সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে কঠোর দমনমূলক ব্যবস্থা না নিলে পাকিস্তানের মাটিতে ঢুকে একতরফা ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে আমেরিকা। পাক প্রধানমন্ত্রী শাহিদ খাকান আব্বাসিকে স্পষ্টভাষায় একথা জানালেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক স্পেন্স। তিনি এও জানিয়েছেন, জঙ্গি দমনে পাকিস্তানকে ‘আরও বড় কিছু’ করে দেখাতে হবে। এদিকে, মার্কিন বিদেশসচিব রেক্স টিলারসনের অপসারণের পর যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে তার জেরে ভারত-আমেরিকা কূটনৈতিক পর্যায়ের ‘টু প্লাস টু’ আলোচনা পিছিয়ে দেওয়া হল।
[বহু বিতর্কের মধ্যেই চতুর্থবার রাশিয়ার মসনদে পুতিন]
পাকিস্তানকে তাদের মাটিতে সক্রিয় তালিবান ও অন্যান্য সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে বিশ্বাসযোগ্য ও কার্যকরী আরও পদক্ষেপ করতে হবে। পাকিস্তান তাদের ভূখণ্ড থেকে সীমান্ত পেরিয়ে অন্য দেশে (আফগানিস্তান ও ভারতে) সন্ত্রাসবাদী হামলা বন্ধ করতে না পারলে ট্রাম্প প্রশাসন একতরফা সামরিক ব্যবস্থা নিতে তৈরি। মার্কিন মুলুকে ব্যক্তিগত সফরে আসা পাক প্রধানমন্ত্রী শাহিদ খাকান আব্বাসিকে এই হুঁশিয়ারি দেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। এ খবর দিয়েছে পাক দৈনিক দি ডন। অসুস্থ বোনকে আমেরিকায় দেখতে এসেছিলেন আব্বাসি। সাক্ষাতের ফাঁকে তিনি পেন্সের সঙ্গে সৌজন্যমূলক দেখা করতে মার্কিন নৌবাহিনীর দপ্তরে যান। সেখানেই সরকারি বাসভবন পেন্সের। গতকাল আব্বাসির অনুরোধেই হয় এই সাক্ষাৎ। বৈঠকের পর হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে বলে, পাকিস্তান সরকারের তাদের ভূখণ্ডে সক্রিয় তালিবান, হক্কানি নেটওয়ার্ক ও অন্য জঙ্গি গোষ্ঠীগুলিকে দমনের ব্যাপারে আরও বড় কিছু করা দরকার, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি করেছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, যেসব সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী আমেরিকার সুরক্ষা ও এলাকার স্থিতিশীলতার সামনে বিপদ, তাদের মুছে দিতে আমেরিকার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
মার্কিন মিডিয়ার খবর, পেন্স-আব্বাসি আলোচনার কয়েক ঘন্টা বাদেই ট্রাম্প প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা বিশেষ সাংবাদিক বৈঠক ডেকে পাকিস্তানের আফগানিস্তান নীতিতে আমেরিকার অসন্তোষ জানিয়ে দেন। এক পদস্থ কর্তাকে উদ্ধৃত করে ডন জানিয়েছে, দক্ষিণ এশিয়া নীতি ঘোষণার ৬ মাস বাদেও আমেরিকা যেমন চায়, তেমন নির্ধারক পদক্ষেপ এখনও করেনি পাকিস্তান। অন্যদিকে, বিদেশ সচিবের পদ থেকে রেক্স টিলারসন অপসারিত হওয়ার পর সেই পদে মাইক পম্পেইয়ের বহাল হওয়া নিয়ে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, তার প্রেক্ষিতেই বাতিল হল ভারত-মার্কিন বৈঠক। গত বছর গ্রীষ্মে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যে বৈঠক হয়েছিল, সেখানেই এই ‘টু প্লাস টু’ আলোচনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। ঠিক হয়েছিল, ২০১৮ সালের ১৮-১৯ এপ্রিল এই আলোচনা হবে। কিন্তু মার্কিন বিদেশ মন্ত্রকের এক আধিকারিকের কথায়, আপাতত এই আলোচনার সময় পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এর পাশাপাশি তিনি এও জানিয়েছেন যে, এই পদক্ষেপের কোনও প্রভাব দু’দেশের পারস্পরিক সম্পর্কে পড়বে না। প্রসঙ্গত, ‘টু প্লাস টু’ আলোচনায় শরিক হওয়ার কথা ছিল ভারতের তরফে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারমণের।