Advertisement
Advertisement
Chandrayaan 3

রোভার ‘প্রজ্ঞানে’র নিয়ন্ত্রণ তাঁর হাতে, চন্দ্রযান ৩ মিশনের অন্যতম কাণ্ডারী আসানসোলের রিমা ঘোষ

'মেয়ে সারা দেশের গর্ব', বলছেন বাবা।

Asansol woman and her team leads to the movement of Rover Pragyan of Chandrayaan 3, family feels proud | Sangbad Pratidin
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:August 27, 2023 2:35 pm
  • Updated:August 27, 2023 8:07 pm

শেখর চন্দ্র, আসানসোল: দু’দিন ধরেই সোশ্যাল মিডিয়া (Social Media) তোলপাড় আসানসোলের মেয়ে রিমা ঘোষকে নিয়ে। কিন্তু কেন? কী তাঁর পরিচয়? সহজভাবে বললে রিমা ইসরোর (ISRO) বিজ্ঞানী। মিশন চন্দ্রযান ৩-এ (Chandrayaan 3) আরও অনেকের মতো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে আসানসোল কন্যার। কিন্তু বিশদে বললে রিমার অবদান আরও অনেক বেশি। এই মুহূর্তে চন্দ্রযানের যে রোভারটি চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ঘোরাঘুরি শুরু করেছে, সেই ‘প্রজ্ঞানে’র কন্ট্রোল আসলে রিমা ও তাঁর টিমের হাতে। রোভার কাজ শুরুর পর বেঙ্গালুরু থেকেই রিমা জানালেন, ”প্রজ্ঞান আমার সন্তানের মতো। নিজের সন্তানকে চাঁদের মাটিতে হাঁটতে দেখছি…এই অনুভূতি বলে বোঝানো যায় না।” আর মেয়ের এহেন কীর্তিতে স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত পরিবার। বিশেষত বাবা জানাচ্ছেন, মেয়ে বরাবরই দূরদর্শী, খুব বড় লক্ষ্য নিয়ে কেরিয়ারের পথে এগিয়েছে। চন্দ্রযান ৩-এর সাফল্য তারই প্রমাণ।

আসানসোলের (Asansol) এজি চার্চ স্কুল থেকে পড়াশোনা করা রিমা গোটা শহরের গর্বের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে রাতারাতি। কিন্তু রিমার পরিবারের সঙ্গে কিছুতেই যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না। তার স্কুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা গেলেও স্কুল কর্তৃপক্ষ জানাতে পারেনি আসানসোলের কোথায় রিমা ঘোষের বাড়ি। কিংবা বর্তমানে পরিবারের কেউ আসানসোলে থাকেন কিনা। অবশেষে রিমা ঘোষের ভাই কুন্তলের খোঁজ পাওয়া গেল আসানসোল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে। তিনি এই কলেজের ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলি কমিউনিকেশন বিভাগের প্রধান পদে রয়েছেন।

Advertisement

[আরও পড়ুন: কলকাতায় হিট অ্যান্ড রান! বেনিয়াপুকুরে ঘুমন্ত অবস্থায় প্রাণ গেল ফুটপাতবাসীর]

আসানসোলের হিলভিউ এলাকায় বাড়ি রিমা ঘোষের। বাবা চন্দন কুমার ঘোষ ছিলেন কন্যাপুর পলিটেকনিক কলেজের শিক্ষক। বর্তমানে অবসর নিয়েছেন। মা শারিরীকভাবে অসুস্থ। রিমা ঘোষের ভাই কুন্তল ঘোষ। দিদি এবং ভাই দু’জনেই উচ্চশিক্ষিত। কিন্তু মায়ের শারিরীক অবস্থার কারণে কুন্তলবাবুকে আসানসোলেই থাকতে হচ্ছে। দিদির কীর্তি নিয়ে তিনি বলছেন, “আমি ওঁর ভাই হিসেবে প্রচণ্ড গর্ব অনুভব করছি। তবে শুধু এটা আমার কিংবা আসানসোলবাসীর গর্বের বিষয় নয়। এটা সারা দেশের গর্ব। আমার দিদি খুব কষ্ট করে কাজ করেছে। বিক্রম ল্যান্ডার (Lander Vikram) এবং প্রজ্ঞান রোভারের (Rover Pragyan) উপর বিশেষভাবে কাজ করেছে। বিশেষ করে এই ১৪ দিন ধরে প্রজ্ঞান রোভার যে ডাটা কালেক্ট করবে, মিনারেল কালেক্ট করবে, আরও নানা তথ্য সংগ্রহ করবে, তার নিয়ন্ত্রণ করছে দিদিদের টিম।”

Advertisement
মা-বাবার সঙ্গে রিমা ঘোষ।

রিমা ঘোষের পঠনপাঠন ও বেড়ে ওঠা নিয়ে কুন্তল ঘোষ জানান, ”আমার দিদির কলকাতায় জন্ম হলেও আসানসোলেই তাঁর বেড়ে ওঠা। আসানসোলের এজি চার্চ স্কুলে দশম শ্রেণি পর্যন্ত তাঁর পড়াশোনা। জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় আসানসোলের মধ্যে সেকেন্ড টপার হয়েছিল। পরবর্তীকালে লা মার্টিনিয়ার কলেজে পড়াশোনা করা হাই সেকেন্ডারি পর্যন্ত। কিন্তু জয়েন্টে ভাল র‍্যাঙ্ক হয়নি। তখন আসানসোলে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজও ছিল না। তাই মহারাষ্ট্রে ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়তে চলে যায় দিদি। সেখান থেকে বি.টেক করার পর জলপাইগুড়িতে বেশ কিছুদিন শিক্ষকতা করেছে। পরবর্তীকালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কন্ট্রোল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে এম টেক করেন। এরপর টেকনো ইন্ডিয়াতেও বেশ কিছুদিন চাকরি করছেন। তারপর পরীক্ষায় পাশ করে ইসরোতে যোগ। ২০০৮ সাল থেকে ইসরোতেই বিজ্ঞানী হিসেবে রয়েছেন আমার দিদি।”

[আরও পড়ুন: ছাত্রমৃত্যু থেকে শিক্ষা, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তার দায়িত্বে প্রাক্তন সেনাকর্মীরা!]

চন্দ্রযান ৩-এর সফল অবতরণের পরে দিদির সঙ্গে বেশি কথা বলতে পারেননি কুন্তলবাবু। কারণ প্রজ্ঞান রোভারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এখন ব্যস্ত রয়েছেন বিজ্ঞানী রিমা ঘোষ। যদিও জানিয়েছেন, পুজোর সময় আসানসোলে আসবেন রিমা। আর গোটা আসানসোল অপেক্ষায়, সোনার মেয়েকে বরণ করে নেওয়ার জন্য।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ