Advertisement
Advertisement
শেখ হাসিনা

আইএস-এর হয়ে যুদ্ধ করা বাংলাদেশি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ হাসিনার

আইএস-এর সঙ্গে যুক্ত জঙ্গিদের দেশে ঢোকা রুখতে কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে হাসিনা সরকার।

Bangladesh PM Sheikh Hasina wages war against ISIS.

ফাইল ফটো

Published by: Soumya Mukherjee
  • Posted:May 8, 2019 6:42 pm
  • Updated:May 8, 2019 6:42 pm

সুকুমার সরকার, ঢাকা: সিরিয়া-সহ যেকোন দেশে বাংলাদেশের কোনও নাগরিক যদি আইএস-এর হয়ে যুদ্ধে অংশ নেয়। তবে তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেবে শেখ হাসিনার সরকার। বুধবার একথাই ঘোষণা করা হয়েছে তাদের তরফে।

এপ্রসঙ্গে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, আইএসের হয়ে যুদ্ধ করতে যাওয়া বাংলাদেশি এফটিএফদের বিষয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তারা যাতে দেশে ফিরতে না পারে, সেজন্য ইমিগ্রেশন দপ্তরকে একটি তালিকাও দেওয়া হয়েছে। এরপরও কেউ দেশে ফেরার চেষ্টা করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে আইএস-এর হয়ে যুদ্ধে অংশ নেওয়া মুতাজকে গ্রেপ্তারের পর জেরা করা হচ্ছে। যদিও অনেক বিষয়ে মুখ খুলছে না সে। ধৃতের কাছ থেকে সৌদি আরবের একটি আইডি কার্ড, লাইসেন্স, একটি মোবাইল ফোন, আইএস সম্পর্কিত ম্যাগাজিন-সহ আরও কিছু নথিপত্র পাওয়া গিয়েছে।

Advertisement

ISIS terrorist Mutaj

Advertisement

আইএস জঙ্গি মুতাজ

জানা গিয়েছে, সৌদি আরবে কাজ করার জন্য মুতাজের কাছে যে ওয়ার্ক পারমিট ছিল তার মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়েছে। তুরস্ক থেকে আর সৌদি আরবে ফেরার ইচ্ছা ছিল না তার। তাই পারমিটের মেয়াদ বাড়ানোর কোনও উদ্যোগও নেয়নি। আসলে তার ছক ছিল তুরস্ক থেকে ইউরোপের কোনও দেশে যাওয়ার। বর্তমানে সিরিয়ায় গিয়ে যুদ্ধে অংশ নেওয়ার তথ্য থাকায় এ বিষয়টিকে খুব গুরুত্বের সঙ্গে অনুসন্ধান করা হচ্ছে। গোয়েন্দা
খবরের ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতে তুরস্ক থেকে কারা দেশে ফিরেছে, তাদের সবার তথ্য বিশ্নেষণ করছে পুলিশ।

[আরও পড়ুন- রোহিঙ্গা শিবিরে জনবিস্ফোরণ, ২০ মাসে জন্মেছে লক্ষাধিক শিশু]

পুলিশের এক আধিকারিক জানান, আরবি ছাড়া অন্য কোনও ভাষা না জানায় মুতাজের কাছ থেকে তথ্য নেওয়া দুষ্কর। এর জন্য আরবি জানা একজনের সহায়তায় মুতাজকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সিরিয়ায় গিয়ে যুদ্ধ করার বিষয়টি এখনও অস্বীকার করছে সে। তবে নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে এই বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। সিরিয়ায় যারা আইএসের হয়ে যুদ্ধ করেছে, একাধিক বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা তাদের গতিবিধির ওপর নজর রাখে। মুতাজও এমন একটি গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারিতে ছিল। তার ব্যবহৃত ল্যাপটপ এবং ফোনসেটও সেই গোয়েন্দা সংস্থা তাদের হেফাজতে নিয়েছে।

[আরও পড়ুন- বাসের মধ্যে নার্সকে গণধর্ষণ করে খুন, ফিরল নির্ভয়াকাণ্ডের স্মৃতি]

সৌদিতে জন্ম নিয়ে বেড়ে উঠলেও মুতাজের পাসপোর্ট বাংলাদেশের। সৌদি আরবে থেকেই এটি সে সংগ্রহ করে। এরপর ২০১৬ সালে প্রথম সৌদি আরবের বাইরে পা রাখে মুতাজ। তুরস্কে গিয়ে কিছুদিন পর আবার সৌদি আরবে ফিরে আসে। ২০১৭ সালে ফের তুরস্কে গিয়েছিল সে। ২০১৮ সালে অবৈধভাবে তুরস্ক হয়ে সিরিয়ায় যায় মুতাজ। সেখানে কিছুদিন আইএস-এর হয়ে যুদ্ধ করে তুরস্কে ফিরে এফটিএফের আস্তানায় আশ্রয় নেয়। ওই
আস্তানায় আইএসের হয়ে যুদ্ধ করেছে এমন অনেক সিরিয়া এবং সোমালিয়ার নাগরিকও ছিল।

বাংলাদেশের গোয়েন্দা দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, মুতাজের আরও নয়টি ভাই ও একটি বোন আছে। বাবা মারা যাওয়ার পর সে কিছুদিন সৌদি আরবের জেড্ডায় বড় ভাইয়ের কাপড়ের দোকানে কাজ করে। পরে চাকরি নেয় অন্য প্রতিষ্ঠানে। তবে এর আগে কোনওদিন বাংলাদেশ আসেনি এইচএসসি পাশ মুতাজ আবদুল মজিদ কফিলউদ্দিন ব্যাপারী (২৫)। যদিও তার বাবা কফিলউদ্দিন ব্যাপারীর গ্রামের বাড়ি ছিল শরীয়তপুরের (মাদারীপুর)
সখীপুরে। তবে তারা বসবাস করতেন মূলত সৌদিতে। সেখানে একাধিক বিয়েও করে মুতজার বাবা। এর মধ্যে মুতাজের মা পাকিস্তানি নাগরিক হালিমা। জঙ্গি সংগঠনে জড়িয়ে পড়ার পর সৌদি আরব থেকে সিরিয়ায় যুদ্ধ করতে গিয়েছিল মুতাজ। সেখানে থেকে গত ফেব্রুয়ারিতে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে নামে। তারপর দূরসম্পর্কের এক আত্মীয়ের বাসায় আশ্রয় নেয়। গত রবিবার সেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তারের পর সোমবার আদালতে তুলে চার দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। তারপর থেকে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)-র সদস্যরা মুতাজকে জেরা করছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ