সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অপ্রীতিকর প্রশ্ন এড়াতে বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব-সেলেবরা অনেক কিছুই করে থাকেন। মাস্টারব্লাস্টার শচীনকে সবসময়ই দেখা যেত, কানে হেডফোন দিয়ে টিম হোটেল বা ড্রেসিংরুমে ঘুরে বেড়াতে। সতীর্থ এক ক্রিকেটার ফাঁস করেছিলেন, সাংবাদিকদের প্রশ্ন এড়াতে নাকি গান শোনার অভিনয় করতেন শচীন। যদিও তা কতটা সত্যি তা নিয়ে বিতর্ক আছে। ক্রিকেট ঈশ্বরের রসবোধ নিয়ে প্রশ্ন নেই। তবে সম্প্রতি তাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী যা করলেন তা সত্যিই চোখ কপালে তুলে দেবে। তাঁর কাণ্ড দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে যান উপস্থিত সাংবাদিকরাও। সংবাদমাধ্যমের ‘অপ্রীতিকর’ প্রশ্ন এড়াতে মাইক্রোফোনের সামনে নিজের কার্ডবোর্ডের কাটআউট রেখে হাঁটা দিলেন প্রয়ুথ চ্যান-ওচা। সাংবাদিকরাও বা আর কী করবেন! উপায়ন্তর না দেখে প্রধানমন্ত্রীর কাটআউটের পাশে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলে মন ভোলালেন। এও সম্ভব! হয়তো তাইল্যান্ডে তাই চলে।
[পার্লামেন্টের মধ্যে নীলছবিতে মগ্ন ব্রিটিশ সাংসদরা, বিড়ম্বনায় প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে]
ব্যাংককে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এমন ঘটনা নিয়ে সরগরম গোটা বিশ্বের কূটনৈতিক মহল। প্রয়ুথ চ্যান-ওচা দিব্যি গটগট করে হেঁটে ঢোকেন সম্মেলনে। সাংবাদিকরা প্রশ্নবাণে জর্জরিত করার জন্য অপেক্ষা করছিলেন তাঁর। কিন্তু একি! মাইক্রোফোনের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি বললেন, কোনও রাজনৈতিক বা বিতর্কিত প্রশ্ন থাকলে এনাকে করুন। দেখা গেল, একজন লোক এসে ওই কাটআউট মাইক্রোফোনের পাশে রেখে দিলেন। কোট পরিহিত প্রধানমন্ত্রীর কার্ডবোর্ডের কাটআউট দেখে কিছুক্ষণ সাড়াশব্দ বন্ধ থাকে সাংবাদিকদের। তারপর গটগট করে আবার হাঁটা লাগিয়ে চলে যান প্রধানমন্ত্রী। একমাত্র এই ঘটনায় সরকারি গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের হাসির রোল গমগম করে গোটা সভায়। এর আগেও নাকি সাংবাদিকদের বেশ কয়েকবার এড়িয়ে গিয়েছেন প্রয়ুথ। সরকারি প্রকল্প ছাড়া অন্য কোনও বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তর দিতে তাঁর অনীহা সর্বজন বিদিত।
[কুলভূষণের পরিবারকে অপমান, পাক দূতাবাসের সামনে ছেঁড়া চটি নিয়ে প্রতিবাদ]
২০১৪ সালে রক্তপাতবিহীন সামরিক অভ্যূত্থানে জেনারেল প্রয়ুথের ক্ষমতায় আসা। কিন্তু বরাবরই মিডিয়ার সঙ্গে লুকোচুরি খেলেন। একবার সাংবাদিক সম্মেলনের সময় এক সাউন্ড টেকনিশিয়ানের কানে হাত বুলিয়েছিলেন, ক্যামেরাম্যানের দিকে কলার খোসা ছুড়ে দেওয়া, সরকারের সমালোচনা করায় ঠাট্টার ছলে সাংবাদিককে মৃত্যুদণ্ডর হুমকি দেওয়ার মতো ঘটনায় বদনাম কুড়িয়েছেন প্রয়ুথ। তাঁর জুন্টা কায়দায় সরকার চালানো অনেকেই ভাল চোখে দেখেন না। যত দিন যাচ্ছে, ততই ঔদ্ধত্য দেখাচ্ছে তাই সরকার। সরকার চালানোর পদ্ধতিতে স্বচ্ছতা গায়েব হয়ে গিয়েছে, জনগণের কন্ঠরোধের অভিযোগও উঠছে। আগামী নভেম্বরেই দেশে গণভোটের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রয়ুথ। যদিও এর আগে বেশ কয়েকবার এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফের পিছিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি এইরকমই। সাংবাদিকদের সঙ্গে কুৎসিত পরিহাস করতেও তিনি দুবার ভাবেন না।