দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: পুলিশি হেফাজতে থাকা যুবকের মৃত্যুতে তীব্র উত্তেজনা ছড়াল হুগলির (Hooghly) পোলবায়। চোর সন্দেহে ওই যুবককে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। যার অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসতে তার বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত জনতা। বেধড়ক মারধরও করা হয়।
ঘটনার সূত্রপাত সপ্তাহ খানেক আগে। পোলবার ঝাপানতলার বাসিন্দা রবীন ঘোষের বাড়িতে হানা দেয় চোর। রবীনবাবু ও তাঁর পরিবারের সন্দেহ হয়, এলাকারই বাসিন্দা সৌমেন মালিক ও শুভঙ্কর হাজরা চুরির নেপথ্যে। রবিবার সন্দেহের বশেই শুভঙ্কর ও সৌমেনকে বেধড়ক মারধর করে ঘোষ পরিবারের সদস্যরা। কোনওরকমে শুভঙ্কর পালিয়ে বাঁচলেও পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সৌমেনকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পরের দিন বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে শুভঙ্করকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ। স্থানীয়দের দাবি, সোমবার রাতে দুই অভিযুক্তকে নিয়ে পুলিশ চুরি যাওয়া সামগ্রী উদ্ধারের জন্য এলাকায় তল্লাশি চালায়। কিন্তু কিছুই উদ্ধার হয়নি। এরপর বুধবার পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীনই ধৃত সৌমেন ও শুভঙ্কর অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের দু’জনকেই চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ভরতি করা হলে সেখানেই রাতে শুভঙ্করের মৃত্যু হয়।
বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয়রা শুভঙ্করের মৃত্যুর খবর পান। এরপরই ঝাপানতলা এলাকার মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়েন। উত্তেজিত জনতা রবীন ঘোষের বড়িতে চড়াও হয়। পরিবারের সদস্যদের আটকে রেখে বেধড়ক মারধর করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় বিশাল পুলিশ বাহিনী। রবীন ঘোষ ও তার পরিবারের লোকজনকে উদ্ধারের চেষ্টা করে। পুলিশকে ঘিরে স্থানীয় বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। দীর্ঘক্ষণ পর দুপুর দেড়টায় উত্তেজিত জনতার হাত থেকে রবীন ঘোষ ও তার পরিবারকে উদ্ধার করতে পারে পুলিশ। মৃতের পরিবার ও স্থানীয়দের দাবি, রবীন ঘোষের পরিবারের মারধর ও পরে পুলিশি হেফাজতে মারধরের জেরেই মৃত্যু হয়েছে শুভঙ্করের। নতুন করে এলাকায় যাতে অশান্তি না ছড়ায় সেই কারণেই ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। এবিষয়ে হগলি জেলা পুলিশ সুপার(গ্রামীণ) আমনদীপ জানান, কোর্ট লক আপে অসুস্থ হয়ে পড়ে শুভঙ্কর। তারপর তাঁকে হাসপাতালে ভরতি করা হলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.