Advertisement
Advertisement

Breaking News

জনসংখ্যা বাড়াতে কাজের সময় কমাল দক্ষিণ কোরিয়া

সপ্তাহে ৬৮ ঘণ্টার পরিবর্তে এখন থেকে ৫২ ঘণ্টা কাজ করবেন চাকরীজীবীরা।

S-korea reduces work hours to boost population
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:October 19, 2018 9:15 am
  • Updated:October 19, 2018 3:53 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একদিকে যখন ভারত ও চিনের মতো দেশগুলি জনবিস্ফোরণের আশঙ্কায় প্রমাদ গুনছে, ঠিক তখনই উলটো পথে দক্ষিণ কোরিয়। ক্রমহ্রাসমান জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার নিয়ে ঘোরতর উদ্বিগ্ন সেদেশের সরকার। জন্মের হার কমার জন্য সরকারের একটি কমিটি দীর্ঘ কাজের সময়কেই দায়ী করেছে। বলা হচ্ছে যে, স্বামী-স্ত্রীর দিনের বেশিরভাগ সময়টা কর্মস্থলে কেটে যাওয়ার কারণে তাঁদের স্বাভাবিক যৌনপ্রবৃত্তি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আর সেটাই বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে সন্তান উৎপাদনে। অন্য একটি মত বলছে, যেহেতু দায়িত্বশীল মা-বাবা হিসাবে তাঁরা সন্তানকে ঠিকভাবে সময় দিতে পারবেন না, তাই তাঁরা পরিবার বাড়াতে আগ্রহী নন। তাঁরা সন্তানদের প্রতি অবিচার করতে চান না।

[সৌদি সাংবাদিকের শিরচ্ছেদ দূতাবাসেই, বিস্ফোরক দাবি তুরস্কের]

Advertisement

১৯৫০-১৯৫৩ সালে কোরীয় যুদ্ধের পরে ধ্বংসপ্রায় দক্ষিণ কোরিয়া ১৯৯০ সালে এসে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতিগুলির একটিতে পরিণত হয়েছে। জনসংখ্যার দিক দিয়ে বিশ্বতালিকায় ২৭ নম্বরে রয়েছে দেশটি। সেখানকার বর্তমান জনসংখ্যা ৫ কোটি ১১ লক্ষ ৬৪ হাজার ৪৩৫ জন। আগের বছরের তুলনায় বৃদ্ধির হার মাত্র ০.৩৬ শতাংশ। অর্থাৎ জনসংখ্যা বেড়েছে পৌনে দুই লক্ষের সামান্য বেশি। জনঘনত্বের হিসাবে দেখা যাচ্ছে প্রতি বর্গকিমিতে মাত্র দু’জন বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে ২০১৬ সাল থেকে এই ধারাটা পরিলক্ষিত হচ্ছে।

Advertisement

জনসংখ্যা বৃদ্ধির ক্রমহ্রাসমান হারের সমস্যার সমাধান হিসাবে অফিসের কর্মীদের সাপ্তাহিক কাজের সময় কমিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সপ্তাহে ৬৮ ঘণ্টার পরিবর্তে এখন থেকে দেশটির চাকরিজীবীরা ৫২ ঘণ্টা কাজ করবেন। স্বাস্থ্যের প্রতি দৃষ্টি দেওয়া, অবসাদ কাটানো ও জন্মহার বৃদ্ধির জন্য এই নিয়ম জারি করেছে দেশটি। ১ জুলাই থেকে নতুন নিয়ম চালু হয়েছে। এখন থেকে ৬৮ ঘণ্টার বদলে ৫২ ঘণ্টা কাজ করবেন দেশটির কর্মীরা। বিশ্বের কম জন্মহারের দেশগুলির মধ্যও উপরের দিকে দক্ষিণ কোরিয়া। সরকার বলছে, অফিসে কাজের সময় কমানোর ফলে পরিবারের সঙ্গে বেশি সময় কাটানোর সুযোগ পাবেন পুরুষ ও মহিলারা। ফলে জন্ম হার বাড়বে বলে ধারণা দেশের নীতি নির্ধারকদের।

বিশ্বের অন্যতম কর্মমূখর দেশ দক্ষিন কোরিয়ার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মচারীরা দিনের বেশির ভাগ সময় অফিসেই কাটান। তাই কাজের সময় কমানো সংক্রান্ত একটি বিল সম্প্রতি পাস হয়েছে আইনসভায়। বিলে বলা হয়েছে, ৬৮ ঘণ্টার জায়গায় এখন সপ্তাহে ৫২ ঘণ্টা কাজ করাতে হবে। জীবনযাপনের মান উন্নয়ন, উৎপাদন বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান বাড়ানো এবং জন্মহার বৃদ্ধির লক্ষ্যের অংশ হিসেবে সপ্তাহের কাজের সময় কমানো হচ্ছে। ব্যবসায়ী মহল এ বিলের বিরোধিতা করেছিল। কিন্তু আইনসভা তাতে আমল না দিয়ে বিলটি পাস করেছেন।

২০১৬ সালে কোরীয়রা গড়ে ২ হাজার ৬৯ ঘণ্টা কাজ করেছেন। দেশের প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইন বলেন, “আমরা নতুন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হব। মা-বাবার সন্তানদের আরও সময় দেওয়া প্রয়োজন।” মুন প্রশাসন কাজের সময় কমানোর সঙ্গে সঙ্গে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলিকে আরও বেশি কর্মী নিয়োগ করতে আহ্বান জানিয়েছেন। তবে ৮০ ভাগ সংস্থাই বাড়তি কর্মী নিয়োগে নারাজ।

আগেই প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইন বলেছিলেন, অতিরিক্ত কাজের সময় থাকা কখনওই উচিত নয়। সুখী জীবন-যাপনের ক্ষেত্রে টানা কাজের সময় বড় বাধা। বিশ্রামের সুযোগ মেলে নাা। অর্গানাইজেশন অব ইকোনমিক কর্পোরেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইডিসি)-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ কোরিয়া ছাড়াও মেক্সিকো এবং কোস্টারিকায় দীর্ঘ কাজের সময় আছে। দক্ষিণ কোরিয়ার কম জন্মহারের জন্য নারীদের অতিরিক্ত কাজ করাকে দায়ী করে সরকার। ওইসিডি এর মতে, “কোরিয়ায় প্রতি একজন নারীর সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা ১.২ ভাগ। যা বিশ্বে সর্বনিম্ন।”

[জাতীয় প্রতীকের অপব্যবহারের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী-জুকারবার্গের বিরুদ্ধে মামলা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ