পলাশ পাত্র, তেহট্ট: খোদ প্রশাসনিক ভবনে বসে আধিকারিকের সই জাল করে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে এক করণিককে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। ধৃত করণিকের নাম রাজেশ রায়, হালিশহরের বাসিন্দা। কৃষ্ণনগর আদালতে তোলা হলে এমন গুরুতর অভিযোগে বিচারক তাকে ৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। এর আগেও বেশ কয়েকবার এই রাজেশ রায় আর্থিক দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছিল বলে অভিযোগ।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে রাজেশ নদিয়ার প্রশাসনিক ভবনে আর্মস বিভাগের ক্লার্ক পদে যোগ দেন। কৃষ্ণনগরেই তার পোস্টিং ছিল। কাজে যোগ দেওয়ার কিছুদিনের মধ্যে একাধিক রাজনৈতিক প্রভাবশালী কর্তাদের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ গড়ে ওঠে। অভিযোগ, একাধিক অর্থনৈতিক দুর্নীতির সঙ্গে সে জড়িয়ে পড়েছিল। ইতিমধ্যে প্রশাসনিক কর্তাদের কাছে অভিযোগ আসছিল, এই ইউডিসি আধিকারিক রাকেশ টাপ্পোর সই জাল করে আগ্নেয়াস্ত্রর লাইসেন্স পাইয়ে দিচ্ছে এই রাজেশ। গুরুতর এই অভিযোগ পৌঁছায় জেলাশাসক বিভু গোয়েলের কাছেও। গত দেড় সপ্তাহের মধ্যে একাধিক জনের কাছ থেকে জেলাশাসকের দপ্তরে এই অভিযোগ জমা পড়ে।
জেলাশাসক বিভু গোয়েল এ নিয়ে বিভাগীয় তদন্ত করতে নেমে তাঁর চোখ ছানাবড়া হয়ে যাওয়ার উপক্রম। ঘটনা প্রসঙ্গে জেলাশাসক বলেন, ‘আমার কাছে এনিয়ে অনেকে অভিযোগ করছিলেন। লাইসেন্সগুলো পরীক্ষা করে দেখলাম, ফেক লেটার। উনি যে মেমো দিয়েছিলেন, তার সঙ্গে আমার যে রেজিস্ট্রার আছে, তা মিলছে না। অফিসার-ইন-চার্জের সঙ্গে কথা বললাম। বুঝলাম, জাল আছে। তারপরই অভিযোগ করা হয়। পুলিশ তদন্ত করছে।’
২০১৮ সালে অর্থের বিনিময়ে তফসিলি শংসাপত্র পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে প্রশাসনিক মহলে তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল। তারপর ফের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নিয়ে ওই দপ্তরের আধিকারিক তথা ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট রাকেশ টাপ্পো নদিয়া জেলাশাসকের নির্দেশে পুলিশের কাছে এই জালিয়াতি নিয়ে অভিযোগ করেন। ১৮ অক্টোবর অভিযোগ পাওয়ার পর এদিন ইউডিসি-র করণিক অভিযুক্ত রাজেশ রায়কে পুলিশ গ্রেপ্তার
করে। এই ঘটনায় জেলা প্রশাসনিক মহলে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। আগ্নেয়াস্ত্রের মতো নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে এ ধরনের জালিয়াতি নি:সন্দেহে কপালে ভাঁজ পড়ার বিষয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.