ছবি: প্রতীকী
কল্যাণ চন্দ্র, বহরমপুর: অতিরিক্ত পণের দাবিতে বধূকে নির্যাতন। পণ না মেলায় স্ত্রীর মাথা নেড়া করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া থানার সলুয়া বিলধারী পাড়া এলাকায় স্বামী-সহ শ্বশুর শাশুড়ির বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত স্বামীকে আটক করেছে পুলিশ। পলাতক শ্বশুর-শাশুড়ি।
বছর দুয়েক আগে ইসলামপুর থানার নশিপুর গ্রামের রাকিবা খাতুনের সঙ্গে হরিহরপাড়া থানার সলুয়া বিলধারী পাড়ার পেশায় রাজমিস্ত্রি আবদুল্লা শেখের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় নগদ এক লক্ষ টাকা-সহ সোনার গয়না পণ হিসাবে দেওয়া হয়েছিল। বিয়ের কয়েক মাস পরে অতিরিক্ত পণের দাবি করা হয় বলে অভিযোগ। পণ না মেলায় শুরু হয় বধূ নির্যাতন। রাকিবা জানান, শ্বশুরবাড়ির চাহিদামতো মোট চার লক্ষ টাকা দিয়েছেন তাঁর বাবা মা।
তাঁর দৃষ্টিহীন বাবা-মা মুম্বইয়ে ভিক্ষা করে ওই টাকা দিয়েছেন। তিনমাস আগে তাঁর কন্যাসন্তান হওয়ার পর অত্যাচার বাড়ে। একমাস আগে বাপের বাড়ি থেকে দু’লক্ষ টাকা আনতে বলা হয়েছিল। সেই টাকা দিতে না পারায় ১৮ জুন সকালে তাঁর মাথার সব চুল কেটে নেড়া করে দেওয়া হয়েছে। রাকিবা বলেন, “স্বামী চুল কাটছিল, আর শ্বশুর-শাশুড়ি আমার হাত-পা ধরে রেখেছিলেন।”
মাথা নেড়ার খবর বাপের বাড়িতে পৌঁছতেই ওই গ্রামের লোকজন বধূকে ওইদিন সন্ধেয় উদ্ধার করে ইসলামপুরে নিয়ে যান। এরপর নির্যাতিতা বাপের বাড়ির লোকজনকে নিয়ে হরিহরপাড়া থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে অভিযুক্ত স্বামী আবদুল্লা শেখকে আটক করেছে পুলিশ। হরিহরপাড়া থানার পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে বধূর স্বামীকে আটক করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেপ্তার করা হতেও পারে। আরও দুই অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
এদিকে নির্যাতিতা গৃহবধূ জানান, মাথা নেড়া করে দেওয়ার পর লজ্জায় বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না। স্বামী-সহ শ্বশুর-শাশুড়ির উপযুক্ত শাস্তি চান। এদিন আক্ষেপের সঙ্গে নির্যাতিতা বলেন, “আমি মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। পরীক্ষার সময় সন্তান হয়। তাই আর পরীক্ষা দিতে পারিনি। এই সংসারের জন্য অনেক কিছু করেছি। কিন্তু সেই সংসারের সদস্যরাই মাথা নেড়া করে দিল আমার।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.