Advertisement
Advertisement

Breaking News

উচ্চ মাধ্যমিক

মূলধন অদম্য জেদ, টোটোয় হুইলচেয়ার বেঁধে পরীক্ষাকেন্দ্রে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী

এই লড়াই দেখে সাদ্দামকে কুর্নিশ জানিয়েছেন শিক্ষকরাও।

A physically challenged youth of Burdwan appear higher secondary
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:March 14, 2020 8:49 pm
  • Updated:March 14, 2020 8:49 pm

সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: সকলের চোখে সে বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন। হাত-পা অসাড়। কিন্তু তাতে কী, মনের জোরে সাদ্দাম খান যে সকলকেই টেক্কা দিতে পারে তা প্রমাণ করে দিল সে নিজেই। টোটোর পিছনে হুইল চেয়ার বেঁধে প্রায় দশ কিলোমিটার দূর থেকে উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে গেল সে। তাঁর মনের জোর অবাক করে শিক্ষকদেরও। এরপরই শিক্ষক ও স্কুল শিক্ষা দপ্তরের লাউদোহা সার্কেলের আধিকারিকদের আবেদনে সাড়া দিয়ে সাদ্দামের জন্য গাড়ি ও আর্থিক সাহায্যের ব্যবস্থা করলেন জেলা পরিষদের কর্মাধ্যাক্ষ ও তৃণমূলের দুর্গাপুর ফরিদপুর ব্লকের সভাপতি সুজিত মুখোপাধ্যায়।

পাণ্ডবেশ্বর রেলগেট এলাকার হুসেন পাড়ায় চার বোন, দুই ভাই ও বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকে সাদ্দাম আলি। জন্ম থেকেই বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন সে। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে প্রতিবন্ধকতাও। পেশায় গাড়িচালক বাবা সাজির খান প্রবল আর্থিক অনটনের মধ্যে দিয়েও ৭ সন্তানকে লেখাপড়া শিখিয়েছেন। এবছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে সাদ্দাম। প্রথম দিন টোটোর পেছনে নিজের হুইল চেয়ার বেঁধে প্রায় দশ কিলোমিটার দূরে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁয়ে গিয়েছিল সাদ্দাম। টোটোয় বসেছিলেন মা। পরীক্ষা কেন্দ্রের সামনে এসে বাঁধন খুলে হুইল চেয়ার নিয়ে নিজেই পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকে যায় সাদ্দাম। তাঁর লড়াই দেখে তাজ্জব হয়ে যান পরীক্ষাকেন্দ্রের শিক্ষকরা। প্রথম দিনেই সাদ্দামের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে আসেন তাঁরা। কথা বলেন জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ সুজিত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। সুজিতবাবু নিজে গিয়ে সাদ্দামকে দেখেন, কথা বলেন। এরপর পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারির নির্দেশে সুজিতবাবু সাদ্দামের জন্য একটি গাড়ির ব্যবস্থা করেন। সেই গাড়িতেই পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছবে সাদ্দাম। সেই সঙ্গে আর্থিক সাহায্যেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।

Advertisement

SADDAM-HS-2

Advertisement

[আরও পড়ুন: মেলেনি অ্যাম্বুল্যান্স, বেলেঘাটা আইডিতে রেফারের পরও বনগাঁ হাসপাতালে পড়ে বৃদ্ধ]

সাদ্দামের মা সাজির খানের কথায়, “অনেক কষ্টে ছেলে মেয়েদের পড়াশোনা করাচ্ছি। কেউ পাশে দাঁড়ায়নি। এবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে নিষেধ করেছিলাম সাদ্দামকে। কিন্তু ও জেদ ধরেছিল। প্রথম দিন টোটোর পেছনে হুইল চেয়ার বেঁধে ওকে আসতে দেখে চোখ দিয়ে জল বেরিয়ে গিয়েছিল আমারই। ওর আসা যাওয়ার ব্যাবস্থা করে দেওয়ার জন্যে সুজিতবাবুকে ধন্যবাদ।” তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ও জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ সুজিত মুখোপাধ্যায় জানান, “স্কুল থেকে আমাকে সাদ্দামের ব্যাপারে জানাতেই আমি বিধায়কের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তারই নির্দেশে আমি ওর যাতায়াতের ব্যাবস্থা করি। ওর লড়াইয়েক শরিক হতে পেরে নিজেকে
গর্বিত মনে হচ্ছে।”

ছবি: উদয়ন গুহরায়

[আরও পড়ুন: ‘৩৩ কোটি দেবদেবীর দেশ ভারত, করোনা কিছু করতে পারবে না’, নয়া তত্ত্ব কৈলাসের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ