সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: লকডাউনে আটকে মধ্যপ্রদেশে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল বাংলার এক পরিযায়ী শ্রমিকের। গত মঙ্গলবার পুরুলিয়ার মানবাজার এক নম্বর ব্লকের জিতুজুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের নডিহা গ্রামের ওই শ্রমিকের মৃত্যু হয়। তবে লকডাউনে মৃতদেহ গ্রামে আনা সম্ভব নয়, তাই সঙ্গীরাই বুধবার মহারাষ্ট্র দাহ করে যুবকের দেহ। শোকের ছায়া গ্রামে।
মৃত দুর্গাদাস মাহাতো প্রায় বছর খানেক আগে মধ্যপ্রদেশের চিনবেড়া জেলার সাউসার থানার খরবোরোসা গ্রামে সেতু নির্মাণের কাজে যান। লকডাউনের জেরে সেখানেই আটকে পড়েছিলেন তিনি। গত মঙ্গলবার সাবমার্সেবল পাম্প চালাতে গিয়ে বিদুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। বাড়িতে মৃত্যুর খবর এলেও, দেহ ফেরেনি। স্বামীকে শেষ দেখা দেখতে না পেরে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন স্ত্রী লক্ষ্মী মাহাতো। মৃত শ্রমিকের বাড়িতে স্ত্রী ছাড়াও তাঁর একটি মেয়ে, বাবা-মা ও ভাই রয়েছেন। এই পরিবারের অন্যতম রোজগেরে সদস্য ছিলেন দুর্গাদাস। তাঁর স্ত্রী লক্ষ্মী দেবীর কথায়, “ওখানে আটকে পড়ার পর প্রতিদিনই ওঁর সঙ্গে কথা হত। হঠাৎ করে যে এমন বিপদ নেমে আসবে তা ভাবতেও পারিনি। শেষদেখাটাও দেখতে পেলাম না। এরপর আমাদের কী হবে জানি না।”
জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার পরই দুর্গাদাসের সঙ্গে থাকা সঙ্গীরা তাঁকে উদ্ধার করে সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষনা করেন। সেখানেই তাঁর ময়নাতদন্ত হয়। মৃত শ্রমিকের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে মানবাজার এক নম্বর ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেস। ওই এলাকার বাসিন্দা তথা পুরুলিয়া জেলা পরিষদের শিক্ষা-তথ্য–সংস্কৃতি–ক্রীড়া স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ গুরুপদ টুডু। বলেন, “ওই পরিবারের পাশে আমরা রয়েছি। আমরা সবরকমভাবে সাহায্য করব।” প্রসঙ্গত, এই লকডাউনের মধ্যেই এই জেলার আরও দুই পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে দুটি পৃথক দু্র্ঘটনায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.