Advertisement
Advertisement
Bikaner express accident survivor

North Bengal Train Accident: ‘যেন আকাশ ভেঙে পড়ল’, মৃত্যুমুখ থেকে ফিরেও আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না দুর্ঘটনাগ্রস্ত রেলযাত্রীর

চোখ বুজলেই শুধু কানে ভেসে আসছে আর্তনাদ।

Bikaner express accident survivors recount experience । Sangbad Pratidin
Published by: Sayani Sen
  • Posted:January 14, 2022 8:59 am
  • Updated:January 14, 2022 3:03 pm

বৃহস্পতিবার বিকেলে লাইনচ্যুত হয় বিকানের এক্সপ্রেসের ১২টি বগি। এখনও পর্যন্ত ৮জন যাত্রীর প্রাণহানির খবর মিলেছে। সেই ট্রেনেই ছিলেন কমলিকা দাস। মৃত্যুমুখ থেকে ফিরে এসে নিজের অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করলেন তিনি।

যেন আকাশ ভেঙে পড়ল! সব লন্ডভন্ড। হালকা তন্দ্রায় সবে চোখ লেগে এসেছিল,আচমকাই যেন ভূমিকম্প! লাফিয়ে উঠল গোটা ট্রেন। গোড়ায় বুঝতে পারিনি ঠিক কী হচ্ছে। আতঙ্কে উঠে বসে দেখি সব কিছু দুলছে। আতঙ্কে চেঁচিয়ে উঠতে গিয়ে মালুম হল, গলা দিয়ে স্বর বেরোচ্ছে‌না। একটু ধাতস্থ হতে নজরে পড়ল বাক্স-প্যাঁটরা সব মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে। কামরায় তুমুল হইচই, আর্তনাদে বাতাস ভারী।

Advertisement

Bikaner Express

Advertisement

আমার সহযাত্রীদের বেশিরভাগ অসমের বাসিন্দা, ওঁরা দরজার সামনে ভিড় করেছিলেন। আমরা ছিলাম পিছনে। সহযাত্রীদের হাবভাব দেখে ততক্ষণে বুঝে গিয়েছি, সাংঘাতিক কিছু একটা হয়েছে। কিন্তু কী হয়েছে? কামরা থেকে বেরোব কী করে? শেষমেশ কাত হয়ে থাকা কামরা থেকে কোনওমতে লাইনের পাথরে পা রাখতেই চক্ষু চড়কগাছ! সবই যেন ছত্রভঙ্গ। সামনের একটা কামরার উপরে আর একটা কামরা উঠে আছে। দু’পাশে জল। মেঘলা আকাশ, কুয়াশা নামতে শুরু করেছে। বেশি দূরে কিছু দেখা যাচ্ছিল না। বাইরে পা রেখে আরও চোখে পড়ল, একটা কামরা নয়ানজুলিতে ছিটকে পড়েছে। চারপাশে শুধু একটাই চিৎকার– বাঁচাও…বাঁচাও…! কে যে কাকে বাঁচাবে!

Bikaner Express

[আরও পড়ুন: পৌষ সংক্রান্তিতে বাংলায় এবার ‘দুয়ারে পিঠে’, অর্ডার দিলেই বেল বাজাবে দুধ পুলি-পাটিসাপটা]

ছেলেকে বুকে আগলে স্বামীর সঙ্গে খানিকটা ছুটে এগিয়ে গেলাম। তখনও শরীর থরথরিয়ে কাঁপছে। বুঝতে অসুবিধা হল না, আমরা বিরাট বিপদের মুখে দাঁড়িয়ে। আমার ডান হাতে চোট লাগলেও আতঙ্ক-উত্তেজনায় সে ভাবে টের পাইনি। এবার যন্ত্রণা শুরু হল। ততক্ষণে আশপাশের লোকজন ছুটে এসেছে, চালু হয়ে গিয়েছে উদ্ধারকাজ। আমি ওঁদের কাছে জল চাইলাম। একজন বোতলের জল দিলেন, আমাদের নিয়ে গেল অনেকটা দূরে।

Rescue Operation

স্বামীর সঙ্গে জয়পুর থেকে তুফানগঞ্জের বাড়িতে ফিরছিলাম। জয়পুরে আমি পরিচারিকার কাজ করি, স্বামী দিনমজুরি। চার বছরের ছেলেকে নিয়ে এক বছর বাদে বাড়ি‌ ফিরছি। অনেকদিন পর শ্বশুর-শাশুড়ি নাতিকে দেখবেন। বেশ আনন্দে ছিলাম। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে প্ল্যাটফর্মে নেমে দু’জনে পরোটা খেয়েছিলাম। এরপর বেশ জোরেই চলছিল বিকানের এক্সপ্রেস। আট বছর হল আমরা এই ট্রেনে যাতায়াত করি। তাই জানি, কখন নিউ কোচবিহারে নামব। ঝিমুনি আসতে বাঙ্কে শুয়ে পড়েছিলাম। এখন মনে হচ্ছে, যদি আর ঘুম না ভাঙত! ছোট ছেলেটার মুখের দিকে তাকিয়ে ক্ষণে ক্ষণে শিউরে উঠছি। পরক্ষণে‌ মনে পড়ছে জখম হয়ে পড়ে থাকাদের আর্ত চিৎকার। চোখ বুজলে এখনও তাড়া করছে সেই বিভীষিকা। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ, এ যাত্রা সপরিবারে প্রাণে বেঁচে গেলাম!

Train Accident

[আরও পড়ুন: COVID-19 Update: করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়ল রাজ্যে, সামান্য নিম্নমুখী কলকাতার গ্রাফ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ