বন্ধুত্বে ‘সিঁদুরে মেঘ’দেখছে দিল্লি। গোটা ঘটনাপ্রবাহের উপর কড়া নজর রাখছে ভারত।
এএনআই সূত্রে, বৃহস্পতিবার দুদিনের সফরে চিনে গিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। এদিনই তিনি বৈঠক করতে পারেন ‘বন্ধু’ জিনপিংয়ের সঙ্গে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, বিভিন্ন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সমস্যা-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে তাঁদের মধ্যে। চিনের সংবাদ সংস্থা জিনহুয়া জানিয়েছে, পুতিনের এই সফরের আগে রাশিয়াকে একটি শান্তি প্রস্তাব দিয়েছিল চিন। ইউক্রেনের সঙ্গে মস্কোর সংঘাতের আসল কারণ, দুদেশের বিভিন্ন চলমান সমস্যা, গোটা বিশ্বে এই সংঘাতের প্রভাব এবং কীভাবে শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যাগুলোর সমাধান করা যায় সেনিয়েই ওই প্রস্তাবটি দেওয়া হয়েছিল।
জানা গিয়েছে, বেজিংয়ে আসার আগে বুধবার জিনহুয়াকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন পুতিন। সেখানে তিনি চিনের এই প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়েছেন। এমনকি দুবছর ধরে চলা রক্তক্ষয়ী এই সংঘাত থামানো জন্য আন্তরিকভাবে ইচ্ছা প্রকাশ করেছে বেজিং। সাক্ষাৎকারে এই বিষয়টিও উল্লেখ করেছেন পুতিন। প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই চিনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র বলেন, “গত দুবছরে আমরা যুদ্ধ থামাতে একাধিক পদক্ষেপ করেছি। আমরা আমাদের চেষ্টার কোনও খামতি রাখিনি। এখন আমাদের একটাই লক্ষ্য, এই যুদ্ধ থামাতে ঐক্যমত গঠন করা। শান্তি চুক্তির পথ প্রশস্ত করা।” ফলে বিশ্লেষকদের ধারণা, জিনপিংয়ের সঙ্গে এই যুদ্ধ নিয়ে আলোচনায় কোনও ইতিবাচক পথ বেরতে পারে। এবার হয়তো চিনের হস্তক্ষেপেই শান্তির পথে আসতে পারে রাশিয়া।
ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি চিন-রাশিয়া দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও মজবুত করা নিয়েও বৈঠক করবেন পুতিন ও জিনপিং। সূত্রের খবর এই আলোচনায় উঠে আসে পারে চিনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ প্রকল্পের প্রসঙ্গও। এই বিতর্কিত প্রকল্পের ১০ বছর পূর্তিতে গত বছরের অক্টোবরে বন্ধু জিনপিংয়ের আমন্ত্রণে বেজিং গিয়েছিলেন পুতিন। প্রায় আট মাসের ব্যবধানে ফের রুশ প্রেসিডেন্টের এই চিন সফরকে তাৎপর্যপূর্ণ হিসাবেই দেখছেন কূটনীতিকরা।
আর এই গোটা ঘটনা প্রবাহের উপর নজর রাখছে ভারতও। মুখে চিন যাই বলুক না কেন, বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পকে আসলে ফাঁদ বলেই ভাবেন অনেকে। পরিকাঠামো উন্নয়নের নামে ঋণের জাল ছড়িয়েছে কমিউনিস্ট দেশটি। ভারত বরাবর এই প্রকল্পের বিরোধিতা করে এসেছে। কারণ, চিনা প্রকল্পের একটি অংশ গিয়েছে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের উপর দিয়ে। ফলে দিল্লির বন্ধু মস্কো এই প্রকল্পে কতটা বেজিংকে সাহায্য করে সেদিকেই নজর ওয়াকিবহাল মহলের। বলে রাখা ভালো, চিনের সঙ্গে সীমান্ত সংঘাত নিয়ে ভারতকে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করার পরামর্শ দিয়েছে রাশিয়া। ফলে ভবিষ্যতে কোনও দিন যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হলে কয়েক দশকের বন্ধুকে পাশে পাবে কিনা দিল্লি উঠছে সেই প্রশ্নও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.