সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাশের ফ্ল্যাটে কিছু একটা গণ্ডগোল হয়েছে। এমন ফোনই এসেছিল ইউক্রেন পুলিশের কাছে। খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান অফিসাররা। ফ্ল্যাটের দরজা খুলে যা দেখলেন, তাতে দুঁদে অফিসারদেরও যেন বুকটা কেঁপে উঠল। মেঝেতে পড়ে রয়েছেন ৭৭ বছরের বৃদ্ধ। আর পাশের ঘরের সোফায় শায়িত কঙ্কাল। তিরিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে এভাবেই মায়ের কঙ্কালের সঙ্গে বাস করছিলেন ইউক্রেনের মহিলা।
পুলিশ যখন মহিলাকে উদ্ধার করে, তাঁর দেহে কেবল প্রাণটুকুই অবশিষ্ট ছিল। পাশের ঘরে গিয়ে দেখা যায় সোফায় শায়িত রয়েছে একটি কঙ্কাল। যার চারপাশে ধর্মীয় মূর্তি রাখা রয়েছে। পুরো বাড়ি আবর্জনায় ভরতি। প্রচুর খবরের কাগজও রাখা ছিল। মহিলাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে তাঁর থেকেই জানা যায়, তিরিশ বছর আগে তাঁর মায়ের মৃত্যু হয়। কিন্তু মহিলার বিশ্বাস মা তাঁর সঙ্গেই রয়েছে। এই বিশ্বাসেই এতগুলি বছর কাটিয়ে দেন তিনি।
[রক্তস্নাত সিরিয়ার পাশে নেটিজেনরা, হোলি বয়কটের ডাক]
প্রতিবেশীরা জানান, কারও সঙ্গে বিশেষ কথা বলতেন না ওই মহিলা। কখনও ফ্ল্যাটের মূল দরজাও খুলতেন না। পেনশন পেতেন। তাতেই তাঁর চলত। আর প্রতিবেশীরা দয়া পরাবশ হয়ে দরজার সামনে খাবার রেখে যেতেন। ফ্ল্যাটে গ্যাস, বিদ্যুৎ কিছুই ছিল না। কয়েক বছর আগে মহিলার পা দু’টিও অসাড় হয়ে যায়। এরপর থেকে হুইলচেয়ারেই চলাফেরা করতেন তিনি। কিন্তু কয়েকদিন আগে সে শক্তিটুকুও হারান। প্রতিবেশীদের সন্দেহ না হলে হয়তো এভাবেই মৃত্যু হত তাঁর। মহিলাকে সারিয়ে তুলতে মনোবিদের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
ইউক্রেনের এই ঘটনা মনে করিয়ে দেয় কলকাতার রবিনসন স্ট্রিটের কথা। এভাবেই দিদির কঙ্কালের সঙ্গে ভাবলেশহীনভাবে বাস করছিলেন পার্থ দে। ঘটনায় শিহরিত হয়েছিলেন শহরবাসী। পার্থকে সারিয়ে তোলারও চেষ্টা করা হয়েছিল। মাদার হাউসে কিছুদিন কাটিয়েছিলেনও তিনি। তারপর অন্য একটি ফ্ল্যাটে থাকতে শুরু করেন। সেখানেই অস্বাভাবিকভাবে মৃত্যু হয় তাঁর।
[অর্ধেক আকাশে স্বাধীনতার আলো, সৌদি সেনাবাহিনীতে এবার সুযোগ মহিলাদেরও]