সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রত্যাশিত জয়। সব বুথ ফেরত সমীক্ষাকে সত্যি প্রমাণ করে ক্রেমলিনের দখল রাখলেন ভ্লাদিমির পুতিন। ছ’ বছরের জন্য ফের তিনিই প্রেসিডেন্ট। গত ১৮ বছর ধরে দেশের রাজনীতিতে একাধিপত্য বজায় রাখা পুতিন ২০২৪ পর্যন্ত পুরো মেয়াদ পূর্ণ করলে টানা সিকি শতাব্দী রাশিয়ার ক্ষমতায় থাকবেন। তখন তাঁর বয়স হবে ৭১। একমাত্র সোভিয়েত নেতা জোসেফ স্তালিন এমন দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থেকেছেন। পুতিনের পক্ষে ভোট পড়েছে ৭৩.৯ শতাংশ।
[‘কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল না’, অভিশপ্ত ফ্লাইট ২১১ নিয়ে ঢাকার বিস্ফোরক দাবি]
তাঁকে নিয়ে অবশ্য বিতর্কের শেষ নেই। দেশ জুড়ে তাঁর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ, ধরনা, অবস্থান। পাল্টা তাঁর দমনমূলক নীতি। সাধারণ মানুষের অভিযোগ, তাঁর স্বৈরাচার রাশিয়ার জারকেও ছাড়িয়ে গিয়েছে। জনমনে তীব্র অসন্তোষ কু-শাসনকে ঘিরে। গুরুত্বপূর্ণ ক্রিমিয়া উপদ্বীপের দখল, ইউক্রেন দখল করার জন্য রুশ জঙ্গিদের মদত, সিরিয়ার যুদ্ধে নির্বিচারে গণহত্যা, সিরিয়ার যুদ্ধ ও হিংসার মাত্রা বাড়িয়ে দেওয়া, ইউরোপের রাজনীতিতে ঘোঁট পাকানো, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল সক্রিয়ভাবে প্রভাবিত করা! বিশ্বের রাষ্ট্রপ্রধানদের বিরুদ্ধে গুপ্তচর লেলিয়ে দেওয়া। ঘন ঘন পরমাণু অস্ত্রের দম্ভ দেখানো। অর্থনৈতিক সংস্কারের নামে দেশের মানুষের উপর বাড়তি করের বোঝা চাপানো। তবুও তিনিই ফের হলেন দেশের সর্বেসর্বা। ভোট সমীক্ষার ফলের প্রবণতা সেটাই বলেছিল অবশ্য।
শনিবার (ভারতীয় সময় রাত ১.৩০ নাগাদ) পূর্ব রাশিয়ার ভোট পর্ব শুরু হয়। সময়ের পার্থক্যের জন্য পরবর্তীতে ভোট শুরু হয় বিভিন্ন প্রদেশে। প্রায় ৯ ঘণ্টা পরে ভোট শুরু হয় মস্কোয়। ভোট পড়েছে ৫২ শতাংশের বেশি। সবার আগ্রহ ছিল একটাই, প্রাক্তন কেজিবি গোয়েন্দা অফিসার ৬৫ বছরের পুতিনকে ফের দেশের মানুষ ক্ষমতায় বসাবেন কি? রাশিয়ার এ বারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভ্লাদিমির পুতিন-সহ প্রার্থী ছিল আট জন। এই দফায় ২০১২ থেকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পদে রয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন। প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় ২০০০ থেকে ২০০৮। মাঝখানে দিমিত্রি মেদভেদেভকে প্রেসিডেন্ট পদে বসিয়ে নিজে প্রধানমন্ত্রী পদে ছিলেন। তারপর ২০১২ থেকে আবার প্রেসিডেন্ট হয়েছেন পুতিন। এ বার তাঁর প্রধান বিরোধী মুখ ছিলেন প্রোগ্রেস পার্টির আলেক্সেই নাভালনি। ভ্লাদিমির পুতিনের দাবি, ‘‘ক্ষমতায় টিকে থাকতে সংবিধান বদলাতে চাই না।’’ আজীবন চিনের প্রেসিডেন্ট থাকতে শি জিনপিং ও তাঁর দল দেশের সংবিধানে বদল আনার প্রস্তাব দিয়েছেন।