প্রতীকী ছবি।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্কুলে আটবছরের কম বয়সী ছাত্রীদের হিজাব পরা চলবে না। নিদান দিয়েছিলেন প্রধান শিক্ষিকা। এই নিদানের পরিপ্রেক্ষিতেই ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রধান শিক্ষিকাকে ‘হিটলার’ বলে কটাক্ষ করলেন নেটিজেনরা। ওই মহিলার নাম নিনা লাল। পূর্ব লন্ডনের নিউহ্যামের সেন্ট স্টিফেন্স স্কুলে শিক্ষকতা করেন তিনি। প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে পড়ুয়া থেকে শুরু করে স্কুল কর্তৃপক্ষ সকলের কাছেই বেশ জনপ্রিয় তিনি। কিছুদিন আগেই আটবছরের কম বয়সী পড়ুয়াকে হিজাব পরে আসতে নিষেধ করেন তিনি। স্কুলের চেয়ারম্যান আরিফ কোয়াইও তাঁর বক্তব্যকে সমর্থন জানান। এরপরেই নির্দেশিকা জারি হয় স্কুল জুড়ে। নির্দেশিকার পরেই সাপ্তাহিক ছুটির দিন চলে আসে। এরই মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোলড হয়ে যান নিনা লাল। তাঁকে জার্মানির স্বৈরশাসক ‘হিটলার’ হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়। একইভাবে ট্রোলড হন আরিফ কোয়াই। তাঁকে রাশিয়ার ‘স্টালিনে’র সঙ্গে তুলনা করা হয়।
সমালোচনার খবরে চেয়ারম্যানের পদ থেকে ইস্তফা দেন আরিফ কোয়াই। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে আসরে নামে স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় লেবার পার্টির নেতাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। একই সঙ্গে অভিভাবকদেরও ডাকা হয়। সেখানেই কটাক্ষের শিকার হওয়া প্রধান শিক্ষিকাকে আড়াল করার চেষ্টা হয়। বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, তাঁর জারি করা নির্দেশিকা তুলে নেওয়া হয়েছে। এটি খুব ভালো স্কুল। নিনাও শিক্ষিকা হিসেবে দারুণ। এমনকী, এই নির্দেশিকার জন্য তিনি ক্ষমাপ্রার্থী। স্কুলের পোশাকের নীতিমালা তৈরি হয় পড়ুয়াদের কথা ভেবে। তাদের নিরাপত্তার দিকটিও ভাবনাচিন্তা করা হয়। ভারতীয়, বাংলাদেশী ও পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত পরিবার থেকেই মূলত পড়ুয়ারা আসে। তাই অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই বিষয়টি নিয়েও অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। তারপরেই নতুন নির্দেশিকা জারি হবে।
[ ৯৯-এর যুবতীকে ‘জন্মদিন’ উপহার দিল এই হাসপাতাল ]
উল্লেখ্য, একেবারে শৈশবে ধর্মের বোঝা থেকে পড়ুয়াদের দূরে রাখতেই হিজাব নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ নেয় ব্রিটেনের সরকার। স্কুলগুলিকেও তেমনই জানানো হয়েছিল। তারই পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন নিনা।এদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোলড হয়ে অপমানিত বোধ করেছেন প্রাক্তন চেয়ারম্যান কোয়াই। তিনি বলেছেন, আমরা হিজাবের বিরোধিতা করছি না। কোনও ধর্মবোধকেও আঘাত করছি না। তবে শিশুকে হিজাব পরানো ভুল। ধর্মীয় নিয়ম অনুসারে যৌবনপ্রাপ্তির পরেই হিজাব পরবে ছাত্রীরা। এমনই নিয়ম রয়েছে। সেটাই অনুসরণ করা হচ্ছিল। স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে নির্দেশিকার বিরোধিতা করা যেত। সোশ্যাল সাইটে সমালোচনা মানতে পারছি না।
[ কাশ্মীর ইস্যুতে লন্ডনে পাকপন্থীদের তাণ্ডব, পালটা মার ভারতীয় সমর্থকদের ]
বলা বাহুল্য, গত নভেম্বরেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সম্মানীয় খেতাব জেতে সেন্ট স্টিফেন্স স্কুল। চলতি বছরেই ভালো শিক্ষকতার জন্য ইংল্যান্ডের স্কুল গাইডে সেরা স্কুল হিসেবে জায়গা করে নিয়ে এই সেন্ট স্টিফেন্স।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.