মৃত বাংলাদেশের সাংসদ আনোয়ারুলের মেয়ে মুমতারিন ফিরদৌস।
সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশের ঝিনাইদহের সাংসদ আনোয়ারুল আজিমের খুনের তদন্তে উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। আনোয়ারুলকে হত্যা করার পর টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলা হয় দেহ। নারকীয় এই হত্যালীলার রুদ্ধশ্বাস প্রতিক্রিয়া ভারত-বাংলাদেশ দুদেশেই। এমন ভয়ংকর নিষ্ঠুরতা যে সম্ভব তা বিশ্বাসই হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে পুরোটাই দুঃস্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে আনোয়ারুলের মেয়ে মুমতারিন ফিরদৌসের। মৃত্যুর সময় বাবা কতটা কষ্ট পেয়েছিলেন সেটাই বুঝতে চান মুমতারিন। শেষবারের মতো ছুঁয়ে দেখতে চান বাবাকে।
আনোয়ারুলের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা ঝিনাইদহে। প্রিয় সাংসদের এমন ভয়াবহ পরিণতি মেনে নিতে পারছেন না কেউই। অপরাধীদের দ্রুত বিচার চাইছে আনোয়ারুলের পরিবার। শুক্রবার সাংবাদিকদের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন মুমতারিন। তিনি বলেন, “আমার বাবাকে শেষবারের মতো ছুঁয়ে দেখতে চাই। বাবা কতটা কষ্ট পেয়েছে, তা তাঁকে দেখে বুঝতে চাই। মানুষ মানুষকে এমনভাবে কী করে মারতে পারে? এভাবে আমার বাবাকে কেটে কেটে টুকরা করা হয়েছে? আমি জীবনেও ভুলতে পারব না।”
বাবার খুনিদের দ্রুত শাস্তি চেয়ে এদিন মুমতারিন বলেন,”আমার দৃঢ় বিশ্বাস আল্লা এর বিচার করবেন। এই হত্যাকাণ্ডের জন্য অনেক দিন ধরেই তারা পরিকল্পনা করেছে। সাজিয়ে–গুছিয়ে এত বড় একটা অপরাধ ঘটানো হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যার নাম আসছে, তাকে বিদেশ থেকে নিয়ে আসুন। কান টানলে মাথা আসবে। যদি ওর উপরের কেউ থেকে থাকে, তার নামটিও খতিয়ে দেখুন। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তদন্ত করে বিষয়টি দেখুন। রাজনৈতিক–অরাজনৈতিক যেটাই হোক না কেন, সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখুন।”
উল্লেখ্য, কলকাতায় চিকিৎসা করাতে গিয়ে নিউটাউনের ফ্ল্যাটে বাংলাদেশি সুপারি কিলারদের হাতে খুন হয়েছেন আনোয়ারুল। খুনের নেপথ্যে মূল চক্রী হিসাবে অভিযোগের তির তাঁর বন্ধু তথা বাংলাদেশের ব্যবসায়ী আখতারুজ্জামান শাহিনের দিকে। সে টোপ হিসাবে ব্যবহার করে নিজেরই সুন্দরী বান্ধবী শিলাস্তি রহমানকে। বন্ধু সেজে সুপারি কিলাররাই আনোয়ারুলকে নিউ টাউনের ফ্ল্যাটে নিয়ে আসে। বাংলাদেশ পুলিশের কাছ থেকে পশ্চিমবঙ্গের গোয়েন্দারা জেনেছেন, গত ১৩ মে বিকেল চারটে নাগাদ শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় সাংসদকে। এর পর শাহিনের নির্দেশেই তাঁর দেহ টুকরো টুকরো করে কেটে ফ্রিজে রেখে দেওয়া হয়। তার পর ফেলা দেওয়া হয় বিভিন্ন জায়গায়। যদিও এখনও আনোয়ারুলের দেহাবশেষ উদ্ধার করা যায়নি। গোটা ঘটনার তদন্ত করছে ভারত ও বাংলাদেশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.