Advertisement
Advertisement
রোহিঙ্গা

‘রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের পক্ষে বিরাট বোঝা’, বলছেন রাষ্ট্রসংঘের প্রাক্তন মহাসচিব

রোহিঙ্গা সংকট মেটাতে মায়ানমার উদ্যোগী নয় বলেও অভিযোগ তাঁর।

Ban ki Moon criticizes Myanmar for its reluctance to take back Rohingyas
Published by: Soumya Mukherjee
  • Posted:July 11, 2019 7:27 pm
  • Updated:July 11, 2019 7:27 pm

সুকুমার সরকার, ঢাকা: রোহিঙ্গা সংকট মিটিয়ে তাদের রাখাইনে বসবাস নিশ্চিত করতে আরও দায়িত্ব নিতে হবে মায়ানমার সরকারকে। বুধবার কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শনের পর এই মন্তব্যই করলেন রাষ্ট্রসংঘের প্রাক্তন মহাসচিব বান কি মুন। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সংখ্যা বাড়ায় প্রভাব পড়েছে পরিবেশে। তা খতিয়ে দেখতে কক্সবাজারে যান গ্লোবাল কমিশন অন অ্যাডাপটেশনের চেয়ারম্যান বান কি মুন। এরপর তিনি বলেন, “মায়ানমার সরকারের অনেক বেশি কিছু করার আছে, যাতে রোহিঙ্গারা নির্ভয়ে তাদের মাতৃভূমিতে ফিরতে পারে।”

[আরও পড়ুন- ‘রোহিঙ্গারা পরিবেশ নষ্ট করছে’, আশ্রয় দিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ শেখ হাসিনার]

সেনা নির্যাতনের ফলে রাখাইন থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। মায়ানমার তাদের ফেরত নেওয়ার আশ্বাস দিলেও তাতে কোনও অগ্রগতি নেই। রাখাইনে নিরাপত্তার সঙ্গে বসবাসের নিশ্চয়তা চায় রোহিঙ্গারা। কিন্তু, মায়ানমার সেই পরিবেশ তৈরিতে গা করছে না বলে অভিযোগ। এর জন্য মায়ানমারকে চাপ দিতে আন্তর্জাতিক মহলে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তাদের উদ্যোগেই বুধবার ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে কক্সবাজারের উখিয়ায় পৌঁছান বান কি মুন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের প্রেসিডেন্ট হিলডা সি হেইন, বিশ্ব ব্যাংকের সিইও ক্রিস্টালিনা জর্জিওভা, বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন।

Advertisement

কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের অধিকাংশই থাকে কুতুপালং ক্যাম্পে। বুধবার মুন ও তাঁর সঙ্গীরা বৃষ্টির মধ্যে কুতুপালংয়ের ২০ নম্বর ক্যাম্পের অস্থায়ী হেলিপ্যাডে নামেন। তারপর সেখান থেকে গাড়িতে করে প্রায় ২০ মিনিটের পথ পাড়ি দিয়ে যান ১৭ নম্বর ক্যাম্পের সমন্বয় অফিসে। এই পথের দুপাশে তাঁদের স্বাগত জানাতে অপেক্ষা করছিল গাছপালা কেটে পাহাড়ের গায়ে তৈরি করা অসহায় রোহিঙ্গাদের ঝুপড়ির পর ঝুপড়ি। ছিন্ন পোশাকের নারী-পুরুষ ও পোশাকহীন অগুণতি শিশু। ১৭ নম্বর ক্যাম্পে পৌঁছনোর আগে রোহিঙ্গাদের যে অবস্থা দেখলেন, তাকে বান কি মুন বর্ণনা করলেন ‘হৃদয় বিদারক এবং বেদনাদায়ক’ ছবি হিসেবে। 

Advertisement

[আরও পড়ুন- আরও সুবিধার ভারত-বাংলাদেশ যাতায়াত, এক সপ্তাহ পরই চালু বেনাপোল এক্সপ্রেস]

পরে বান কি মুন বলেন, “প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়েছে। আজ আমি নিজে দেখলাম, এটা বিরাট ক্ষোভ ও উদ্বেগের বিষয়। আশাকরি, এই সমস্যার একটি সুখকর সমাধান হবে। রোহিঙ্গারা তাদের মাতৃভূমিতে নিরাপদে ও সুষ্ঠুভাবে ফিরতে পারবে। আমি যখন রাষ্ট্রসংঘে কাজ করেছি তখন লক্ষ লক্ষ শরণার্থীদের সাহায্য করেছি। এর মধ্যে সিরিয়ার শরণার্থীরাও ছিল। কিন্তু, আজকে এখানে যা দেখলাম তা সত্যিই হৃদয়বিদারক।”

বাংলাদেশ সরকারের অভিযোগ, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে গিয়ে স্থানীয় পরিবেশের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। ১১ লাখ রোহিঙ্গার বসবাসের জায়গা তৈরি করতে গিয়ে উজাড় হয়েছে বন। কেটে ফেলা হয়েছে পাহাড়। এছাড়া বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য স্থানীয় মানুষদের জীবনে সৃষ্টি হয়েছে নানা প্রতিকূলতা। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়াটা বাংলাদেশের জন্য ‘বিরাট বোঝা’ বলেও উল্লেখ করে বান কি মুন। বলেন, “দীর্ঘ সময়ের জন্য বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া বাংলাদেশের পক্ষে সম্ভব না।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ