Advertisement
Advertisement

Breaking News

lockdown

ভারতই মডেল! জোন ভাগ করে ফের লকডাউনের পথে হাঁটল বাংলাদেশ

এর ফলে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা কমবে বলেই মনে করছে হাসিনা প্রশাসন।

Bangladesh set to test zone-wise lockdown from Tuesday night

ঢাকার রাজপথ

Published by: Soumya Mukherjee
  • Posted:June 9, 2020 3:00 pm
  • Updated:June 9, 2020 3:05 pm

সুকুমার সরকার, ঢাকা: ‘শ্যাম রাখি না, কুল রাখি’ এই দোটানায় পড়ে জেরবার হাসিনা প্রশাসন। এর আগে করোনার সংক্রমণ রুখতে লকডাউন (lockdown) জারির ফলে মানুষের রুটিরুজিতে টান পড়ছিল। তাই গত ২৭ মে থেকে তুলে দেওয়া লকডাউন। কিন্তু, এর ফলে দ্রুত বেড়ে যায় মৃত্যু ও সংক্রমণ। এখনও পর্যন্ত মোট ৯৩০ জন মারা গিয়েছেন্।  পরিস্থিতি দেখে করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে ভারতের দেখানো পথেই হাঁটল বাংলাদেশ!

করোনা সংক্রমণের ভিত্তিতে বিভিন্ন এলাকাকে রেড, ইয়োলো ও গ্রিন এই তিনটি জোনে ভাগ করে ফের লকডাউনের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপরই ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (DNCC)-এর পূর্ব রাজাবাজার এলাকায় মঙ্গলবার রাত ১২টার পর থেকে লকডাউন জারির ঘোষণা করা হয়। করোনার সংক্রমণ নিয়ে কয়েকদিন ধরে প্রশাসনিক স্তরে প্রচুর আলোচনা চলছিল। এই বিষয়টি নিশ্চিত করে মন্ত্রি পরিষদের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জোন করার অনুমোদন দিয়েছেন। জাতীয় সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে আয়োজিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়।

Advertisement

[আরও পড়ুন: বাড়ছে সংক্রমণ, করোনা রুখতে বাংলাদেশে হাজির চিনের ১০ সদস্যের চিকিৎসকদের দল ]

এদিকে সোমবার রাত আড়াইটের সময় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের পরিচালক মহম্মদ ফখরুল কবির। পান্থপথের স্কয়্যার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন কবির। আর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের উপ-কর কমিশনার সুধাংশু কুমার সাহার মৃত্যু হয় রাত ১১টার সময়। তিনি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভরতি ছিলেন। এছাড়া প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী, শাসকদল আওয়ামি লিগের সংসদ সদস্য মহম্মদ নাসিমের শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। বর্তমানে তিনি লাইফ সাপোর্টে আছেন।

Advertisement

করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে স্বাস্থ্য সচিব বলেন, ‘রেড জোন করলে সবাই তখন সতর্ক হতে পারবে। যে এলাকায় প্রচুর আক্রান্ত থাকেন সেখানে বিশেষভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিয়েছেন। পূর্ব রাজাবাজার এলাকার ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদুর রহমান খান জানান, ইতিমধ্যেই লকডাউনের বিষয়ে পূর্ব রাজাবাজার এলাকার বাসিন্দাদের জানানো হয়েছে করা হয়েছে। এজন্য মাইকিং করা হয়েছে। মসজিদে ঘোষণা করা হয়েছে। ওই এলাকার প্রবেশপথ আটটি। মঙ্গলবার রাত ১২টার পর থেকে সাতটি পথই বন্ধ থাকবে। একটি খোলা থাকবে। সেখানে সর্বক্ষণ পাহারা থাকবে। অতি জরুরি প্রয়োজনে অনুমতি নিয়ে গ্রিন রোড সংলগ্ন ওই রাস্তা দিয়ে আসাযাওয়া করা যাবে। ওই এলাকার লোকজনকে যাতে বাইরে যেতে না হয় সেজন্য সব ধরনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এমনকী পূর্ব রাজাবাজারের বাসিন্দাদের সুবিধার্থে সেখানে করোনা টেস্টের বুথ থেকে শুরু করে আইসোলেশনের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

[আরও পড়ুন: অফিস খোলার প্রথম দিনই রেকর্ড সংক্রমণ, ফের কড়া লকডাউনের পথে বাংলাদেশে]

রেড, ইয়োলো ও গ্রিন জোন ভাগ করে প্রথমে কয়েকটি জায়গায় তা পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হবে। পর্যায়ক্রমে তা অন্যান্য এলাকায় হবে। ইতিমধ্যেই ঢাকার বাইরে অবস্থিত নারায়ণগঞ্জের তিনটি এলাকায় লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় একটি কমিটির অধীনে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলের নেতৃত্বে পুলিশ ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে স্থানীয় মানুষকে সম্পৃক্ত করে কমিটি গঠনের মাধ্যমে লকডাউন বাস্তবায়ন করা হবে। লকডাউন ঘোষিত এলাকায় চলাচল বন্ধ থাকবে। সংক্রমণ রুখতে জোনভিত্তিক ভাগ করে ১৪ থেকে ২১ দিন পর্যন্ত লকডাউন রাখা হবে। রেড জোনে যারা পড়বে তারা ঘর থেকে বের হতে পারবে না। এই সব এলাকায় গরিব ও অসহায়দের ঘরে খাবার ও ওষুধ পৌঁছে দেওয়া হবে। রেড জোনে যদি কোনও বসতি থাকে তাহলে বসতিবাসীদের লকডাউন সময়ের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য দেবে সরকার। এছাড়া লকডাউনের কারণে হঠাৎ কর্মহীন হয়ে পড়া সংশ্লিষ্ট এলাকার লোকদের জন্যও খাবার সংস্থান করা হবে। এই দায়িত্ব পালন করবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রক। রেড জোনে থাকা বাসিন্দাদের কঠোরভাবে বাড়ির মধ্যে থাকতে বাধ্য করা হবে। অফিস, কলকারখানা একবারে বন্ধ থাকবে।

জানা গিয়েছে, তাদের প্রয়োজনীয় মনিহারি দ্রব্য, ওষুধ-সহ অন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। এই কাজের জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গঠন করা হবে। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে এই কাজ সম্পন্ন হবে। পরীক্ষামূলকভাবে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরের কয়েকটি এলাকায় এই লকডাউন করা হচ্ছে। শহরে এর কার্যকারিতা দেখে দেশব্যাপী প্রয়োগের চিন্তা করবেন সরকার। যদি দেখা যায় অবস্থার উন্নতি হচ্ছে তাহলে লকডাউনের সীমা বাড়ানো হবে না। লকডাউন এলাকায় কোনও যানবাহন চলবে না। তবে রাতের বেলায় পণ্যবাহী যান চলাচল করতে পারবে। রেড জোনে থাকার কারণে কোনও চাকরিজীবী ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। কারণ এটি সরকারের ঘোষিত সাধারণ ছুটির আওতায় থাকবে।লকডাউন কার্যকর করতে বিস্তারিত প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কাছে জমা পড়ে। প্রধানমন্ত্রী তাতে সম্মতি জানিয়েছেন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ