Advertisement
Advertisement

Breaking News

ঐতিহাসিক জয়ের পর মোদির শুভেচ্ছা বার্তায় আপ্লুত হাসিনা

ব্যতিক্রমী নির্বাচনে হামলা থেকে রেহাই সংখ্যালঘুরা হিন্দুদের।

Modi-Mamata wish Sheikh Hasina
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:December 31, 2018 2:40 pm
  • Updated:December 31, 2018 2:40 pm

সুকুমার সরকার, ঢাকা: রবিবার বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ায় আওয়ামি লিগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সোমবার সকালেই অভিনন্দন জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। টুইট করে অভিনন্দন জানিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এর আগে সোমবার সকালে বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে ফোন করে নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ায় অভিনন্দন জানান। তবে এবারের নির্বাচনে তাৎপর্য দিকটি সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর কোনও হিংসার খবর এখনও পর্যন্ত মেলেনি। সপ্তাহ খানেক আগে ফরিদপুর ও ঠাকুরগাঁওয়ে হিন্দুদের ঘর-বাড়ি পুড়িয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হয়েছিল। যেন আওয়ামি লিগের শতভাগ ভোটব্যাংক হিসেবে নিশ্চিত সংখ্যালঘু হিন্দুরা ভোটকেন্দ্রে যেতে ভয় পায়। কিন্তু শেখ হাসিনার প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করায় নির্বাচনের প্রাকমুহূর্ত বা অব্যবহিত পরে কোনও হিংসার খবর পাওয়া যায়নি। এতে সংখ্যালঘু হিন্দুরা যেমন স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন, তেমনই প্রশাসন তথা হাসিনা নিজের ভাবমূর্তি বজায় রেখেছেন। এরশাদের সামরিক ও স্বৈরশাসন অবসানের পর গণতান্ত্রিকভাবে ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ সালে নির্বাচন মুহূর্তে হিংসার ঘটনা ঘটে। অভিযোগের তির ওঠে মৌলবাদি জামাতে ইসলামির বিরুদ্ধে। বাদ যায় না বিএনপির মদত দেওয়ার বিষয়ও। তবে শনিবার রাত থেকে ভোটের দিনের রাত পর্যন্ত সংঘর্ষে মারা গিয়েছেন ১৭ জন। এরমধ্যে শাসকদলের কর্মী বেশি। টানা তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এবং নির্বাচনী প্রচারে দলের নেতা-কর্মীদের সরব উপস্থিতি মহাজোটের বড় ব্যবধানে জয়ী হওয়ার নিয়ামক হিসাবে কাজ করেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশের প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বার্তা পেয়ে আপ্লুত শেখ হাসিনা। মোদি টেলিফোনে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামি লিগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে তাঁর দল বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ায় শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। সরকার গঠন করার জন্য প্রয়োজনীয় ১৫১ আসনের গণ্ডি অনায়াসে পার করে নির্বাচনে আধিপত্য বজায় রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইঙ্গিত আগেই পাওয়া গিয়েছিল। বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ফের বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর আসন দখলে রেখে তা বাস্তবায়িত করলেন শেখ হাসিনা। গোপালগঞ্জ-৩ আসনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন আওয়ামি লিগ নেত্রী। একইভাবে বিরোধীদের নিশ্চিহ্ন করে জাতীয় সংসদের অধিকাংশ আসন দখল করল তাঁর দল আওয়ামি লিগ। নির্বাচনে বিপুল জয় সত্ত্বেও এখনই কোনও উৎসব মিছিল না করার জন্য কর্মী-সমর্থকদের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন হাসিনা। ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদিক বৈঠক করে লিগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এখন আনন্দ মিছিল করার সময় নয়। এখন দেশ গঠনের সময়।

Advertisement

[রিলে বাজিমাত করলেও নির্বাচনে কুপোকাত হিরো আলম]

তবে এই ভোটের ফলাফলকে মানতে নারাজ বিরোধীরা। প্রশাসন ও শাসকদলের বিরুদ্ধে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ করে পুনরায় ভোটগ্রহণের দাবি জানিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা কামাল হোসেন। একইসঙ্গে নির্দলীয় সরকারের অধীনে ভোট করানোর তিনি দাবি জানিয়েছেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৯ আসনের মধ্যে ২৮৮ আসন পেয়ে বিশাল জয় পেয়েছে আওয়ামি লিগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট। বিপুল ভোটে এই রেকর্ড জয়ে টানা তৃতীয়বারের (হ্যাটট্রিক) মতো সরকার গঠন করবে ক্ষমতাসীন জোট। শাসকদল আওয়ামি লিগ পেয়েছে ২৫৯টি আসন। বিএনপি পেয়েছে ৬টি এবং আওয়ামি লিগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের পুরানো শরিকদল জাতীয় পার্টি পেয়েছে ২২টি আসন। টানা ১০ বছর ক্ষমতায় থাকা এই জোট ইতিহাস সৃষ্টিকারী জয় পেলেও তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ভরাডুবি হয়েছে। নির্বাচন-পরবর্তী করণীয় নির্ধারণে আজ, সোমবার বিকেলে জরুরি বৈঠকে ডেকেছেন বিএনপির নীতিনির্ধারকরা। বিকেল ৪টায় গুলশান কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এরপর হবে ২০ দলীয় জোটের বৈঠক। ইতিমধ্যেই অবিলম্বে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে জোটটি। এমন পরিস্থিতিতে দল ও জোটের করণীয় চূড়ান্তে জরুরি বৈঠক ডাকা হয়। ১৯৯১ সালে সংসদীয় গণতন্ত্র চালুর পর এবারই প্রথম বিএনপি সবচেয়ে কম আসন পেয়েছে। দলটির বেশ কয়েকজন প্রার্থীর জমানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। অনেক স্থানে আওয়ামি লিগের মহাজোট প্রার্থীর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েছেন ইসলামি আন্দোলনের প্রার্থীরা। সোমবার ভোর চারটেয় ২৯৮টি আসনের বেসরকারি ফল ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হেলালুদ্দিন আহমেদ। এতে বাংলাদেশ আওয়ামি লিগ (নৌকা) ২৫৯টি আসন পেয়ে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসন পেয়েছে জাতীয় পার্টি (লাঙল) ২০টি।

[নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় আওয়ামি লিগের, লুপ্তপ্রায় বিএনপি]

আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবন চত্ত্বরে নির্বাচনী তথ্য সরবরাহ কেন্দ্রে প্রার্থীর মৃত্যুজনিত কারণে একটি আসনের নির্বাচন আগেই স্থগিত করা হয়েছিল। ওই আসনে আগামী ২৭ জানুয়ারি ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি আসনের তিন কেন্দ্রের ভোট স্থগিত রয়েছে। বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট জোটগতভাবে পেয়েছে ৮টি আসন। বিএনপি ৬টি ও গণফোরাম একজন ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া ১টি আসনে জয়ী হয়েছে। এছাড়া মহাজোটের শরিক বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি ৩, বিকল্পধারা বাংলাদেশ ২, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ২, তরিকত ফেডারেশন ১, জাতীয় পার্টি (জেপি) ১ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ২টি আসনে জয়ী হয়েছে। মহাজোটের শরিকরা ২৯টি আসন পেলেও ২০ দলের শরিক দলগুলো একটি আসনেও জয়ী হতে পারেনি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ