সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্টেশনই আশ্রয়, স্টেশনই সাধনাস্থল৷ দিনভর হইচই, চেঁচামেচির মধ্যেও তিনি নিমগ্ন সুরের জগতে৷ বাকি জগতের অস্তিত্ব ভুলে একমনে গেয়ে চলেছেন লতা মঙ্গেশকরের কণ্ঠে বিখ্যাত গান, ‘এক প্যার কা নাগমা হ্যায়৷’ রেলযাত্রীদের মোবাইলের দৌলতে দিন কয়েক ধরে রানাঘাট স্টেশনের এই মহিলাই এখন সোশ্যাল মিডিয়ার নতুন সুরসম্রাজ্ঞী হয়ে উঠেছেন৷
[ আরও পড়ুন: মন গলল দাদুর, হোম থেকে অসহায় নাতি-নাতনিদের বাড়ি ফিরিয়ে আনলেন]
পরনের শাড়িটি ছেঁড়া৷ ব্লাউজের রং ফিকে৷ চুলে জট৷ অনেকদিনের স্নান না করা, ক্লান্ত চেহারা৷ গোটা চেহারাতেই জীবন সংগ্রামের ছাপ স্পষ্ট৷ তাতে কী? এসব তাঁর সুরসাধনায় কোনও বাধাই সৃষ্টি করতে পারেনি৷ অমলিন মুখের হাসিটি৷ স্টেশনের একপাশে বসেই দিনভর তিনি গেয়েই চলেছেন কোকিলকণ্ঠীর গান – ‘এক প্যার কা নাগমা হ্যায়/মওজ কি রওয়ানি হ্যায়/জিন্দেগি অউর কুছ ভি নহি/ তেরি-মেরি কাহানি হ্যায়…’৷ কী নিঁখুত নোট, কী সুরেলা কণ্ঠ! কোথাও একচুল কোনও ভুলভ্রান্তি নেই৷ একবার এই গান কানে এলেই থমকে দাঁড়িয়ে পড়তে হয়৷ মন দিয়ে গান শুনলে মনে হচ্ছে যেন, মা সরস্বতী স্বয়ং যেন তাঁর কণ্ঠে বাস করেন৷ মনে হচ্ছে, আশেপাশে চরাচরব্যপী সব কিছু উধাও৷ যেন দাঁড়িয়ে রয়েছেন এক সুরের জগতে,যেখানে কেবলই সুর-তাল-লয়ের খেলা চলছে সর্বক্ষণ৷ আপনি নিজেও যেন সেই খেলার একজন সাথী৷
রানাঘাট স্টেশন চত্বরে এমন এক মহিলার দেখা পেয়ে সত্যিই তাজ্জব রেলযাত্রীরা৷ এক যাত্রীই এঁর সঙ্গীত সাধনার ভিডিও তুলে শেয়ার করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। গত রবিবার ফেসবুকে এই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত লক্ষাধিক মানুষ তাঁর গান শুনে গুণমুগ্ধ হয়ে পড়েছেন৷ আবেগপ্রবণ হয়ে অনেকেই লিখেছেন, “জীবনের সব কষ্ট ভুলে যেভাবে উনি গাইছেন, তা চোখে জল এনে দেয়।” কেউ বা লিখেছেন, “বলিউডের এই ক্লাসিক লতাজির গাওয়া অন্যতম অনবদ্য গান। এই মহিলাও ঠিক ততটাই ভালো গেয়েছেন।” তাঁর কিন্তু এদিকে কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই৷ তিনি কেবল আপনমনে গেয়ে চলেছেন, ‘…জিন্দেগি অউর কুছ ভি নেই, তেরি-মেরি কহানি হ্যায়’৷
[ আরও পড়ুন: সদস্য হলেই বসাতে হচ্ছে গাছ, পুরুলিয়াকে সবুজ করতে উদ্যোগ বিজেপির়়]