নন্দন দত্ত, সিউড়ি: বোমার পর পাথরকে হাতিয়ার করার দাওয়াই অনুব্রত মণ্ডলের। সরকারি কর্মীদের পাথর ছুঁড়ে মারার নির্দেশ দিলেন তৃণমূলের দাপুটে নেতা। পুলিশকে বোমা মারার নিদানের পর বীরভূম জেলা সভাপতির এই মন্তব্যে ফের বিতর্ক রাজনৈতিক মহলে। শুক্রবার বিকেলে নলহাটির হরিপ্রসাদ হাইস্কুল মাঠে দলের জনসভায় CAA বিরোধী বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সই না করলে এরাজ্যে এনআরসি, সিএএ হবে না। রাষ্ট্রপতি শাসন কিংবা রাজ্যপালকে দিয়ে সই করিয়ে আইন চালু করতে গেলে আমরাও ঘরে বসে থাকব না। আন্দোলন করে রুখে দেব।”
এরপরেই কর্মী, সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, “মা-বোনেরা, বাড়িতে কাক এলে কীভাবে তাড়ান? সেভাবেই বাড়িতে ঢিল রেখে দেবেন। সার্ভে করতে বাড়িতে সরকারি কর্মীরা এলে তাদের ঢিল মেরে তাড়াবেন। আপনাদের সঙ্গে দল আছে। আপনাদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী আছেন।”
[আরও পড়ুন: ‘শাঁখা-পলা দেখে বৌদিকে চিনলাম’, নৈহাটিতে বিস্ফোরণে ঝলসানো দেহ দেখে বললেন দেওর়]
অনুব্রত মণ্ডল আরও বলেন, “আর দেশ ভাগ করতে দেওয়া হবে না। বাংলাদেশ থেকে যে সমস্ত মুসলিমরা এসেছেন, তাদের তুমি তাড়িয়ে দেবে? কেন? তারা মানুষ নয়?” এরপরেই প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে বলেন, “তোমার মুখটা সুন্দর। কিন্তু ভিতরটা তেতো। ফলে তুমি নিজের মুখ ছাড়া কাউকে দেখতে পাওনা। আর মাথামোটা অমিত শাহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী হয়ে যা ইচ্ছে তাই করছে। সামনে দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, বিহারের নির্বাচনে হারবে। তোমাকে লন্ডন, আমেরিকা কিংবা ফ্রান্স চলে যেতে হবে। ভারতবর্ষে তোমাদের জায়গা নেই।”
এখানেই থেমে থাকেননি বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি। প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তাঁর আরও কটাক্ষ, “আপনাদের বাবা, মা, দাদুদের জন্ম শংসাপত্র আছে তো? বলুন আপনারা যে পদ্ধতিতে ওই শংসাপত্র বের করেছেন, আমরাও সেই পদ্ধতিতে বের করব”। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় ব্লকে ব্লকে সভা করছেন অনুব্রত মণ্ডল। শুক্রবার ছিল নলহাটি ১ নম্বর ব্লকের সভা। সভায় উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, বোলপুরের সাংসদ অসিত মাল, জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী, নলহাটির বিধায়ক মইনুদ্দিন সামস। সকলকে সাক্ষী রেখেই সরকারি কর্মীদের ঢিল ছুঁড়ে মারার নিদান দিলেন তৃণমূলের দাপুটে নেতা।