সুকুমার সরকার, ঢাকা: দেশে প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশ থেকে দেওয়া ৮ হাজার রোহিঙ্গার প্রথম তালিকা যাচাই করে তথ্য স্বীকার করেছে মায়ানমার। সোমবার সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলি। তিনি বলেছেন, মায়ানমারের বিদেশ সচিবের নেতৃত্বে সরকারি দলের প্রতিনিধিরা এই মাসের শেষেই বাংলাদেশে আসছেন। তখন জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সভায় এ নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনা হবে। প্রত্যাবাসনের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে মাহমুদ আলি বলেন, বলার মতো নতুন কিছু নেই। প্রক্রিয়া চলছে।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের নেওয়ার পর তাদের থাকার জন্য রাখাইন প্রদেশে তাদের গ্রামে ঘর তুলতে হবে। এক্ষেত্রে মায়ানমারকে সহযোগিতা করছে ভারত। রাখাইনের মংডু এলাকায় যেখানে রোহিঙ্গাদের বাস, সেখানে ঘর তৈরিতে সহযোগিতার জন্য চিনকেও অনুরোধ করেছেন বলে জানান বিদেশমন্ত্রী। চলতি বছরের জানুয়ারিতে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় গত ফেব্রুয়ারিতে প্রত্যাবাসনের জন্য প্রথম তালিকায় ১৬৭৩টি পরিবারের ৮ হাজার ২ জন রোহিঙ্গার নাম পাঠিয়েছিল বাংলাদেশ। ওই চুক্তিতে দুই বছরের মধ্যে ৭ লাখের মতো রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের লক্ষ্য ঠিক করা হলেও মাত্র আট হাজারের প্রথম তালিকা যাচাই করতেই অনেক সময় নিল মায়ানমার সরকার। বাংলাদেশে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা থাকলেও এই চুক্তি অনুযায়ী শুধু গত বছরের আগস্টের পর থেকে আসা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনের জন্য বিবেচনা করা হচ্ছে। বিভিন্ন সময় নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে ছিল চার লাখের মতো রোহিঙ্গা।
[রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস বিশ্ব ব্যাংকের]
গত বছরের আগস্টে রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর বাংলাদেশ সীমান্তে নামে রোহিঙ্গাদের ঢল। রাষ্ট্রসংঘের ভাষায় মায়ানমারে ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’-এর মুখে শরণার্থী হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা ৭ লাখ ছাড়িয়েছে। এই রোহিঙ্গারা রয়েছে কক্সবাজারের কয়েকটি আশ্রয় শিবিরে। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বিলম্বিত হওয়ায় সেখান থেকে একটি অংশকে নোয়াখালির ভাসানচরে সরিয়ে নিচ্ছে সরকার। জনবহুল বাংলাদেশে এই রোহিঙ্গারা দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতার উপর চাপ সৃষ্টি করছে বলে তাদের ফেরত পাঠাতে চায় ঢাকা। রোহিঙ্গাদের নিজেদের নাগরিক হিসেবে মানতে নারাজ মায়ানমারের সরকার চুক্তি করলেও প্রত্যাবাসনে গড়িমসি করে আসছে বলে বাংলাদেশ সরকারের অভিযোগ। তাই মায়ানমারের উপর চাপ বাড়াতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের উপর আহ্বান জানিয়ে আসছে বাংলাদেশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.