ধীমান রায়, কাটোয়া: সাতসকালে ভিনজেলায় কর্মরত শ্রমিকের দেহ বাড়ির উঠোনে ফেলে যাওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামে। কারা ফেলে গেল দেহ, এ বিষয়ে এখনও ধোঁয়াশায় পরিবার। ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন গুসকরা ফাঁড়ির পুলিশ আধিকারিকরা। শুরু হয়েছে তদন্ত। এই ঘটনায় এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে করোনা আতঙ্ক।
জানা গিয়েছে, বুধবার সকাল ১০ টা নাগাদ একটি গাড়িতে করে অচেনা দুই যুবক কবিরাজ মারডি (৪০) নামে ওই ব্যক্তিকে বাড়ির উঠোনে ফেলে রেখে যায়। মৃতের বোন লক্ষ্মী মারডি বলেন, “ওরা যখন দাদাকে যখন উঠানে শুইয়ে রেখে গেল তখনও বেঁচে ছিল। লোকজন ডাকাডাকি করতে যাই। ফিরে এসে দেখি মারা গিয়েছে।” এতেই ছড়িয়ে পড়ে করোনা আতঙ্ক। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যায় গুসকরা ফাঁড়ির পুলিশ, স্বাস্থ্যদপ্তরের প্রতিনিধিরা। আউশগ্রাম ১ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ধীমান মণ্ডল বলেন, “যেহেতু স্থানীয় লোকজন আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন তাই সেখানে মেডিক্যাল টিম পাঠানো হয়। তবে মৃত ব্যক্তির করোনার কোনও উপসর্গ ছিল না। শুনেছি খুব মদ্যপান করতেন। সম্ভবত মদ্যপানের কারণেই মারা গিয়েছে।” কিন্তু এতেও আতঙ্ক কমেনি। বিকেল পর্যন্ত দেহ পড়েছিল বাড়িতেই। সৎকারের কাজে কেউ এগিয়ে আসেননি। গ্রামবাসীদের কথায়, স্বাস্থ্যদপ্তরের টিম দূর থেকেই দেহটি দেখেই পালায়। তাই মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা থাকছেই।
[আরও পড়ুন: পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য বিশেষ উদ্যোগ, মালবাজারে নদীর ধারে প্রস্তুত কোয়ারেন্টাইন সেন্টার]
সূত্রের খবর, আউশগ্রামের পাণ্ডবদিঘি আদিবাসীপাড়ার বাসিন্দা কবিরাজ মারডি অবিবাহিত ছিলেন। বাড়িতে রয়েছেন তাঁর বোন লক্ষ্মী মারডি। মাস চারেক আগে এলাকার এক ব্যক্তির মাধ্যমে বাঁকুড়ায় একটি ধানবীজ খামারে কাজে গিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। এরপর থেকে বাড়ি আসেননি। মৃতের বোনের কথায়, “আজ দুজন লোক দাদাকে তাড়াহুড়ো করে নামিয়ে দেয়। ওদের জিজ্ঞেস করছিলাম যে কী হয়েছে। বলল, শরীর খারাপ। কিছু টাকা আমার হাতে ধরিয়ে দিয়েই পালিয়ে গেল বুঝে ওঠার আগেই।” কী হয়েছিল ওই ব্যক্তির? কেন দেহ ফেলে চম্পট দিল ওই ২ যুবক? কারা ওরা? এখন এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে সকলের মনে। সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, দেহটির ময়নাতদন্ত হবে কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, “যদি পরিবারের লোকজন ডেথ সার্টিফিকেট চান তাহলে দেহটি নিয়মমাফিক ময়নাতদন্ত করানো হবে।”