Advertisement
Advertisement

Breaking News

‘পরে কিনব ক্রিকেট কিট’, স্বপ্ন বিসর্জন দিয়ে ত্রাণের জন্য সঞ্চিত অর্থ দান ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রের

শিষ্যের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন তার ক্রিকেট কোচও।

A student of class six donate his savings to relief fund
Published by: Bishakha Pal
  • Posted:April 16, 2020 11:48 am
  • Updated:April 16, 2020 2:57 pm

সংগ্রাম সিংহরায়, শিলিগুড়ি: নিজের এক বছর ধরে তিলে তিলে জমানো ব্যাট-প্যাড কেনার দু’হাজার টাকা করোনায় আক্রান্তদের সাহায্যার্থে তুলে দিল শিলিগুড়ির হাকিম পাড়ার নিগমপল্লির বাসিন্দা অরিত্র সান্যাল। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, যাঁরা বছরভর দুস্থদের সেবায় কাজ করেন, তাঁদের প্রতিনিধিদের ডেকে, সঞ্চিত অর্থ তুলে দিল বছর এগারোর কিশোর। তার এই উদ্যোগে চোখে জল ওই সংগঠনের সদস্যদের পাশাপাশি বাবা শুভজিৎবাবুরও। এতদিনের গড়ে তোলা স্বপ্ন এক মুহূর্তে যেভাবে সমস্ত মোহ ত্যাগ করে তুলে দিল অরিত্র, তা নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন অনেকে। অরিত্রর এই উদ্যোগকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন তার ক্রিকেট কোচ জয়ন্ত ভৌমিকও। জয়ন্তবাবু জানিয়েছেন, “অরিত্র এমনিতে ছাত্র হিসেবে খুব মনোযোগী। মনের মধ্যে সংকল্প রয়েছে। তবে তা অনেকেরই থাকে। এভাবে এত অল্প বয়সে পার্থিব জিনিসের প্রতি মোহত্যাগ খুব কম মানুষের মধ্যেই থাকে আমরা গর্বিত।”

বয়স মাত্র ১১। শিলিগুড়ি বয়েজ হাই স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র অরিত্র সান্যাল। চোখে বড় ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন। সেই লক্ষ্যেই শিলিগুড়ির অগ্রগামী সংঘ নিয়মিত প্র্যাকটিস করে সে। বাবা শুভজিৎবাবু পেশায় ছোটখাটো মাল সরবরাহের ব্যবসা। ফলে ক্রিকেটের কিট কেনা, তার কাছে চাইলেই পাওয়ার মতো ব্যাপার নয়। তাই গত প্রায় এক বছর ধরে দশ-কুড়ি, পঞ্চাশ টাকা করে ব্যাট-প্যাড কেনার জন্য জমাচ্ছিল সে। শুভজিৎবাবু জানান, তিনি নিজেও বেশ কিছু সমাজসেবামূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকেন। সেই থেকেই ছেলেও মাঝেমধ্যে তার সঙ্গে এর আগে বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছে। এবারও যখন টিভিতে খবরের কাগজে করোনা আক্রমণ এবং তার ফলে লকডাউনের সময়ে দুস্থদের দুরাবস্থার কথা জানতে পারে, ভিতরে ভিতরে মুষড়ে পড়ছিল সে। তাই এত দিনের শখ ক্রিকেট ব্যাট কেনা আপাতত মুলতবি রেখে সেই টাকা কোনও স্বীকৃত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের হাতে তুলে দেওয়ার বিষয়টি মনস্থির করে।

Advertisement

[ আরও পড়ুন: করোনায় কাটছাঁট পুজোয়, অর্থের পুরোটাই ত্রাণের কাজে লাগাচ্ছে বার্নপুরের ক্লাব ]

সেই মতো তাঁরা ইউনিক সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি নামে একটি সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের বাড়িতে ডেকে নেয়। সংগঠনের প্রতিনিধি শক্তি পাল জানিয়েছেন, তাঁরা এর আগেও এমন অনেক উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু এত কমবয়সী দাতা এখনও পর্যন্ত দেখেননি তিনি। বলেন, “যেভাবে নিজের স্বপ্নকে বিসর্জন দিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সংকল্প করেছে অরিত্র, তা সাধুবাদের যোগ্য।” আর যাকে নিয়ে এত হইচই, সেই অরিত্র কি বলছে? সে অবশ্য সাফ জানিয়েছে, “অনেকেই খেতে পারছে না। প্রায়ই সংবাদমাধ্যমে দেখছি। আমরা তো খেতে পাই! মাঝেমধ্যে মাছ-ডিমও জুটে যাচ্ছে। তাই অনেকেই না খেয়ে থাকবে, সেটা আমার ভালো লাগেনি। খুব কষ্ট হচ্ছিল। ক্রিকেট কিট না হয় আরও এক বছর দেরিতে কিনব। আপাতত কিছুটা হলেও অন্তত কয়েকজন খেয়ে পরে বাঁচবে।” সংগঠনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ওই টাকায় তারা দু’বস্তা চাল কিনে বিভিন্ন জায়গায় বিলি করবেন।

Advertisement

[ আরও পড়ুন: কলকাতায় কর্মরত অবস্থায় করোনায় আক্রান্ত বারাসতের জুনিয়র ডাক্তার, এলাকায় আতঙ্ক ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ