Advertisement
Advertisement
গণপিটুনি

ছেলেধরা সন্দেহে সরকারি হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ রোগীকে মার, মৃত্যু যুবকের

প্রশ্নের মুখে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের নিরাপত্তা।

A patient allegedly beaten to death in Durgapur Sub division Hospital
Published by: Sayani Sen
  • Posted:September 26, 2019 7:56 pm
  • Updated:September 26, 2019 9:04 pm

সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে মৃত্যু হল দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ রোগীর। কয়েকঘন্টা আগেই যে রোগীর নাম পরিচয় সব ছিল হাসপাতালের খাতায়, সেই তিনিই দীর্ঘক্ষণ অজ্ঞাতপরিচয় লাশ হিসাবে পড়ে রইলেন মর্গে। চারদিন পর পাওয়া যায় পরিচয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগে সরব মৃতের পরিবার।

[আরও পড়ুন: অনিল বসুর স্মরণসভায় যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা, সার্কুলার জারি সিপিএমের]

অন্ডাল থানার কাজোরার ফরিদপুরের বাসিন্দা বছর তেইশের বিনোন্দা গোপ গত ২১ সেপ্টেম্বর দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে জ্বর নিয়ে ভরতি হন। পরিবারের দাবি, পরের দিন হাসপাতাল থেকেই নিখোঁজ হয়ে যান তিনি। সেই দিনই নিউটাউনিশিপ থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। গত ২৪ সেপ্টেম্বর বিনোন্দার পরিবারের তরফে আরেকটি নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। হাসপাতাল থেকে হাতে স্যালাইনের নল লাগানো অবস্থাতেই বিনোন্দা এদিক-ওদিক ঘুরতে থাকে। কোকওভেন থানার দাবি, ২৩ সেপ্টেম্বর সদানন্দকে আমবাগান এলাকায় উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরতে দেখে স্থানীয়রা ছেলেধরা ভেবেই তাঁকে গণপিটুনি দেয়। সেখানেই সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন তিনি। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসে। কিন্তু চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন তিনি মারা গিয়েছেন। তারপর থেকেই বিনোন্দার দেহ পড়েছিল মহকুমা হাসপাতালের মর্গে।

Advertisement

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে হাসপাতালেরই রোগীকে কীভাবে চিনতে পারলেন না হাসপাতালেরই কর্মী ও চিকিৎসকরা? হাসপাতাল থেকে সবার নজর এড়িয়ে সে পালালোই বা কীভাবে? এই প্রসঙ্গে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার দেবব্রত দাস জানান,“মৃত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে জরুরি বিভাগে আনা হয়। সেখান থেকেই মর্গে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। যে ওয়ার্ডে ভরতি ছিলেন ওই ব্যক্তি, তাঁকে সেই ওয়ার্ডের কর্মীরা চিনতে পেরেছিলেন। তবে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক বা কর্মীদের পক্ষে তাঁকে চেনা সম্ভব নয়। আমরা হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে সবসময়ই সতর্ক। কিন্তু এই রোগী ভিজিটিং আওয়ারে বেরিয়ে যাওয়ায় তাঁকে আটকানো যায়নি।” নিহত বিনোন্দার দাদা তরুণ গোপ বলেন, “বৃহস্পতিবার রাতে নিউটাউনিশিপ থানা থেকে আমাদের ফোন করে বলা হয় হাসপাতালে দু’টি অজ্ঞাতপরিচয় দেহ আছে। শনাক্ত করতে বলা হয়। আমরা বিনোন্দার দেহ শনাক্ত করি। দুর্গাপুর জুড়ে ছেলেধরা আতঙ্ক কেন বাড়ছে বুঝতে পারছিনা। আমার ভাইয়েরও মৃত্যু হয়েছে এই সন্দেহের জেরেই। যারা গুজব রটাচ্ছে তাদেরও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দিক পুলিশ।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: পারিবারিক অশান্তির জেরে স্ত্রীকে খুন, গ্রেপ্তার স্বামী]

এক নিখোঁজ রোগীর ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির জেরে মৃত্যুর ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই পুলিশও বেশ অস্বস্তিতে। এই ঘটনায় কোকওভেন থানার পুলিশ স্বতঃপ্রনোদিত হয়ে আটজনের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বীরভানপুরের আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশের ডিসি-১ (পূর্ব) অভিষেক গুপ্তা জানান,“হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ ছিলেন মৃত যুবক। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে তাকে মারধর করা হয়েছে। পুলিশ উদ্ধার করে। হাসপাতালে ভরতির পর মারা যায়। এই ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।”

ছবি: উদয়ন গুহ রায়

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ