Advertisement
Advertisement

Breaking News

লকডাউনে

লকডাউনে রেললাইন ধরে হেঁটে ঘরে ফেরার চেষ্টা, মালগাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকের

হেঁটে ১৫০ কিমি অতিক্রমের পর ঘটে দুর্ঘটনা।

A labour of purulia returning from midnapore died in accident on friday morning
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:April 26, 2020 11:41 am
  • Updated:April 26, 2020 11:45 am

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: রেললাইন ধরে হেঁটে বাড়ি ফিরবেন ভেবেছিলেন। কিন্তু প্রায় দেড়শো কিমি হেঁটেও ঘরে ফেরা হল না বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকের। মালগাড়ির ধাক্কায় থমকে গেল জীবন। বস্তা বন্দি হয়ে খন্ড-বিখন্ড দেহ পৌঁছল পুরুলিয়ায় দীর্ঘদিনের ভিটেয়। চোখের জল যেন বাঁধ মানছে না পরিবারের সদস্যদের।

পেটের টানে বাবা, মা, স্ত্রী ও এগারো মাসের পুত্র সন্তানকে ঘরে ফেলে নির্মাণ শ্রমিকের কাজে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পিংলা থানার হাদল গ্রামে গিয়েছিলেন পুরুলিয়ার অক্ষয় মাহাতো। এলাকারই একাধিক যুবকের সঙ্গে সেতু তৈরির কাজ করছিলেন বছর ২৭-এর ওই যুবক। আচমকাই করোনা সংক্রমণ এড়াতে দেশজুড়ে জারি হয় লকডাউন। ফলে কর্মস্থলেই আটকে পড়েন অক্ষয়। প্রায় মাসখানেক ঠিকাদার সংস্থার অধীনে কোনওভাবে দিন কাটে তাঁদের। কিন্তু সেখানে সেভাবে মিলছিল না খাবার। সেই সঙ্গে শেষ হয়ে আসছিল জমানো টাকা। তাই যে কোনও মূল্যে বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নেয় অক্ষয়। পিংলা থেকে রাস্তা, জঙ্গল পার হয়ে খড়গপুর ডিভিশনের জগপুর এলাকায় রেললাইনের ট্র্যাকে ওঠেন। হাঁটাপথে রাস্তা ভুলে যাবেন বলেই বোধহয় রেললাইন ধরে আসার সিদ্ধান্ত। কিন্তু সেটাই কাল হল! জগপুর থেকে ভাদুতলা আসতেই শুক্রবার ভোররাতে তাঁকে পেছন থেকে ছিন্ন ভিন্ন করে দিয়ে যায় একটি পণ্যবাহী ট্রেন। পরে সকাল দিকে ঘটনার খবর পেয়ে চন্দ্রকোনা জিআরপির মৃতদেহ উদ্ধার করে বাঁকুড়া ময়নাতদন্তে পাঠায়। তারপর ওই দিন রাতে কোনাপাড়ার গ্রামে বস্তাবন্দি হয়ে আসে মৃতদেহ।

Advertisement

[আরও পড়ুন: মিড-ডে মিলের সঙ্গে স্কুলপড়ুয়াদের বিস্কুট-সাবান দেওয়ায় ভৎর্সনা! প্রধান শিক্ষককে শোকজ]

পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্যর প্রাণ চলে যাওয়ায় দিশাহীন গোটা পরিবার। স্ত্রী ভাদুরানি মাহাতো বলেন, “ফোনে কথা হয়েছিল। বলেছিল শনিবারের মধ্যে বাড়ি ফিরবেই। কিন্তু এল একদিন আগেই। তবে খন্ড-বিখন্ড হয়ে।” কোলের সন্তানকে নিয়ে অঝোড়ে কেঁদে চলেছেন তিনি। বলেন, “এরপর কিভাবে সংসার চলবে জানি না। মনে হচ্ছে সব শেষ হয়ে গেল। এই দুধের শিশুকে কিভাবে বড় করব বলুন?” চোখে জল গোটা কোনাপাড়ারই। দাহ শেষে শনিবার সেখানে যান এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণী কল্যাণ বিভাগের রাষ্ট্রমন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু ও পুরুলিয়া জেলা পরিষদের শিক্ষা-সংস্কৃতি-তথ্য-ক্রীড়া স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ গুরুপদ টুডু। পরিবারকে আর্থিক সাহায্য দিয়ে পাশে থাকার আশ্বাস দেন মন্ত্রী। তাঁর কথায়, “দলের তরফে আমরা সবসময় আছি। আপনাদের কোনও সমস্যা হবে না।” এই নিয়ে দুর্ঘটনায় পুরুলিয়ায় চার পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হল। তার মধ্যে মানবাজার বিধানসভারই তিন। লকডাউনের ধাক্কায় আর কত প্রাণ যাবে পরিযায়ী শ্রমিকের? আতঙ্কে কাঁটা পুরুলিয়া।

Advertisement

ছবি: সুনীতা সিং

[আরও পড়ুন: লকডাউন অফার! বাড়িতে বসে সবজি কিনলেই স‌্যানিটাইজার ফ্রি]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ