সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চিনের ইউহান প্রদেশে আটকে থাকা পাকিস্তানি পড়ুয়াদের পাকিস্তানে ফেরানো হবে না। কারণ, সে দেশে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থা নেই। রবিবার এমনটাই জানিয়ে দিলেন চিনে নিযুক্ত পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত নাঘমনা হাসমিন। এই ঘোষণা শুনেই ইউহান প্রদেশে আটকে থাকা পাকিস্তানি পড়ুয়াদের মাথায় হাত। তাঁদের অভিযোগ, ইউহানে চরম উঠেছে খাদ্য সংকট। এমনকী সাধারণ সুযোগ-সুবিধাও মিলছে না। কার্যত ঘরবন্দী হয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে। দেশে ফেরার জন্য পাকিস্তান সরকারের কাছে আকুতি জানিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু তার কোনও ফল হয়নি। এদিকে, এদিনই মালদ্বীপের ৭ বাসিন্দা-সহ ৩২৩ জন ভারতীয়কে নিয়ে ভারতে ফিরল দ্বিতীয় বিশেষ বিমান। তাঁদের আপাতত দিল্লির মানেসরের ‘করেনটাইন’ সেন্টারে রাখা হবে।
চিনের ইউহান প্রদেশে মহামারির আকার নিয়েছে করোনা। ইতিমধ্যে ২৫৮ জনের মৃ্ত্যু হয়েছে। এ নিয়ে বিশ্বব্যাপী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)। চিনের বিভিন্ন অংশ থেকে আরও ২ হাজার জনের বেশি করোনা আক্রান্ত মানুষের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। এর ফলে এখনও পর্যন্ত সেদেশে করোনা ভাইরাস আক্রান্তের মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ হাজারের বেশি। ইউহান প্রদেশে দেশ-বিদেশ থেকে বহু পড়ুয়া আসেন। তাঁদের অবস্থা সবচেয়ে ভয়ানক। খাবার-পানীয়ের অভাবে ভুগছেন তাঁরা। বিভিন্ন দেশে থেকে তাঁদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। ব্যতিক্রমী পাকিস্তান। সূত্রের খবর, ইউহানে ইতিমধ্যে পাঁচ পাকিস্তানি পড়ুয়ার দেহে এই ভাইরাস মিলেছে।ইতিমধ্যে পাকিস্তানি পড়ুয়াদের তরফে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভারতীয় ছাত্রদের ফিরিয়ে আনার ভিডিও পোস্ট করেন। সেখানে তিনি দাবি করেন, “ইউহান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভারতীয়দের ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ভারত সরকার। কিন্তু আমাদের সরকারের আটকে থাকা পড়ুয়াদের নিয়ে মাথাব্যথাই নেই।”
[আরও পড়ুন: ‘ঢাকার দুটি পৌরনিগমে জয় সরকারের প্রতি বিশ্বাসের প্রতিফলন’, বলছেন শেখ হাসিনা]
শনিবারই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সহকারী (জাতীয় স্বাস্থ্য) ড. জাফর মির্জা জানিয়ে দিয়েছিলেন, পাকিস্তানে করোনা ভাইরাসের চিকিৎসার উপযুক্ত পরিকাঠামো নেই। তাই ইউহান প্রদেশে আটক পাকিস্তানিদের বৃহত্তর স্বার্থে চিনে থেকে যাওয়ার আরজি জানিয়েছেন। পাকিস্তানের সরকারের আশঙ্কা, ইউহান প্রদেশ থেকে আক্রান্তরা দেশে ফিরলে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়বে। তা মোকাবিলার উপযুক্ত পরিকাঠামো পাক সরকারের নেই। তবে চিনে পাক পড়ুয়াদের উপযুক্ত চিকিৎসার দ্রুত ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান রাষ্ট্রদূত নাঘমনা। তিনি জানিয়েছেন, “পাকিস্তানি দূতাবাস ও চিন সরকার যৌথভাবে গোটা পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করছে। আপাতত ইউহান প্রদেশকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে। কাউকে সেখানে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। পুনরায় যোগাযোগ চালু হলে আমরাই সবার আগে আমাদের নাগরিকদের পাশে দাঁড়াব।” কিন্তু ততদিন আটক পাকিস্তানিদের কী হবে, সে বিষয়ে কোনও দিশা দেখাতে পারেনি পাক সরকার।